ঢাকা: চট্টগ্রামের মিরসরইয়ে হচ্ছে দুটি আধুনিক ফায়ার স্টেশন। এজন্য ‘বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব শিল্পনগরে দুইটি মর্ডান ফায়ার স্টেশন স্থাপন’ শীর্ষক একটি প্রকল্প প্রস্তাব করা হয়েছে পরিকল্পনা কমিশনে। এটি বাস্তবায়নে ব্যয় ধরা হয়েছে ১২২ কোটি ৭২ লাখ ২২ হাজার টাকা। প্রকল্পটি বাস্তবায়িত হলে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব শিল্পনগরের আওতাধীন অর্থনৈতিক অঞ্চলে অগ্নি দুর্ঘটনার ঝুঁকি হ্রাস ও মোকাবিলার মাধ্যমে নিরাপদ কর্ম পরিবেশ নিশ্চিত করা হবে।
শিল্পনগরের আওতাধীন মিরসরাই, সীতাকুণ্ড ও ফেনী অর্থনৈতিক অঞ্চলে ২টি মর্ডান ক্যাটাগরির ফায়ার স্টেশন স্থাপন এবং ফায়ার স্টেশনের জন্য প্রয়োজনীয় অবকাঠামো ও অগ্নি নির্বাপন সরঞ্জামাদি ক্রয় করা হবে বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা।
পরিকল্পনা কমিশনের একাধিক দায়িত্বশীল কর্মকর্তা সারাবাংলাকে জানান, প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় থেকে প্রস্তাব পাওয়ার পর গত বছরের ১৮ ফেব্রুয়ারি অনুষ্ঠিত হয় পিইসি (প্রকল্প মূল্যায়ন কমিটি) সভা। ওই সভায় দেওয়া সুপারিশগুলো প্রতিপালন করায় প্রকল্পটি জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটির (একনেক) বৈঠকে উপস্থাপনের সুপারিশ করা হয়েছে। অনুমোদন পেলে ২০২৪ সালের জুনের মধ্যে এটি বাস্তবায়ন করবে বাংলাদেশ অর্থনৈতিক অঞ্চল কর্তৃপক্ষ (বেজা)।
প্রকল্প প্রস্তাবে বলা হয়েছে, বর্তমান সরকার শিল্পখাতে দেশি ও বৈদেশিক বিনিয়োগ আকৃষ্ট করতে আধুনিক সুবিধা সম্বলিত অর্থনৈতিক অঞ্চল স্থাপনের জন্য বিশেষ উদ্যোগ নিয়েছে। সে উদ্দেশ্য বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব শিল্পনগরের আওতাধীন মিরসরাই, সীতাকুণ্ড ও ফেনী অর্থনৈতিক অঞ্চলে অগ্নি দুর্ঘটনার ঝুঁকি মোকাবিলার জন্য দুইটি মর্ডান ফায়ার স্টেশন নির্মাণের জন্য প্রকল্পটি বাস্তবায়নের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।
পরিকল্পনা মন্ত্রণালয়ের সাধারণ অর্থনীতি বিভাগ (জিইডি) সূত্র জানায়, নিরাপদ কর্মপরিবেশ শিল্পায়ন ও উৎপাদনশীলতা বৃদ্ধির গুরুত্বপূর্ণ শর্ত। অষ্টম পঞ্চবার্ষিকী পরিকল্পনায় ফায়ার সার্ভিসের সক্ষমতা বৃদ্ধি ও নতুন ফায়ার সার্ভিস নির্মাণে বিনিয়োগের মাধ্যমে জননিরাপত্তা নিশ্চিত করার বিষয়টি আছে। টেকসই শিল্পায়ন এবং জাতীয় পরিস্থিতির সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে ২০৩০ সালের মধ্যে কর্মসংস্থান ও জিডিপিতে শিল্পখাতের অংশ উল্লেখযোগ্য পরিমাণে বৃদ্ধি এবং স্বল্প উন্নত দেশগুলোতে এই খাতের অবদান দ্বিগুণ করা হবে।
প্রকল্পের মূল কার্যক্রম হচ্ছে, তিন তলা ফায়ার স্টেশন, ছয় তলা স্টাফ কোয়াটার, কিচেন এবং প্রেয়ার ভবন নির্মাণ করা হবে। এছাড়া আন্ডারগ্রাউন্ড ওয়াটার রিজার্ভারসহ বাহির থেকে পানি সরবরাহ, পাম্প হাউজসহ একটি গভীর নলকূপ স্থাপন হবে। পাশাপাশি ফুয়েল স্টোর, স্যালুটিং ডায়াস, ফ্লাগ স্ট্যান্ড, ৩৭০ দশমিক ৮২ বর্গমিটার অভ্যন্তরীণ রাস্তা, পেভমেন্ট, ২ হাজার ৮১ দশমিক ৭৮ বর্গ মিটার বাগান, ৬২৮ দশমিক ৪৪ বর্গমিটার ট্রেনিং প্রাকটিস এরিয়া, কার ওয়াস র্যাম্প ও হোজ ওয়াস হাউজ, বাউন্ডারি ওয়াল, ২৪১ দশমিক ৩৯ মিটার মেইন গেট, ১৫০ মিটার অভ্যন্তরীণ ড্রেন এবং প্রয়োজনীয় অগ্নি নির্বাপন সরঞ্জামাদি ক্রয় করা হবে।
এ বিষয়ে প্রকল্পটির দায়িত্বপ্রাপ্ত পরিকল্পনা কমিশনের শিল্প ও শক্তি বিভাগের সসদ্য (সচিব) শরিফা খান সারাবাংলাকে বলেন, প্রকল্পটি বাস্তবায়িত হলে বঙ্গবন্ধু শিল্পনগরে অগ্নিকাণ্ড প্রতিরোধ ও অগ্নি ঝুঁকি কমাতে সহায়ক হবে এবং নিরাপদ কর্মপরিবেশ সৃষ্টি হবে।