আসামিকে ছাড়ার কথা বলে টাকা নেওয়ার অভিযোগ এএসআইয়ের বিরুদ্ধে
২০ জানুয়ারি ২০২২ ১১:১০
গাজীপুর: জেলার টঙ্গীতে টাকার বিনিময়ে আসামিকে ছেড়ে দেওয়ার কথা বলে আসামির স্ত্রীর কাছ থেকে টাকা নেওয়ার অভিযোগ উঠেছে পুলিশের সহকারী উপ-পরিদর্শক (এএসআই) মমিনুল ইসলামের বিরুদ্ধে। অভিযুক্ত পুলিশ সদস্য টঙ্গী পূর্ব থানায় কর্মরত আছেন। এ ঘটনায় ওই এএসআইয়ের বিরুদ্ধে লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন ভুক্তভোগী ওই নারী।
আসামির নাম অমিত হাসান, তার স্ত্রীর নাম বৃষ্টি। টঙ্গীর আরিচপুর বউবাজার এলাকা থেকে গত মঙ্গলবার (১৮ জানুয়ারি) রাত সাড়ে ৯টায় আট পিছ ইয়াবাসহ তাকে আটক করা হয় বলে দাবি করেন ওই পুলিশ কর্মকর্তা। অমিত থানার দক্ষিণ আরিচপুর এলাকার কাজী ভিলায় স্ত্রী-সন্তান নিয়ে বসবাস করেন।
জানা গেছে, আটককৃত অমিতকে ছেড়ে দেওয়ার কথা বলে তার স্ত্রীর কাছ থেকে ২০ হাজার টাকা দাবি করেন এএসআই মমিনুল ইসলাম। পরে আসামির স্ত্রী ১৬ হাজার ৭০০ টাকা পরিশোধ করলেও আসামিকে না ছেড়ে থানায় এনে মাদক মামলা দেন তিনি।
এ বিষয়ে বৃষ্টি বলেন, ‘অমিতকে আটকের পরপরই এএসআই মমিনুল ইসলাম ফোনে যোগাযোগ করে ২০ হাজার টাকা নিয়ে বউ বাজার রেলগেট এলাকায় দেখা করতে বলেন। পরে ১৪ দিনের সন্তানকে খালি বাসায় রেখে টঙ্গী বাজার এলাকায় একটি জুয়েলারির দোকানে স্বর্ণালংকার বন্ধক রেখে ১৬ হাজার ৭০০ টাকা দেন এএসআই মমিনুলকে।’
তিনি বলেন, ‘টাকা বুঝে পাওয়ার পর মমিনুল বলেন- মধুমিতা রেলগেট এলাকায় গিয়ে তোমার স্বামীকে ছেড়ে দিব। তুমি বাসায় চলে যাও। কিন্তু আমার স্বামীকে না ছেড়ে থানায় নিয়ে যান তিনি। পরে পুলিশের মোটরসাইকেলের পেছনে ছুটতে ছুটতে টঙ্গী পূর্ব থানার গেট পর্যন্ত চলে আসি। থানায় গিয়ে দেখি তাকে লকাপে রাখা হয়েছে। তখন এএসআই মমিনুল বলেন- তোমার স্বামীকে ছাড়া যাবে না। এ কথা শুনে টাকা ফেরত চাইলে এএসআই মমিনুল আমাকেও শরীরে করে মাদক পাচারের অভিযোগ এনে মামলা দিয়ে চালান করার হুমকি দেন।’
বৃষ্টি আরও বলেন, ‘স্বামীকে ছেড়ে দেওয়ার জন্য এএসআই মমিনুলকে ১৬ হাজার ৭০০ টাকা দিয়েছি। কিন্তু প্রতিশ্রুতি অনুযায়ী তার স্বামীকে ছাড়েননি তিনি। টাকা ফেরত চাইলে তাকে ৮ হাজার টাকা ফেরত দিয়েছেন।’
ওই নারী আরও বলেন, ‘বাকি টাকা দিয়ে মাল (ইয়াবা) কিনে মামলা দিবেন বলে জানান মমিনুল। আটকের সময় অমিতের কাছে ৮ পিস ইয়াবা পাওয়ার কথা জানালেও গতকাল বুধবার (১৯ জানুয়ারি) দুপুরে ৫২ পিস ইয়াবাসহ গ্রেফতার দেখিয়ে তাকে আদালতে পাঠিয়েছেন।’
বৃষ্টি আরও বলেন, ‘এএসআই মমিনুল ইসলামের বিরুদ্ধে লিখিত অভিযোগ দিয়েছি। অভিযোগ জমা দেওয়ার আগে তিনি আমাকে ফোন দিয়ে মাফ চেয়ে বলেন, আমার চাকরি চলে যাবে। দয়া করে তুই অভিযোগ দিসনা। তুই থানায় গিয়ে আমার সম্পর্কে ভালো ভালো কথা বল। আমি তোর সব টাকা দিয়ে দেব এবং তোর স্বামীর জামিনের সব টাকা দেব। তুই আমারে বাঁচা। নয়তো আমাকে না খেয়ে থাকতে হবে, আমার পরিবারের সবাই না খেয়ে থাকবে।’
এ অভিযোগের বিষয়ে কথা বলার জন্য এএসআই মমিনুল ইসলামের সঙ্গে একাধিক বার যোগাযোগ করলেও তাকে পাওয়া যায়নি।
এ বিষয়ে টঙ্গী পূর্ব থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. জাভেদ মাসুদ বলেন, ‘আমাকে জানিয়ে এএসআই মমিনুল ইসলাম এমন কিছু করেননি। এ ঘটনা জানার পর পরই তার বিরুদ্ধে আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে।’
সারাবাংলা/এনএস