স্ত্রীকে হত্যা করে সড়কের পাশে মরদেহ ফেলে যাওয়া স্বামী গ্রেফতার
২০ জানুয়ারি ২০২২ ১৯:৪১
বরিশাল: দাম্পত্য কলহের জের ধরে হাতুড়ি দিয়ে পিটিয়ে ও ধারালো অস্ত্র দিয়ে কুপিয়ে নৃশংসভাবে স্ত্রীকে হত্যার পর মহাসড়কের পাশে মরদেহ ফেলে পালিয়ে গিয়েছিলেন স্বামী তামিম শেখ। ১০ মাস বয়সী শিশুপুত্রকেও ফেলে যান পাশেই। পরে পুলিশের হাতে গ্রেফতার হয়েছে সেই তামিম শেখ।
বুধবার (১৯ জানুয়ারি) দিবাগত রাতে বরিশালের আগৈলঝাড়া উপজেলার বাইপাস মহাসড়কের পাশে এ ঘটনা ঘটে। রাতেই পথচারীরা রাশিদা বেগম নামের ওই নারীর মরদেহ দেখে পুলিশকে খবর দিলে আগৈলঝাড়া থানার পরিদর্শক (তদন্ত) মাজহারুল ইসলাম ঘটনাস্থলে গিয়ে মরদেহ উদ্ধার করে থানায় নিয়ে আসেন। এরপর গোপালগঞ্জ সদর উপজেলার বেদগ্রাম এলাকা থেকে ঘাতক তামিম শেখকে গ্রেফতার করে পুলিশ।
এ ঘটনায় বৃহস্পতিবার (২০ জানুয়ারি) দুপুরে নিহত রাশিদার ভাই রুহুল আমিন শাহ বাদী হয়ে তামিম শেখসহ অজ্ঞাতনামা আরও দুই-তিন জনকে আসামি করে আগৈলঝাড়া থানায় হত্যা মামলা দায়ের করেন।
গ্রেফতার তামিমের বরাত দিয়ে আগৈলঝাড়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. গোলাম ছরোয়ার জানান, দাম্পত্য কলহের জের ধরে এই হত্যাকাণ্ড ঘটেছে। তারা দু’জনেই আগে বিবাহিত ছিলেন। দুই বছর আগে তাদের বিয়ে হয়। তামিমের আগের স্ত্রীর দু’টি ছেলে রয়েছে। আর রাশিদা-তামিম দম্পতির ঘরে ১০ মাস আগে জন্ম নেয় শিশুপুত্র তানিম। আগৈলঝাড়া উপজেলার ১ নম্বর ব্রিজ সংলগ্ন এলাকায় একটি বাসা ভাড়া করে থাকতেন তারা।
ওসি বলেন, বুধবার রাশিদাকে নিয়ে গোপালগঞ্জের একটি আবাসিক হোটেলে অবস্থান করেন তামিম। রাত ৮টার পরে সেখান থেকে বের হয়ে আরও কয়েকজনের সহায়তায় রাশিদাকে হত্যা করেন তিনি। পরে একটি মাহেন্দ্র ভাড়া করে আগৈলঝাড়ার বাইপাস মহাসড়কের পাশে রাশিদার মরদেহ ও তার শিশু সন্তানকে ফেলে রেখে পালিয়ে যান তামিম শেখ।
স্থানীয়দের কাছ থেকে খবর পেয়ে বুধবার দিবাগত রাত সোয়া ১টার দিকে উপজেলার বাইপাস মহাসড়ক সংলগ্ন একটি ঘেরের পাড় থেকে রাশিদা বেগমের রক্তাক্ত মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ। ওই সময় কান্নার আওয়াজ পেয়ে নিহত রাশিদার শিশুপুত্র তানিমকে মায়ের মরদেহের ৫০০ গজ দূরে সড়কের পাশ থেকে উদ্ধার করা করা হয়।
রাশিদার মরদেহ উদ্ধারের পরপরই অভিযান চালিয়ে গোপালগঞ্জের বেদগ্রাম এলাকা থেকে স্বামী তামিম শেখকে রক্তমাখা জুতা ও জামা পড়া অবস্থায় গ্রেফতার করা হয়।
ওসি গোলাম ছরোয়ার জানান, এ ঘটনায় থানায় হত্যা মামলা দায়ের করা হয়েছে। নিহতের মরদেহ ময়নাতদন্তর জন্য বরিশাল শের-ই বাংলা মেডিকেল কলেজ (শেবাচিম) হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়েছে। তামিম শেখ প্রাথমিকভাবে পুলিশের কাছে হত্যার দায় স্বীকার করেছে। বৃহস্পতিবার বিকেলে পুলিশ হত্যায় ব্যবহৃত হাতুড়ি ও দেশীয় অস্ত্র উদ্ধারের জন্য অভিযানে নেমেছে।
সারাবাংলা/টিআর