করোনার ঝুঁকি জানাবে যে বিশেষ যন্ত্র
২১ জানুয়ারি ২০২২ ১৫:৩২
অচিরেই এমন এক পরিধানযোগ্য এয়ার ক্লিপ বাজারে আসছে, যার মাধ্যমে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তির করোনায় আক্রান্ত হওয়ার সম্ভাব্য ঝুঁকির ব্যাপারে তিনি নিজে নিজেই জানতে পারবেন।
এখন কেবলমাত্র করোনা আক্রান্ত ব্যক্তির সংস্পর্শে গেলে কিংবা করোনার উপসর্গ দেখা দিলে বাসায় কিংবা ল্যাবে নমুনা জমা দিয়ে পরীক্ষার পর ফলাফল জানা যাচ্ছে। যা অনেক সময় সাপেক্ষ।
কিন্তু, স্বনামধন্য ইয়েল ইউনিভার্সিটির স্কুল অব ইঞ্জিনিয়ারিং অ্যান্ড অ্যাপ্লাইড সায়েন্স এবং স্কুল অব পাবলিক হেলথের গবেষকদের উদ্ভাবিত এই এয়ার ক্লিপের মাধ্যমে সার্স কোভ ২ ভাইরাসের সামান্য সংস্পর্শে আসলেও তা জানা সম্ভব হবে। এবং সেই অনুসারে আইসোলেশনে যাওয়া কিংবা চিকিৎসা নেওয়া যাবে।
ওই এয়ার ক্লিপের মধ্যে এক ইঞ্চি দৈর্ঘ্যের থ্রিডি প্রিন্টেড স্যাম্পলার থাকবে। যা বাতাস থেকে নমুনা নিয়ে একটি ফিল্মে জমা করবে। পরে ওই নমুনা পরীক্ষা করে তাতে করোনার উপস্থিতি আছে কি না, তা জানা যাবে। এই এয়ার ক্লিপ চালাতে কোনো রকম জ্বালানি শক্তি ব্যবহার করতে হবে না।
যদিও, এয়ার ক্লিপটি এখনও সর্বসাধারণের ব্যবহারের জন্য উন্মুক্ত করা হয়নি। চলতি বছরের ১১ জানুয়ারি এ সংক্রান্ত একটি গবেষণা প্রকাশ হওয়ার পর তা পিয়ার রিভিউয়ের জন্য এনভায়রনমেন্টাল সায়েন্স অ্যান্ড টেকনোলজি লেটারসের কাছে পাঠানো হয়েছে।
এই যন্ত্রের ব্যাপারে ইয়েল ইউনিভার্সিটির শিক্ষক এবং এই গবেষণার প্রধান ক্রিস্টাল গডরি বলছেন, আক্রান্ত হওয়ার চেয়ে আরও নিম্ন মাত্রার সার্স কোভ ২ ভাইরাস শনাক্ত করতে পারবে এই এয়ার ক্লিপ।
গবেষকরা জানিয়েছেন, ২০২১ সালের জানুয়ারি থেকে মে মাসের মধ্যে ৬২ জনের ওপর এই এয়ার ক্লিপের মাধ্যমে গবেষণা চালানো হয়েছে। ওই ক্লিপ পরিয়ে তাদেরকে রেস্তোরাঁ, গৃহহীনদের শেল্টার, স্বাস্থ্যসেবা কেন্দ্রে পাঠানো হয়। তাদেরকে টানা পাঁচদিন কর্মক্ষেত্রে ওই ক্লিপ ব্যবহারের নির্দেশনা দেওয়া হয়। পরে, ক্লিপের ভেতরকার ফিল্ম সংগ্রহ করে পরীক্ষা করা হয়। ৬২ জনের মধ্যে পাঁচ জনের ক্লিপ থেকে সামান্য পরিমাণ ভাইরাসের অস্তিত্ত্ব খুঁজে পাওয়া যায়। ওই পাঁচ জনের মধ্যে চার জন রেস্তোরায় এবং অন্য আরেক জন গৃহহীনদের সঙ্গে কাজ করতেন।
বর্তমানে ওই এয়ার ক্লিপটির ব্যাপারে আরও গবেষণা চলছে যুক্তরাষ্ট্রের কানেকটিকাট অঙ্গরাজ্যের স্বাস্থ্যসেবা কেন্দ্রগুলোতে। খুব দ্রুতই জনসাধারণের ব্যবহারের জন্য এয়ার ক্লিপটি বাজারে আনা সম্ভব হবে বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা।
এদিকে, বায়ুবাহিত যে কোনো ভাইরাসই (ইনফ্লুয়েঞ্জা, রাইনোভাইরাস) এয়ার ক্লিপটির মাধ্যমে শনাক্ত করা যাবে বলে জানিয়েছেন গবেষকরা।
সারাবাংলা/একেএম