১৭ জেলেকে জিম্মি করে একজনকে সাগরে নিক্ষেপ, গ্রেফতার ১৫
২২ জানুয়ারি ২০২২ ১৯:২৮
চট্টগ্রাম ব্যুরো: গভীর সাগরে ১৭ মৎস্যজীবীকে (জেলে) জিম্মি করে একজনকে সাগরে ফেলে দেওয়ার ঘটনায় ১৫ ‘জলদস্যুকে’ গ্রেফতার করেছে র্যাব। অপহৃত ১৬ জেলেকে উদ্ধার করা হয়েছে।
গ্রেফতার ১৫ জনের মধ্যে চট্টগ্রামের বাঁশখালী ও কক্সবাজারের পেকুয়া-কুতুবদিয়া উপকূলীয় এলাকায় জলদস্যু ‘কবির বাহিনীর’ প্রধান এবং সেকেন্ড ইন কমান্ড আছে বলে র্যাব জানিয়েছে।
গভীর বঙ্গোপসাগরে শনিবার (২২ জানুয়ারি) ভোর পর্যন্ত টানা ২৪ ঘণ্টা অভিযান চালিয়ে তাদের গ্রেফতার করা হয়েছে বলে সংবাদ সম্মেলনে জানিয়েছেন র্যাবের চট্টগ্রাম জোনের প্রধান লেফটেন্যান্ট কর্নেল এম এ ইউসুফ।
গ্রেফতার ১৫ জন হলো- নুরুল আফসার, নূরুল কাদের, হাসান, মো. মামুন, নুরুল কবির, আব্দুল হামিদ, আবু বক্কর, মো. ইউসুফ, গিয়াস উদ্দিন, সফিউল আলম মানিক, আব্দুল খালেক, রুবেল উদ্দিন, সাইফুল ইসলাম জিকু, মো. সুলতান এবং মনজুর আলম।
এদের মধ্যে নুরুল কবির ‘জলদস্যু’ বাহিনীর প্রধান এবং মামুন তার সেকেন্ড ইন কমান্ড বলে র্যাব জানিয়েছে। তাদের কাছ থেকে ২টি বিদেশি পিস্তল, ৬টি ওয়ানশ্যুটার গান, ৪টি কার্তুজসহ বিভিন্ন অস্ত্র উদ্ধার করা হয়েছে।
র্যাব জানায়, মাছ ধরতে বঙ্গোপসাগরে যাওয়া ১৭ জন জেলেকে গত ১৪ জানুয়ারি জিম্মি করে কবিরের বাহিনী। তাদের আটকে রেখে ১০ লাখ টাকা মুক্তিপণ দাবি করা হয়। জেলেদের পরিবার দুই লাখ টাকা দেয়। কিন্তু এরপরও বাকি টাকার জন্য তাদের ওপর নির্যাতন অব্যাহত রাখে। নির্যাতনে অসুস্থ হয়ে পড়লে আনোয়ার নামে এক জেলেকে গত ১৬ জানুয়ারি তারা সাগরে ফেলে দেয়। আনোয়ারের আর হদিস পাওয়া যায়নি।
অপহৃত জেলের পরিবারের সদস্যরা বরিশালে র্যাবের শরণাপন্ন হন। বরিশাল থেকে তথ্য পাওয়ার পর র্যাবের চট্টগ্রাম জোনের সদস্যরা গোয়েন্দা তথ্যে জানতে পারেন, বাঁশখালী-পেকুয়া-কুতুবদিয়াকেন্দ্রিক নুরুল কবিরের বাহিনীর সদস্যরা জেলেদের অপহরণ করেছে। এরপর তাদের গ্রেফতারে অভিযানে নামে র্যাব।
চট্টগ্রামের র্যাব প্রধান এম এ ইউসুফ বলেন, ‘আমাদের কাছে তথ্য ছিল যে, নুরুল কবিরের বাহিনীর ১৫ সদস্যের মধ্যে ৭ জন পেকুয়ার মগনামা ঘাট এবং ৮ জন কুতুবদিয়া থেকে নৌকায় উঠে গত ১৪ জানুয়ারি সাগরে যায়। এরপর জেলেদের নৌকাটি অস্ত্রের মুখে জিম্মি করে। আমরা সাগরে চট্টগ্রাম ও কক্সবাজারের চারটি পয়েন্টে অভিযান চালিয়ে চারজনকে গ্রেফতার করি। কক্সবাজারের চকরিয়া উপজেলার ডান্ডিবাজার থেকে বাহিনী প্রধানসহ ১১ জনকে গ্রেফতার করি। এরপর তাদের তথ্যের ভিত্তিতে নোয়াখালীর চরকাউনিয়া এলাকায় অভিযান চালিয়ে অপহৃত ১৬ জেলেকে উদ্ধার করি।’
‘এই জলদস্যু বাহিনী গত এক বছরেরও বেশি সময় ধরে কক্সবাজারের চকরিয়া, মহেশখালী, কুতুবদিয়া এবং চট্টগ্রামের বাঁশখালী উপকূলে ত্রাসের রাজত্ব কায়েম করেছিল। সাগরে জেলেদের মাছ লুট, অপহরণের পর মুক্তিপণ আদায় করতো। সাগরে ফেলে দিয়ে অনেক জেলেকে হত্যার অভিযোগ আছে তাদের বিরুদ্ধে। বাহিনীর প্রধান কবিরসহ প্রত্যেক সদস্যের বিরুদ্ধে একাধিক মামলা আছে’, বলেন র্যাব কর্মকর্তা এম এ ইউসুফ।
সারাবাংলা/আরডি/এমও