ধর্ষণের শিকার সেই শিশুকে মাদরাসায় ফিরিয়ে নিতে নির্দেশ
২৪ জানুয়ারি ২০২২ ১২:০৫
রাজশাহী: ধর্ষণের শিকার হওয়ার কারণে ভর্তি বাতিলের পর মাদরাসা থেকে বের করে দেওয়া সেই শিক্ষার্থীকে ওই মাদরাসাতেই ভর্তি করে নিতে নির্দেশন দিয়েছেন রাজশাহীর জেলা প্রশাসক (ডিসি)। এ বিষয়টি তদন্ত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতেও তিনি নির্দেশ দিয়েছেন অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (শিক্ষা ও আইসিটি) ও জেলা শিক্ষা কর্মকর্তাকে।
রোববার (২৩ জানুয়ারি) বিকেলে জেলা প্রশাসক এ নির্দেশ দেন। জেলা প্রশাসক বলেন, শিশুটিকে যেন ওই মাদরাসাতেই ভর্তি করা হয়— এটি নিশ্চিত করতে বলা হয়েছে। শিশুটি অবশ্যই মাদরাসাটিতে পড়ার সুযোগ পাবে।
জেলা প্রশাসক জানান, বিষয়টি তার জানা ছিল না। তার দৃষ্টিগোচর হওয়ামাত্রই তিনি অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক ও জেলা শিক্ষা কর্মকর্তাকে শিশুটির ভর্তি নিশ্চিত করার বিষয়ে নির্দেশ দিয়েছেন।
আরও পড়ুন- ধর্ষণের শিকার তাই বের করে দিল মাদরাসা
এর আগে, বছর দুয়েক আগে ধর্ষণের শিকার হয় আট বছরের এক শিশু। শিশুটিতে রাজশাহীর হড়গ্রাম মুন্সিপাড়া এলাকার একটি আবাসিক মাদরাসায় ভর্তি করা হয়। তবে শিশুটি ধর্ষণের শিকার— এমন তথ্য জানাজানি হলে শিশুটির ভর্তি বাতিল করা হয়। তাকে ভর্তি ও আবাসিকের জন্য জমা দেওয়া টাকা ফেরত দিয়ে মাদরাসা থেকে বের করে দেয়া হয়।
মাদরাসা থেকে শিশুটিকে বের করে দেওয়ার ঘটনাটি নিয়ে সারাবাংলা ডটনেট সংবাদ প্রকাশ করে শুক্রবার (২১ জানুয়ারি) রাতে। ওই সময় ভুক্তভোগী শিশুটির মা জানান, ১০ দিন আগে নগরীর উম্মাহাতুল মু’মিনীন মহিলা মাদরাসায় তার মেয়েকে ভর্তি করা হয়েছিল। বেসরকারি এই মাদরাসায় শিক্ষার্থীদের আবাসনের ব্যবস্থা থাকায় তারা ভেবেছিলেন, এখানে ভর্তি করলে তার সন্তান নিরাপদে থাকবে। তবে তিন দিন পরই তাকে মাদরাসা থেকে বের করে দেওয়া হয়েছে। মেয়েটি ধর্ষণের শিকার বলেই তাকে অন্য কোথাও ভর্তি করাতে বলা হয়।
মাদরাসাটির পরিচালক মাওলানা মো. হাবিবুল্লাহ ওই সময় বলেন, অন্য অভিভাবকদের আপত্তির মুখেই তারা শিশুটির ভর্তি বাতিল করাতে বাধ্য হন।
এর আগে, ২০২০ সালের ২১ মার্চ প্রতিবেশী এক কিশোরের হাতে ধর্ষণের শিকার হয় শিশুটি। সে এখনো পুরোপুরি সুস্থ নয়। ব্যথার পাশাপাশি ব্যাপক স্বাস্থ্যহানি ঘটেছে শিশুটির। একজন মানসিক রোগ বিশেষজ্ঞের কাছে তার চিকিৎসাও চলছে।
শিশুটির মা জানান, ধর্ষণের ঘটনার পর থেকেই সবাই তার মেয়েটিকেই দোষ দিচ্ছেন ও তাদের সামাজিকভাবে হেয় করছেন। তার সন্তানের সঙ্গে যে অন্যায় ঘটেছে, তার প্রতিকার চান তিনি।
ভুক্তভোগী শিশুটির বাবা এক সড়ক দুর্ঘটনার শিকার হয়ে প্রতিবন্ধী হওয়ার পর থেকে অটোরিকশা চালান। রাজশাহীর একটি বেসরকারি হাসপাতালে আয়া হিসেবে চাকরি করেন শিশুটির মা। নিজের কোনো ভিটেমাটি না থাকায় রেলের জমিতে গড়ে ওঠা বস্তিতে বসবাস করেন তারা।
সারাবাংলা/টিআর
ধর্ষণের শিকার ভর্তি করানোর নির্দেশ মাদারাসায় ভর্তি বাতিল রাজশাহী জেলা প্রশাসক