‘স্বৈরাচার ভেবেছিল জনতার রক্তে থেমে যাবে প্রতিরোধ’
২৪ জানুয়ারি ২০২২ ১৯:৪৮
চট্টগ্রাম ব্যুরো: ‘চট্টগ্রাম গণহত্যা’ দিবসে শহিদ বেদীতে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা নিবেদন করেছেন চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের (চসিক) মেয়র রেজাউল করিম চৌধুরী। এসময় সংক্ষিপ্ত সভায় মেয়র বলেন, ‘স্বৈরাচার এরশাদ ভেবেছিল জনতার রক্তে থেমে যাবে প্রতিরোধ। কিন্তু মাত্র দুই বছরের মাথায় বাংলার দামাল জনতা তাকে ক্ষমতা ছাড়তে বাধ্য করেছিল।’
সোমবার (২৪ জানুয়ারি) সকালে চট্টগ্রাম আদালত ভবনের প্রবেশপথে গণহত্যায় শহিদদের স্মরণে নির্মিত বেদীতে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা জানান মেয়র। এসময় চসিক কাউন্সিলর আবদুস সালাম মাসুম, মো. ইসমাইল, হাসান মুরাদ বিপ্লব, ওয়াসিম উদ্দিন চৌধুরী, শৈবাল দাশ সুমন, আতাউল্লাহ চৌধুরী, মো. ইলিয়াছ, গোলাম মো. জোবায়ের, নূর মোস্তফা টিনু, নিলু নাগ, আঞ্জুমান আরা, শাহীন আক্তার রোজী ছিলেন।
উল্লেখ্য, সামরিক শাসক এরশাদবিরোধী আন্দোলনের সময় ১৯৮৮ সালের ২৪ জানুয়ারি চট্টগ্রাম লালদিঘীর ময়দানে যাওয়ার পথে আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনার গাড়িবহরে পুলিশ এলোপাতাড়ি গুলি চালালে নিহত হন ২৪ জন। আহত হন কমপক্ষে দুই শতাধিক মানুষ।
শেখ হাসিনার প্রাণনাশের চেষ্টা হিসেবে আলোচিত ঘটনাটি ‘চট্টগ্রাম গণহত্যা’ হিসেবে পরিচিতি পায়। এরশাদের পতনের পর ১৯৯২ সালে এই ঘটনায় মামলা দায়ের হয়।
ঘটনার ৩২ বছর পর ২০২০ সালের ২০ জানুয়ারি আদালত মামলার রায় ঘোষণা করেন। তবে ঘটনার নির্দেশদাতা হিসেবে আলোচিত তৎকালীন পুলিশ কমিশনার মীর্জা রকিবুল হুদা মৃত্যুবরণ করায় মামলা থেকে অব্যাহতি পান। ‘হুকুমদাতা’ কোতোয়ালি থানার তৎকালীন পেট্রল ইন্সপেক্টর পলাতক গোবিন্দ চন্দ্র মণ্ডলের মৃত্যুদণ্ডের আদেশ হয়।
একইসঙ্গে কারাগারে থাকা আরও চার জন তৎকালীন পুলিশ কনস্টেবলের প্রাণদণ্ডের আদেশ হয়। এরা হলেন— মোস্তাফিজুর রহমান, প্রদীপ বড়ুয়া, শাহ মো. আব্দুলাহ এবং মমতাজ উদ্দিন।
বিভীষিকাময় সেই দিনটির কথা স্মরণ করে মেয়র রেজাউল করিম চৌধুরী বলেন, ’২৪ জানুয়ারি এলেই বুকের মধ্যে রক্তক্ষরণ হয়। সেদিনের ভয়াবহ স্মৃতি মুছে যাওয়ার মতো নয়। স্বৈরাচারের বিরুদ্ধে ফুঁসে ওঠা গণতন্ত্রকামী জনতার ওপর নির্বিচারে গুলি চালিয়েছিল পুলিশ। তৎকালীন বিরোধীদলীয় নেতা শেখ হাসিনার প্রাণনাশের চেষ্টা করেছিল। জনতা বুকের তাজা রক্ত ঢেলে তাদের প্রাণপ্রিয় নেতাকে রক্ষা করেছিল। ৩২ বছর পর সেই নারকীয় ঘটনার বিচারে আদালত বলেছেন, সেটি ছিল পরিকল্পিত গণহত্যা।’
মেয়র আরও বলেন, ‘শেখ হাসিনা অনেকবার মৃত্যুর মুখোমুখি হয়েছেন। চেষ্টা হয়েছে বারবার তাকে হত্যা করার। তার সাহসিকতা তাকে অনন্য উচ্চতায় নিয়ে গেছে। স্বৈরাচারের বিরুদ্ধে যারা প্রাণ দিয়েছিল, তাদের আত্মত্যাগকে প্রজন্ম থেকে প্রজন্মান্তরে স্মরণ করে যেতে হবে।’
সারাবাংলা/আরডি/টিআর