Friday 06 September 2024
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

যমজ ২ শিশুর মধ্যে বেঁচে যাওয়া আব্দুল্লাহকে ছাড়পত্র দিল ঢামেক

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট
২৪ জানুয়ারি ২০২২ ২১:১৫

ঢাকা: শ্যামলীর ‘আমার বাংলাদেশ হসপিটাল’র বিল পরিশোধ করতে না পারায় বের করে দেওয়া যমজ দুই শিশুর মধ্যে আব্দুল্লাহকে চিকিৎসার পর ছাড়পত্র দিয়েছে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল। সোমবার (২৪ জানুয়ারি) বিকেলে যমজ দুই শিশুর মধ্যে বেঁচে যাওয়া আব্দুল্লাহকে ছাড়পত্র দেওয়া হয়।

এ উপলক্ষে সোমবার বিকেলে সাড়ে পাঁচটার টার দিকে ঢাকা মেডিকেল হাসপাতাল চত্বরে র‌্যাব-৩ কোম্পানি কমান্ডার মেজর মো. জুলকার নায়েন প্রিন্স শিশু আব্দুল্লাহ বিষয়ে সংবাদ সম্মেলন করেন। এ সময় তিনি শিশুটির জন্য কিছু উপহার সামগ্রী তার মা আয়েশা বেগমের হাতে তুলে দেন।

মেজর জুলকার নাইন জানান, আমার বাংলাদেশ হাসপাতালের বিল দিতে না পারায় কর্তৃপক্ষ জমজ দুই শিশুকে হাসপাতাল থেকে বের করে দেয়। পরে ঢামেকে নিয়ে আসার পথে মারা যায় আহমেদ। আর মুমূর্ষু অবস্থায় আব্দুল্লাহকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। এ ঘটনায় দেশব্যাপী আলোড়ন সৃষ্টি হয়। এরপর আমরা বাংলাদেশ হাসপাতাল মালিককে গ্রেফতার করা হয়। এছাড়া শিশু দুটির মাকে প্রভাবিত করে ‘আমার বাংলাদেশ হাসপাতালে’ নিয়ে যাওয়া অ্যাম্বুলেন্স চালককে ধরতে অভিযান অব্যাহত রয়েছে।

মেজর জুলকার বলেন, ‘শিশুটি বর্তমানে সুস্থ হয়ে ওঠায় তাকে ছাড়পত্র দিয়েছে চিকিৎসকরা। তবে ৩০ দিন পর আবার ফলোআপে আসতে বলেছে। শিশুটির বিষয়ে আমাদের সবরকম সহযোগিতা অব্যাহত থাকবে।’

ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মো. নাজমুল হক জানান, শিশুটি হাসপাতালে ভর্তির পরপরই আমাদের চিকিৎসকরা সর্বাত্মক চিকিৎসা দিয়েছে। সব সময় আমি খবর নিয়েছি। ওষুধপত্র থেকে শুরু করে সব রকম সহযোগিতা দেওয়া হয়েছে। খুবই ভালো লাগছে শিশুটি সুস্থ হয়ে মায়ের সঙ্গে বাড়ি যাচ্ছে।’

এর আগে, গত ৬জানুয়ারি শ্যামলীর ওই হাসপাতালে বিল পরিশোধ করতে না পারায় মাসহ দুই শিশুকে বের করে দেওয়া হয়। পরে সেখান থেকে রাতে ঢাকা মেডিকেলে নিয়ে আসলে আহমেদ নামের এক শিশু মারা যায়। এবং অপর শিশু আব্দুল্লাকে ঢাকা মেডিকেলে ভর্তি করা হয়।

আজ হাসপাতাল থেকে বেরিয়ে যাওয়ার সময় শিশু আব্দুল্লাহর মা আয়েশা বেগম বলেন, “আলহামদুলিল্লাহ, আমার আব্দুল্লাহ এখন সুস্থ আছে। হাসপাতাল থেকে ছাড়পত্র দিয়েছে। কিন্তু আরেক শিশুকে হারিয়েছি। তাকেও আজ সুস্থ করে বাড়ি নিয়ে যেতে পারতাম, যদি ‘আমার বাংলাদেশ হাসপাতালে’ না নিয়ে যেতাম।”

আয়েশা বেগম আরও বলেন, ‘বিল পরিশোধ করতে না পারায় আমার শিশু সন্তানকে হাসপাতাল থেকে যারা বের করে দিয়েছে। আমার সন্তানকে হত্যা করেছে! তাদের উপযুক্ত শাস্তি চাই।’

আয়েশা বেগম জানান, তাদের বাড়ি কুমিল্লার দাউদকান্দি উপজেলায়। বর্তমানে তারা সাভার রেডিও কলোনী এলাকায় থাকেন। তার স্বামী মো. জামাল সৌদি প্রবাসী।

আব্দুল্লাহর মা বলেন, “ঠাণ্ডা-জ্বরজনিত কারণে গত ৩১ ডিসেম্বর আব্দুল্লাহ ও আহমেদ শহিদ সোহরাওয়ার্দী কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। সেখানে তেমন কোনো উন্নতি না হওয়ায় ২ জানুয়ারি দুই সন্তানকে সোহরাওয়ার্দী হাসপাতাল থেকে একটি অ্যাম্বুলেন্স যোগে সাভার রেডিও কলোনীর বাসায় নিয়ে যাচ্ছিলাম। এ সময় সোহরাওয়ার্দী হাসপাতালের সামনে এক অ্যাম্বুলেন্স চালক তাকে বলেন, শিশু দুটি তো খুবই অসুস্থ। সামনে একটা ক্লিনিক আছে সেখানে নিয়ে যান। পরে ওই চালকের কথা বিশ্বাস করে তার অ্যাম্বুলেন্স করে শিশু দুটিকে শ্যামলীর ‘আমার বাংলাদেশ হাসপাতালে’ নিয়ে যাই।”

আয়েশা বেগম বলেন, ‘শ্যামলীর ওই হাসপাতালে শিশুদের চিকিৎসা চলতে থাকে। তিনদিন পরে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ বিল দেখায় ১ লাখ ২৬ হাজার টাকা। ওই টাকা দেওয়ার জন্য চাপ প্রয়োগ করতে থাকে। এত টাকা কোথা থেকে দেব বললে তারা আমার সঙ্গে খারাপ করে। এর একদিন পরই বলে দেড় লাখ টাকা বিল হয়েছে। পরে আমি ৫৫ হাজার টাকা পরিশোধ করি। কিন্তু তারা পুরো বিল দেওয়ার জন্য আমাকে চাপ দিতে থাকে। এবং আমার সাথে দুর্ব্যবহার করতে থাকে। এক পর্যায়ে শিশু দুটিকে হাসপাতাল থেকে বের করে আমার কাছে দিয়ে দেয়। তখন আমার দুই সন্তানকে অপর একটি অ্যাম্বুলেন্স করে ঢাকা মেডিকেলে নেওয়ার পথে আহমেদ রাস্তায় মারা যায়।’

সারাবংলা/এসএসআর/পিটিএম

আব্দুল্লাহ ছাড়পত্র টপ নিউজ ঢামেক যমজ দুই শিশু


বিজ্ঞাপন
সর্বশেষ

বাংলাদেশ-ভারত টেস্টে হামলার হুমকি!
৬ সেপ্টেম্বর ২০২৪ ২১:৩৫

সম্পর্কিত খবর