Friday 06 September 2024
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

গাইবান্ধায় এক বছরে ২৪৫ নারী-শিশুকে ধর্ষণ

ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট
২৪ জানুয়ারি ২০২২ ২১:১৩

প্রতীকী ছবি

গাইবান্ধা: জেলায় ২০২১ সালে ২৪৫ জন নারী ও শিশু ধর্ষণের শিকার হয়েছে। ২০২০ সালে এই সংখ্যা ছিল ২১৮ জন। মূলত বিচারহীনতার সংস্কৃতি, পর্নোগ্রাফি, অপ্রাপ্তবয়স্কদের হাতে স্মার্টফোন ও ইন্টারনেটের অবাধ ব্যবহারের ফলে ধর্ষণের ঘটনা বাড়ছে বলে মনে করেছেন বিশেষজ্ঞরা। তবে শুধু আইনের ব্যবহার করেই এ সমস্যার সমাধান সম্ভব নয় বলে জানিয়েছে পুলিশ।

জেলা হাসপাতালসহ গাইবান্ধার সাত উপজেলার স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের তথ্য অনুযায়ী, ২০২১ সালের ১ জানুয়ারি থেকে ৩১ ডিসেম্বর পর্যন্ত ২৪৫ জন নারী ও শিশু ধর্ষণের শিকার হয়। এর মধ্যে সর্বনিম্ন বয়স ৩-১০ বছর বয়সের ১৪ জন, ১১-১৭ বছর বয়সের ১৫৫ জন এবং ১৯ বছরের ঊর্ধ্বে ৭৬ জন। সব থেকে বেশি নির্যাতনের শিকার হয়েছে ১১-১৮ বছরের শিশু ও কিশোরী।

নারী, শিশু ও মহিলা বিষয়ক সংগঠনগুলো জানায়, বিচারহীনতার সংস্কৃতি, অশ্লীলতা, পর্নোগ্রাফি, নারীর প্রতি অবমূল্যায়নের কারণে সমাজে ধর্ষণ বাড়ছে। সমাজে নারীদের কেবল ভোগ্য সামগ্রী মনে করা হয়। নারীদের নিয়ে অশ্লীল ব্যঙ্গ করা হয়। আইনের ফাঁক-ফোকর দিয়ে প্রকৃত অপরাধীরা বেড়িয়ে যায়। অপরাধীদের যথাযথ শাস্তি নিশ্চিত না হওয়ার কারণেও ধর্ষকের সংখ্যা বাড়ছে। অপরাধীদের সঠিক বিচার নিশ্চিত করা হলে সমাজ থেকে ধর্ষণ কমিয়ে আনা সম্ভব হবে।

জেলা নারীমুক্তি কেন্দ্র সাধারণ সম্পাদক নীলুফার ইয়াসমিন শিল্পী বলেন, অপরাধীদের সঠিক বিচার ও কঠিন শাস্তি না হওয়ার কারণেই সামজিক অপরাধ বাড়ছে। অপরাধ করার পরও যখন অপরাধীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি হয় না তখন অন্যরাও অপরাধ করার সাহস পায়। ফলে দিন দিন ধর্ষণের ঘটনা বৃদ্ধি পাচ্ছে।

মহিলা ও শিশু বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের ওয়ান স্টপ ক্রাইসিস গাইবান্ধার প্রোগ্রাম অফিসার (ওসিসি) মো. রুহুল আমিন জানান, ভুক্তভোগীদের দ্রুত চিকিৎসা, আইনি সেবাসহ সব ধরনের সহযোগিতা পেতে দফতরগুলোর সঙ্গে সমন্বয় করে থাকে ওসিসি।

জেলা বার অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট সিরাজুল ইসলাম বাবু বলেন, শুধু আইন করে সমাজ থেকে ধর্ষণ নির্মূল বা কমিয়ে আনা সম্ভব নয়। এজন্য প্রয়োজন পারিবারিক ও সামাজিক সচেতনতা, নৈতিকতা ও মূল্যবোধ। একদিকে আইনের যথাযথ প্রয়োগ থাকতে হবে অন্যদিকে জনসচেতনতা সৃষ্টি করতে হবে। তবেই ধর্ষণের ঘটনা রোধ করা সম্ভব।

এ বিষয়ে জেলার পুলিশ সুপার মুহাম্মদ তৌহিদুল ইসলাম বলেন, ‘সমাজ থেকে এই ব্যাধিটা নির্মূল করতে চাই। এজন্য সমাজের সকল স্তরের মানুষের অংশগ্রহণটা খুবই জরুরি। পুলিশের একার পক্ষে তা সম্ভব না।’

সমাজ থেকে ধর্ষণ নির্মূল বা কমিয়ে আনতে পুলিশের পাশাপাশি সচেতন মহল, অবিভাবক ও শিক্ষকদের সম্মিলিতভাবে কাজ করার আহ্বান জানান তিনি।

সারাবাংলা/এনএস

গাইবান্ধা নারী-শিশু ধর্ষণ


বিজ্ঞাপন
সর্বশেষ
সম্পর্কিত খবর