নির্বাচন কমিশন গঠন আইনের প্রতিবেদন সংসদে উত্থাপন
২৬ জানুয়ারি ২০২২ ১১:৫১
ঢাকা: নির্বাচন কমিশন গঠন সংক্রান্ত প্রস্তাবিত আইনটি পাসের সুপারিশ করে সংসদে প্রতিবেদন জমা দিয়েছে আইন বিচার ও সংসদ বিষয়ক মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটি। সংসদীয় কমিটির সভাপতি শহীদুজ্জামান সরকার ওই প্রতিবেদন উত্থাপন করেন। বহুল আলোচিত এই বিলটি পরবর্তী কার্যদিবসে পাস হবে বলে সংসদ সচিবালয় সূত্র জানিয়েছে।
দুইদিন বিরতির পর বুধবার (২৬ জানুয়ারি) বেলা ১১টার দিকে স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরীর সভাপতিত্বে সংসদ অধিবেশন শুরু হয়। কঠোরভাবে স্বাস্থ্যবিধি মেনে সীমিত সংখ্যক উপস্থিতিতে অনুষ্ঠিত অধিবেশনে ‘প্রধান নির্বাচন কমিশনার এবং নির্বাচন কমিশনার নিয়োগ বিল-২০২২’ এর রিপোর্ট উত্থাপন ছাড়াও মহিলা ও শিশু বিষয়ক মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় কমিটির সভাপতি মেহের আফরোজ এবং যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় কমিটির সভাপতি আব্দুল্লাহ আল ইসলাম জ্যাকব সংশ্লিষ্ট কমিটির রিপোর্ট উত্থাপন করেন।
এর আগে গত রোববার (২৩ জানুয়ারি) আইনমন্ত্রী অ্যাডভোকেট আনিসুল হক ওই বিলটি সংসদে উত্থাপনের পর তা অধিকতর পরীক্ষার জন্য সংসদীয় কমিটিতে পাঠানো হয়।
জানা গেছে, পরীক্ষা-নিরীক্ষা শেষে বিলের দু’টি ধারায় গুরুত্বপূর্ণ পরিবর্তনের সুপারিশ করেছে সংসদীয় কমিটি। এই পরিবর্তনের ফলে নৈতিক স্খলনজনিত কারণে সাজাপ্রাপ্ত হলেই তিনি প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) ও নির্বাচন কমিশনার (ইসি) পদে নিয়োগে অযোগ্য হবেন। আর সিইসি-ইসির যোগ্যতায় সরকারি, বিচার বিভাগীয়, আধা সরকারি বা বেসরকারি পদের পাশাপাশি স্বায়ত্তশাসিত ও অন্যান্য পেশায় কর্মরতদের যুক্ত করা হয়েছে।
আরও পড়ুন: ইসি গঠনের বিল সংসদে উত্থাপন
এর আগে সংবিধানের আলোকে আইন প্রণয়নের লক্ষ্যে গত ১৭ জানুয়ারি এ সংক্রান্ত আইনের খসড়া অনুমোদন দেয় মন্ত্রিসভা। মন্ত্রিসভার বৈঠক শেষে মন্ত্রিপরিষদ সচিব খন্দকার আনোয়ারুল ইসলাম জানিয়েছিলেন, সংবিধানের ১১৮(১) অনুচ্ছেদে একটি বিধান আছে। যেখানে বলা হয়েছে, রাষ্ট্রপতি প্রধান নির্বাচন কমিশনার ও নির্বাচন কমিশনারদের নিয়োগ দিতে পারেন। তারই পরিপ্রেক্ষিতে এ আইন করা হচ্ছে।
ওই দিন মন্ত্রিপরিষদ সচিব আরও জানান, প্রধান নির্বাচন কমিশনার ও নির্বাচন কমিশনার নিয়োগের জন্য রাষ্ট্রপতির কাছে সুপারিশ দিতে একটি সার্চ কমিটি (অনুসন্ধান কমিটি) গঠনের কথা বলা হয়েছে আইনে। এই সার্চ কমিটিব হবে ছয় সদস্যের। কমিটিকে সাচিবিক সহায়তা দেবে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ। সার্চ কমিটি যোগ্য প্রার্থীদের নাম সুপারিশের পর সেখান থেকে রাষ্ট্রপতি নির্বাচন কমিশনারদের নিয়োগ দেবেন।
সংবিধানের ১১৮(১) অনুচ্ছেদে বলা আছে, ‘প্রধান নির্বাচন কমিশনার এবং অনধিক চার জন নির্বাচন কমিশনারকে নিয়ে একটি নির্বাচন কমিশন থাকবে এবং এ বিষয়ে প্রণীত কোনো আইনের বিধান সাপেক্ষে রাষ্ট্রপতি প্রধান নির্বাচন কমিশনারকে এবং অন্যান্য নির্বাচন কমিশনারকে নিয়োগ দেবেন।’
সংবিধানে সুস্পষ্ট একটি অনুচ্ছেদ থাকার পরও কোনো সরকারই আইন করার উদ্যোগ নেয়নি। সম্প্রতি সুশীলসমাজসহ বিভিন্ন ফোরাম থেকে আইনটি প্রণয়নের দাবি জোরদার হয়। সুশাসনের জন্য নাগরিক-সুজন ছাড়াও দেশের বিশিষ্টজনেরাও ইসি গঠনে আইন প্রণয়নের আহ্বান জানান। নতুন ইসি গঠনে রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ গত বছরের ২০ ডিসেম্বর থেকে এ বছরের ১৭ জানুয়ারি পর্যন্ত যেই ২৫টি নিবন্ধিত রাজনৈতিক দলের সঙ্গে মতবিনিময় করেছেন, তাতেও বেশির ভাগ দল আইন প্রণয়নের দাবি জানিয়েছে।
সারাবাংলা/এএইচএইচ/এএম