এক বছরের দণ্ডপ্রাপ্ত আসামি ১৩ শর্তে সাজা খাটবেন নিজ বাড়িতে
২৬ জানুয়ারি ২০২২ ২১:১৫
খাগড়াছড়ি: মাদক মামলায় এক বছরের দণ্ডপ্রাপ্ত আসামি ১৩ শর্তে সাজা খাটবেন বাড়িতে— এমন যুগান্তকারী রায় দিয়েছেন খাগড়াছড়ি চিফ জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের বিচারক জি. এম ফারহান ইসতিয়াক।
বুধবার (২৬ জানুয়ারি) ১৩ দফায় মুচলেকা নিয়ে আসামিকে দুই জিম্মাদারের হাতে দেওয়া হয়।
সৌভাগ্যবান সাজাপ্রাপ্ত আসামি হলেন জেলার দিঘীনালা উপজেলার পশ্চিম বেতছড়ি এলাকার মো. ফজলু গাজীর ছেলে মো. ফারুক (৩৪)।
কোর্ট পরিদর্শক জাহাঙ্গীর আলম জানান, ২০১৯ সালের ২৮ আগস্টে দিঘীনালা থানায় দায়ের করা একটি মাদক মামলায় মো. ফারুককে এক বছরের কারাদণ্ড দিলেও জেলে গিয়ে সাজা খাটতে হবে না। সাজাকালীন আসামি আদালত নিযুক্ত প্রবেশন অফিসারের তত্ত্বাবধানে নিজেকে সমর্পণ করবে, আসামি তার বাসস্থান এবং জীবিকার উপায় সম্পর্কে প্রবেশন অফিসারকে অবহিত করবে, সৎ ও শান্তিপূর্ণ জীবনযাপন করবে, আদালত কর্তৃক তলব করা হাজির না হলে দণ্ড ভোগ করিতে বাধ্য থাকবে, সময় সময় প্রবেশন অফিসার কর্তৃক প্রদেয় আইনানুগ মৌখিক বা লিখিত উপদেশসমূহ মেনে চলবে, আদালতের পূর্বানুমতি ব্যতিরেকে বাংলাদেশ ত্যাগ করে কোথায় ও যাবে না, দুশ্চরিত্র লোকের সঙ্গে মেলামেশা করবে না, কোনোপ্রকার লাম্পট্য কাজে লিপ্ত হবে না, নিয়মিত পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ আদায় করবে, ১০০টি বিভিন্ন জাতের গাছের চারা রোপণ ও পরিচর্যা করবে, প্রত্যেক মাসে একজন এতিম বাচ্চাকে এক বেলা খাওয়াবে, দেশে প্রচলিত আইনে শাস্তিযোগ্য কোন প্রকার অপরাধ কর্মে লিপ্ত হবে না এবং দেশে প্রচলিত আইনের প্রতি শ্রদ্ধশীল থাকবে, স্বেচ্ছায় বা কারও প্ররোচনায় শান্তি ভঙ্গের কোনো কাজে লিপ্ত হবে না না অথবা অংশগ্রহণ করবে না এবং উপরোল্লিখিত ১ থেকে ১৩ নং শর্তের কোনো শর্ত ভঙ্গ করলে আদালত প্রদত্ত যে কোনো শাস্তি ভোগ করতে বাধ্য থাকবে।
আসামির দুই আত্মীয় আসাদুল হক ও মো. জুয়েল হোসেন আসামির মুচলেকায় সাক্ষী হিসেবে স্বাক্ষর করেছেন মর্ম জানান পুলিশের এই কর্মকর্তা।
আসামিপক্ষের আইনজীবী আবদুল্লাহ আল মামুন জানানা ২০১৯ সালে মাত্র ২৫০ গ্রাম গাঁজা উদ্ধার দেখিয়ে আসামির বিরূদ্ধে মামলা হয়েছে। মামলায় একই বছরের ২৪ ডিসেম্বর চার্জ গঠন করার পর ১২জন সাক্ষী নিয়ে আদালত যুগান্তকারী রায় দিয়েছে।
আসামির প্রথম অপরাধ বিবেচনায় আদালত আসামিকে সংশোধনের সুযোগ দিয়েছেন, যা প্রশংসনীয়। এ রায় প্রদানের জন্য তিনি আদালতের কাছে কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন।
খাগড়াছড়ি জেলা আইনজীবী সমিতির সভাপতি আশুতোষ চাকমা ও আকতার উদ্দিন মামুন আদালত প্রদত্ত রায়কে দৃষ্টান্তমূলক উল্লেখ করে বলেন, ‘এর ফলে অনেকে সংশোধিত হওয়ার সুযোগ পাওয়ার পাশাপাশি সরকারি কর্ম লাভে অসুবিধায় পড়বে না।’
সারাবাংলা/একে