উন্নত দেশের উপযোগী করা হচ্ছে পুলিশকে, ডোপ টেস্টে চাকরিচ্যুত ৩৭
২৬ জানুয়ারি ২০২২ ২৩:০৯
ঢাকা: বাংলাদেশ পুলিশকে ২০৪১ সালের উন্নত দেশের উপযোগী করে গড়ে তুলতে তথ্যপ্রযুক্তির ব্যাপক ব্যবহারের মাধ্যমে পুলিশের সক্ষমতা বাড়ানোর উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়েছে। এক্ষেত্রে ভবিষ্যতে পুলিশে আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্স, রোবট, ড্রোন ইত্যাদি অত্যাধুনিক প্রযুক্তি সংযোজন করা হবে।
বুধবার (২৬ জানুয়ারি) পুলিশ সপ্তাহ ২০২২ এর চতুর্থ দিনে রাজারবাগ পুলিশ অডিটোরিয়ামে দিনব্যাপী ঊর্ধ্বতন পুলিশ কর্মকর্তাদের সঙ্গে পুলিশ মহাপরিদর্শক ড. বেনজীর আহমেদ সম্মেলনে এ সব বিষয়ে আলোচনা করেন।
পুলিশ হেডকোয়ার্টার্সের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা, সকল মেট্রোপলিটন পুলিশ কমিশনার, রেঞ্জ ডিআইজি ও জেলা পুলিশ সুপাররা এতে অংশগ্রহণ করেন।
সন্ধ্যায় এক সংবাদ সম্মেলনে মিডিয়া অ্যান্ড প্ল্যানিংয়ের উপ-মহাপরিদর্শক (ডিআইজি) মো. হায়দার আলী খান পুলিশের আধুনিকায়নে বিভিন্ন ইউনিট থেকে পাওয়া প্রস্তাবের বিষয় তুলে ধরেন।
তিনি বলেন, ‘দেশের অভ্যন্তরীণ নিরাপত্তা বিধান, আইন-শৃঙ্খলা রক্ষা, অপরাধ দমন, সন্ত্রাস মোকাবিলা, আইনের শাসন প্রতিষ্ঠা এবং বাংলাদেশ পুলিশকে ২০৪১ সালের উন্নত দেশের উপযোগী জনবান্ধব ও পেশাদার বাহিনী হিসেবে গড়ে তোলার ক্ষেত্রে পুলিশের আধুনিকায়ন প্রয়োজন।’
তিনি বলেন, ‘বাংলাদেশ পুলিশের সেবা জনগণের কাছে পৌঁছে দিতে প্রতিটি ইউনিয়ন ও পৌরসভার ওয়ার্ডে বিট পুলিশিং কার্যালয় স্থাপন, সাইবার অপরাধ দমনে স্বতন্ত্র সাইবার ইউনিট প্রতিষ্ঠা, দেশ ও জনগণের কল্যাণে নিবেদিত পুলিশ সদস্যদের চিকিৎসার সুবিধার্থে আলাদা মেডিকেল সার্ভিস গঠন, অনলাইন জিডি আরও সহজতর ও বিস্তৃত করা, জনগণের আইনি সহায়তা আরও সুগম করার লক্ষ্যে সার্কেল অফিসের কার্যক্রম বেগবান করা, পুলিশ সদস্যদের আধুনিক প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করা, ২০৪১ সালের উপযোগী করে হাইওয়ে পুলিশকে গড়ে তোলা ইত্যাদি বিষয়ে আলোচনা হয়েছে।’
তিনি বলেন, ‘পুলিশের সক্ষমতা বাড়ানোর মূল লক্ষ্য জনগণের কাছে দ্রুত সেবা পৌঁছে দেওয়া। আমরা বাংলাদেশ পুলিশকে জনতার পুলিশ, জনবান্ধব পুলিশ হিসেবে গড়ে তুলতে আইজিপি মহোদয়ের নেতৃত্বে কাজ করছি।’
শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের অভিযোগের মধ্যে অন্যতম হচ্ছে পুলিশের হামলা ও হয়রানি। এমন প্রশ্নের জবাবে মো. হায়দার আলী বলেন, ‘এটি তদন্তসাপেক্ষ। পুলিশ সদর দফতর তদন্ত করছে। যদি তদন্তে শিক্ষার্থীদের উপর পুলিশি হয়রানি বা হামলার ব্যাপারে সত্যতা পাওয়া যায় তাহলে দায়ীদের বিরুদ্ধে বিভাগীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।’
পুলিশের ডোপ টেস্টের পর ৩৭ জনের চাকরি হারিয়েছে— এ সব বিষয়ে এক প্রশ্নের জবাবে মো. হায়দার আলী খান বলেন, ‘বাংলাদেশ পুলিশ সদস্যদের যাকে সন্দেহ হচ্ছে তাকে ডোপ টেস্ট (মাদকাসক্তি পরীক্ষা) করানো হচ্ছে। ডোপ টেস্টে ধরা পড়লে পুলিশ সদস্যদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে। ডোপ টেস্টে এখন পর্যন্ত ৩৭ জন সদস্য চাকরিচ্যুত হয়েছে।’
তিনি বলেন, ‘অভিযোগ উত্থাপিত হলে অথবা যেকোনো সময় সেটি তদন্ত করে ব্যবস্থা নেওয়া হয়। একইসঙ্গে পুলিশের বিভাগীয় ব্যবস্থা চালু থাকে এবং নিয়মিত মামলা হয়। সুতরাং যেকোনো পুলিশ সদস্যের বিরুদ্ধে মাদকের অভিযোগ পাওয়া গেলে তাৎক্ষণিকভাবে যথাযথভাবে ব্যবস্থা নেওয়া হয়।’
বাংলাদেশ পুলিশ দেশে প্রথমবারের মতো ডোপ টেস্ট চালু করেছিল জানিয়ে ডিআইজি হায়দার আলী খান বলেন, ‘সরকারের অন্য কোনো বিভাগ আমাদের মতো সেভাবে ডোপ টেস্ট চালু করতে পারেনি। অর্থাৎ কোনো মাদকাসক্ত আমাদের পুলিশে যোগদান করে কি না সেটি আমরা প্রথমেই চেক করি। পরবর্তীতে প্রতি নিয়ত এই ডোপ টেস্ট করা হয়ে থাকে। কেউ যদি ডোপ টেস্টে ধরা পড়ে তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হয়।’
সারাবাংলা/ইউজে/একে