করোনার কারণে সেবাবঞ্চিত হয়েছে অসংক্রামক রোগে আক্রান্তরা
২৬ জানুয়ারি ২০২২ ২৩:১৪
ঢাকা: স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণমন্ত্রী জাহিদ মালেক বলেছেন, নন কমিউনিকেবল ডিজিজ বা অসংক্রামক রোগ বর্তমানে বাংলাদেশের জন্য ক্রমবর্ধমান স্বাস্থ্যঝুঁকি ও উদ্বেগের কারণ হচ্ছে। হাসপাতালগুলোতে কোভিড রোগী দিয়ে ভর্তি হওয়ায় অসংক্রামক রোগে আক্রান্তরা সেবাবঞ্চিত হয়েছে। দেরিতে সেবা নেওয়ার কারণে অসংক্রামক রোগে আক্রান্তদের মৃত্যু বেড়েছে।
বুধবার (২৬ জানুয়ারি) রাজধানীর প্যান প্যাসিফিক সোনারগাঁও হোটেলে দেশে প্রথমবারের মতো আয়োজিত জাতীয় অসংক্রামক রোগ বিষয়ক (১ম জাতীয় এনসিডিস কনফারেন্স-২০২২ বাংলাদেশ) কনফারেন্সের প্রথম দিনে ভার্চুয়ালি যুক্ত হয়ে এ সব কথা বলেন স্বাস্থ্যমন্ত্রী।
বাংলাদেশ হেলথ রিপোর্টার্স ফোরামসহ আরও ৩০টি জাতীয় ও আন্তর্জাতিক প্রতিষ্ঠানের সহযোগিতায় আয়োজিত এই সম্মেলন চলবে ২৮ জানুয়ারি পর্যন্ত।
জাহিদ মালেক বলেন, ‘দেশের ৬৭ শতাংশ মানুষ দেশে নানা অসংক্রামক রোগে আক্রান্ত হয়ে মারা যাচ্ছে। বাংলাদেশে ২০ শতাংশ মানুষ উচ্চ রক্তচাপ, ১০ শতাংশ ডায়বেটিস ও ২০ লাখ মানুষ ক্যান্সারে ভোগে। প্রতি বছর নতুনভাবে যোগ হয় ৫০ হাজার।’
তিনি বলেন, ‘জীবনযাত্রার পরিবর্তন, খাদ্যাভাসে পরিবর্তন, ওবিসিটি, তামাকের ব্যবহার, পরিবেশ দূষণ, অপর্যাপ্ত কায়িক পরিশ্রম, ওষুধের অপব্যবহারের কারণে বাড়ছে নানা ধরণের অসংক্রামক রোগ। এর প্রতিরোধে মানুষের মধ্যে সচেতনতা বাড়াতে হবে। রেগুলার চেকআপ ও আর্লি ডিটেকশন এনসিডি কন্ট্রোলে গুরুত্বপূর্ণ। ট্রিটমেন্ট ফ্যাসিলিটি বাড়ানো ও প্রশিক্ষিত জনবল প্রয়োজন।’
তিনি আরও বলেন, ‘সরকার এনসিডি প্রতিরোধে সেক্টর ভিত্তিক প্রোগ্রাম নিয়েছে। দেশের আট বিভাগে ক্যান্সার, কিডনি ও হৃদরোগের হাসপাতাল স্থাপন করা হচ্ছে। দেশের সব জেলা হাসপাতালে ১০ বেডের ডায়ালাইসিস ও আইসিইড বেড স্থাপন করা হচ্ছে। উপজেলা হজাসপাতালসহ দেশের সব হাসপাতালে এনসিডি কর্নার করা হয়েছে।’
স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেন, ‘দেশের হাসপাতালগুলোতে কোভিড রোগী দিয়ে ভর্তি হওয়ায় এনসিডি রোগীরা সেবাবঞ্চিত হয়েছে। দেরিতে সেবা নেওয়ায় মৃত্যু বেড়েছে। এখন দেশে কোভিড পজিটিভিটি রেট ৩২%, দিনে ১৫ হাজারের বেশি রোগী শনাক্ত হচ্ছে।’
কোভিড-১৯ সংক্রমণ রোধে সবাইকে মাস্ক পরতে, জনসমাগম এড়ানো ও ভ্যাকসিন নেওয়ার আহ্বান জানান মন্ত্রী।
কনফারেন্স আয়োজনের জন্য স্বাস্থ্য অধিদফতর, বাংলাদেশ নন কমিউনিকেবল ডিজিজ ফোরাম ও বাংলাদেশ হেলথ রিপোর্টার্স ফোরামকে বিশেষ ধন্যবাদ জানান স্বাস্থ্যমন্ত্রী।
এ দিন সকাল ৯টায় জাতীয় অসংক্রামক রোগ বিষয়ক (১ম জাতীয় এনসিডিস কনফারেন্স-২০২২ বাংলাদেশ) কনফারেন্স উদ্বোধন করা হয়। এ দিন তিনটি সেশনে ভাগ করে এই কনফারেন্সে আলোচকরা বক্তব্য রাখেন।
সকালের উদ্বোধনী সেশনে চেয়ারম্যান হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ মেডিকেল এসোসিয়েশনের সাবেক সেক্রেটারি ডা. সারওয়ার আলী। এই সেশনে বক্তব্য রাখেন স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের সাবেক সচিব মো. হুমায়ুন কবির, পিওর আর্থের কান্ট্রি ডিরেক্টর ডা. মাহফুজুর রহমান, ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের কার্ডিওলজি বিভাগের প্রধান অধ্যাপক ডা. আবদুল ওয়াদুদ চৌধুরী, সাউথ ইস্ট এশিয়া রিজিওনাল এনসিডি অ্যালায়েন্সের চেয়ারপার্সন ডা. মনিকা আরোরা, ইন্টারন্যাশনাল ডায়াবেটিস ফেডারেশনের প্রেসিডেন্ট (নির্বাচিত) অধ্যাপক আখতার হোসাইন।
পরবর্তীতে বিজ্ঞান সেশনে বক্তব্য রাখেন ডা. জামান, ডা. শামসুল আরেফিন, ভারতের ডা আরুন জোস, আন্তর্জাতিক উদরাময় গবেষণা কেন্দ্র, বাংলাদেশের (আইসিডিডিআরবি) সিনিয়র বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা ডা. রুবানা রাকিব, অর্গানিইজিং কমিটির সায়েন্টিফিক সেক্রেটারি ডা. আলিয়া নাহিদ, ডা. আফরিন ইকবাল, ডা. আনোয়ার হোসেন।
কনফারেন্সে আরও বক্তব্য রাখেন ডা. তাহনিয়াহ হক, ডা. মারুফা মুস্তারি,ডা. শাহাজাদা সেলিম, ডা. এস এম আশরাফুজ্জামান, ডা. নুসরাত হোসেন শেবা, ডা. সাদিয়া নুর, ডা. তনময় সরকার, ডা. জেবা মাহমুদ, অধ্যাপক ডা. সানোয়ার হোসেন, ডা. মোহাম্মদ মহিউদ্দিন ওসমানী, অধ্যাপক ডা. ব্রায়েন গডম্যান, ডা. বেদোওরা জাবিন, ডা. থান চো, ডা. শেখ দাঊদ আদনানসহ অন্যরা।
সারাবাংলা/এসবি/একে
অসংক্রামক রোগ জাহিদ মালেক স্বাস্থ্যমন্ত্রী হেলথ রিপোর্টার্স ফোরাম