সাবেক জেলার সোহেলের স্ত্রীরও কোটি টাকার অবৈধ সম্পদ
৩০ জানুয়ারি ২০২২ ২১:৫১
চট্টগ্রাম ব্যুরো: চট্টগ্রাম কেন্দ্রীয় কারাগারের সাবেক জেলার সোহেল রানা বিশ্বাসের আড়াই কোটি টাকার অবৈধ সম্পদের পর তার স্ত্রী হোসনে আরা পপির কাছেও কোটি টাকার জ্ঞাত আয় বহির্ভূত সম্পদের সন্ধান পেয়েছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)।
রোববার (৩০ জানুয়ারি) দুদক সমন্বিত জেলা কার্যালয় চট্টগ্রাম-১-এর সহকারী পরিচালক এনামুল হক বাদী হয়ে হোসনে আরা পপির বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেছেন।
মামলার বাদী এনামুল হক সারাবাংলাকে জানিয়েছেন, মিথ্যা ও ভুয়া রেকর্ডপত্র তৈরি করে প্রতারণার মাধ্যমে এক কোটি এক লাখ ৩১ হাজার ৮৭৩ টাকার জ্ঞাত আয় বহির্ভূত সম্পদ অর্জন করে নিজের দখলে রাখার অভিযোগে হোসনে আরা পপির বিরুদ্ধে মামলা দায়ের হয়েছে। দুদকের সম্পদ বিবরণীর নোটিশের পরিপ্রেক্ষিতে পপি সম্পদের তথ্য জমা দিয়েছিল। এতে দেখা যায়, হোসেন আরা পপি তার নামে থাকা স্থাবর-অস্থাবর সম্পদের যে বিবরণী দুদকে জমা দিয়েছেন, তার চেয়ে আরও এক কোটি টাকার বেশি সম্পদ তার ভোগদখলে আছে।
জ্ঞাত আয় বহির্ভূত সম্পত্তি অর্জনের অভিযোগে দণ্ডবিধির ৪০৯/৪২০/৪৬৭/৪৬৮/৪৭১/৪৭৭(ক)/১০৯ ধারায় এবং দুর্নীতি প্রতিরোধ আইনের ৫(২) ধারায় মামলাটি করা হয় বলে জানান তিনি।
পপির স্বামী সোহেল রানা বিশ্বাস ময়মনসিংহ শহরের আর কে মিশন রোডের মো. জিন্নত আলী বিশ্বাসের ছেলে। ২০১৮ সালের ২৬ আগস্ট ভৈরব রেল স্টেশনে চট্টগ্রাম থেকে ময়মনসিংহগামী বিজয় এক্সপ্রেস ট্রেন থেকে তাকে গ্রেফতার করে পুলিশ। এসময় তার কাছ থেকে নগদ ৪৪ লাখ ৪৩ হাজার টাকা এবং তার নিজ নামে ১ কোটি টাকা, স্ত্রী হোসনে আরার নামে ১ কোটি এবং শ্যালক রাকিবুল হাসানের নামে ৫০ লাখ টাকাসহ মোট আড়াই কোটি টাকার এফডিআর রশিদ এবং ব্র্যাক, প্রাইম, মার্কেন্টাইল ও প্রিমিয়ার ব্যাংকের আলাদা হিসেবে ১ কোটি ৩০ লাখ টাকার চেক উদ্ধার করা হয়।
এছাড়াও মার্কেন্টাইল, দ্য সিটি, সাউথইস্ট ও সোনালী ব্যাংকের ১০ পাতার খালি চেক বই পাওয়া যায়। তার কাছ থেকে ১২ বোতল ভারতীয় ফেনসিডিল এবং একটি ডিএসএলআর ক্যামেরাও জব্দ করা হয়।
তখন সোহেল রানার বিরুদ্ধে ভৈরব রেলওয়ে থানার এসআই মো. আশ্রাফ উদ্দিন ভূঁইয়া বাদী হয়ে মাদক ও অর্থপাচার আইনে দু’টি মামলা করেন। এ ঘটনার পর কারা কর্তৃপক্ষ তাকে বরখাস্ত করে। গত বছরের ২৯ নভেম্বর সোহেল রানা বিশ্বাসের বিরুদ্ধে ৪০ লাখ ২৭ হাজার ২৩৩ টাকার সম্পদের তথ্য গোপন এবং ঘুষ ও দুর্নীতির মাধ্যমে ২ কোটি ৩৩ লাখ ৩৩ হাজার ২৩৫ টাকার জ্ঞাত আয় বহির্ভূত সম্পদ অর্জন করে ভোগদখলে রাখার অভিযোগে মামলা করেছিল দুদক।
এদিকে, জালিয়াতির মাধ্যমে ব্যাংক থেকে ঋণ নিয়ে আত্মসাতের অভিযোগে বেসরকারি ইউনাইটেড কমার্শিয়াল ব্যাংকের (ইউসিবিএল) দুই কর্মকর্তা ও এক ব্যবসায়ীসহ পাঁচ জনের বিরুদ্ধে একটি মামলা করেছে দুদক। দুদকের সহকারী পরিচালক এনামুল হক মামলার বাদী।
মামলায় আসামি করা হয় ব্যবসায়ী হোসাইন হায়দার আলী, তার স্ত্রী মনিরা হোসাইন হায়দার, ইউসিবিএল ব্যাংকের সাবেক ভাইস প্রেসিডেন্ট ও আগ্রাবাদ শাখার ব্যবস্থাপক আহম্মেদ সাইফুল হুদা, ব্যাংকের সাবেক রিলেশন শিপ অফিসার আনিসুর রহমান ও মনোয়ারা বেগম নামে আরেকজনকে।
এনামুল হক জানান, আসামিরা পরস্পর যোগসাজশের মাধ্যমে ভুয়া তথ্যে ইউসিবিএল ব্যাংক থেকে সাত কোটি ৮১ লাখ ৭৪ হাজার ৫৭৯ টাকা ঋণ নিয়ে তা আত্মসাৎ করেন। এ কারণে ব্যাংকের সুদ বাবদ ১৫ কোটি এক লাখ ২৬ হাজার ৪৮৫ টাকা ক্ষতি হয়েছে।
দণ্ডবিধির ৪০৯/৪২০/৪৬৭/৪৬৮/৪৭১/৪৭৭(ক)/১০৯ ধারায় এবং দুর্নীতি প্রতিরোধ আইনের ৫(২) ধারায় এ মামলাটি দায়ের করা হয়েছে।
সারাবাংলা/আরডি/টিআর
অবৈধ সম্পদ টপ নিউজ সাবেক জেলার সোহেল রানা সোহেল রানা স্ত্রী হোসনে আরা পপি