ইসি আইনটি বাকশালের মতোই: ফখরুল
৩০ জানুয়ারি ২০২২ ২৩:৩৩
ঢাকা: বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, তারা (সরকার) ইতোমধ্যে দুইটি নির্বাচন করেছে, যেখানে সত্যিকার অর্থে জনগণ ভোট দেওয়ার সুযোগ পায়নি। আবার একটা আইন তৈরি করল কয়েক দিন আগে। ঠিক সেই বাকশালের মতোই। সেটা ১১ মিনিটে ছিল, এটা (ইসি আইন) সাত দিনের মধ্যে পাস করে নিল সংসদে।
রোববার (৩০ জানুয়ারি) বিকেলে আয়োজিত এক ভার্চুয়াল আলোচনা সভায় তিনি এসব কথা বলেন। বাকশাল দিবস উপলক্ষে ’২৫ জানুয়ারি ১৯৭৫: বাকশাল’ শীর্ষক এই আলোচনা সভা আয়োজ করে স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী উদযাপন বিএনপির জাতীয় কমিটি। ভার্চুয়াল এই আলোচনা সভায় প্রধান অতিথি হিসেবে দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান ‘১৯৭৫ : বাকশাল’ গ্রন্থের মোড়ক উন্মোচন করেন। আলোচনা সভা শেষ হয় রাত ৯ টার দিকে।
অনুষ্ঠানে মির্জা ফখরুল বলেন, ‘১৯৭৫ সালে আওয়ামী লীগ যে কাজটা করতে পারেনি, গত ১৪ বছর ধরে অত্যন্ত সাফল্যের সঙ্গে সেই কাজটা করার জন্য তারা ধীরে ধীরে পদক্ষেপ নিয়ে নিয়ে এগিয়ে গেছে। একটা মোড়ক রেখেছে সামনে, একটা ছদ্মবেশ-অবয়ব-লেবাস যে বহুদলীয় গণতন্ত্র এখানে আছে। আসলে এখানে কোনো বহুদলীয় গণতন্ত্র নেই।’
তিনি বলেন, ‘বাকশাল একটি গালিতে পরিণত হয়েছে। এই বাকশালের মধ্য দিয়ে সেদিন দেশে অর্থনীতিকে ধবংস করা হয়েছিল, রাজনীতিকে ধবংস করা হয়েছিল, স্বপ্নকে ধবংস করা হয়েছিল। একদলীয় শাসন ব্যবস্থা প্রতিষ্ঠা করে তারা দেশ ও জাতিকে গভীর অন্ধকারে ভেতরে নিয়ে গিয়েছিল।’
‘আজকে ঠিক একইভাবে দেখছি আওয়ামী লীগ অত্যন্ত সুপরিকল্পিতভাবে দেশের অর্থনীতিকে দলীয়করণ করেছে, লুটতরাজের যে অর্থনীতি সেই অর্থনীতিতে পরিণত করেছে, রাজনৈতিক দলগুলোর কর্মকান্ডকে অত্যন্ত নিষ্ঠুর হাতে দমন করছে। বিশেষ করে যারা গণতান্ত্রিক মানুষ তাদেরকে হত্যা-গুমের মধ্য দিয়ে ধবংস করে দেওয়া হচ্ছে এবং প্রতিবাদের যে ভাষা সেই ভাষাকে বন্ধ করা হচ্ছে। বিভিন্ন নির্বতনমূলক আইন তৈরি করে মানুষের কথা বলাটা সম্পূর্ণভাবে নিষিদ্ধ করে দেওয়া হচ্ছে’- বলেন মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।
তিনি বলেন, ‘৪৭ বছর পরে আবার বাকশাল প্রতিষ্ঠার যে নীল নকশা শুরু হয়েছে। এই নীলনকশাকে প্রতিহত করতে হবে এবং সেটা জনগণকে সঙ্গে নিয়েই। আমাদের প্রতিরোধ গড়ে তুলতে হবে। একটা সমৃদ্ধ, উন্নত, গণতান্ত্রিক বাংলাদেশে যে স্বপ্ন আমরা প্রতি মুহূর্ত দেখি, সেই স্বপ্নকে প্রতিষ্ঠিত করতে হলে সবাইকে ত্যাগ স্বীকার করতে হবে। সব রাজনৈতিক দল ও রাজনৈতিক ব্যক্তিদের নিয়ে একত্রে রুখে দাঁড়াতে হবে। এই ভয়াবহ ফ্যাসিবাদী সরকারকে সরিয়ে জনগণের সরকার, জনপ্রতিনিধির পার্লামেন্ট গঠন করতে হবে।’
বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য খন্দকার মোশাররফ হোসেন বলেন, ‘আওয়ামী লীগ আর গণতন্ত্র এক সাথে যায় না। ১৯৭৫ এ বাকশাল প্রতিষ্ঠা এবং গত ১৪ বছর আওয়ামী লীগের এই শাসন, বিনা ভোটে নির্বাচিত সরকার, রাতে অন্ধাকারে ডাকাতির সরকার আজকে গায়ের জোরে বাংলাদেশ পরিচালনা করছে।’
‘তাই উপসংহার একটাই যে, গণতন্ত্র নেই বলেই দেশ একটা অন্ধকারের গহ্বরের কিনারায় পৌঁছেছে। এ থেকে দেশকে রক্ষা করতে জনগণকে এগিয়ে আসতে হবে। এখন সময় এসেছে দলমত নির্বিশেষে সকলে মিলে জাতীয় ঐক্য সৃষ্টি করে এই সরকারকে সরানোর’- বলেন ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন।
স্বাধীনতার সূবর্ণ জয়ন্তী উপদযাপনে বিএনপির জাতীয় কমিটির সদস্য সচিব আবদুস সালামের পরিচালনায় ভার্চুয়াল আলোচনা সভায় অন্যদের মধ্যে বক্তব্য দেন দলের স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাস, গয়েশ্বর চন্দ্র রায়, ড. মঈন খান, নজরুল ইসলাম খান, আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী, সেলিমা রহমান ও ইকবাল হাসান মাহমুদ টুকু।
সারাবাংলা/এজড/পিটিএম