Friday 27 September 2024
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

ফিঙ্গারপ্রিন্ট জটিলতায় ভোট দিতে পারছেন না অনেকে

স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট
৩১ জানুয়ারি ২০২২ ১৫:০২

ফিঙ্গারপ্রিন্ট জটিলতায় দীর্ঘ হচ্ছে ভোটদের সারি, ছবি: সারাবাংলা

মুরাদনগর (কুমিল্লা) থেকে: ইলেকট্রনিক ভোটিং মেশিনে (ইভিএম) ভোট দিতে এসে আঙ্গুলের ছাপ না মেলায় অনেক বয়স্ক নাগরিক ভোট দিতে পারছেন না। এ কারণে অনেক ভোটার হতাশ হয়ে বাড়ি ফিরছেন। কেউ কেউ আবার উত্তেজিত হয়ে বিকল্প পদ্ধতিতে ভোট দেওয়ার ব্যবস্থা না থাকায় ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করেছেন। সোমবার (৩১ জানুয়ারি) জেলার মুরাদনগর উপজেলার জাহাপুর ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) বিভিন্ন ভোটকেন্দ্রে সরেজমিনে পরিদর্শনকালে এমন চিত্র ফুটে উঠেছে।

বিজ্ঞাপন

দেখা যায়, প্রথমবারের মতো জাহাপুর ইউনিয়নের সব কেন্দ্রে ইভিএম’এ ভোট হচ্ছে। অনেক ভোটারই ইভিএম’র ডেমো ভোটে অংশ না নেওয়ায়, চূড়ান্তভাবে ভোটের দিন এসে ভোট দিতে এসে বিপাকে পড়েছেন। আলোচিত ইভিএমে ভোট চলছে খুবই ধীরগতিতে। এর প্রধান সমস্যা ফিঙ্গারপ্রিন্ট জটিলতা। বয়স্ক পুরুষ ও নারী উভয়ের ক্ষেত্রে এই সমস্যা প্রকট। বেশ কিছু ভোটার কেন্দ্রে এসে ফিঙ্গারপ্রিন্ট না মেলায় ভোট দিতে পারছেন না।

বিজ্ঞাপন

এ ব্যাপারে রাণীমুহুরী সরকারি প্রাথমিক বিদ‍্যালয় কেন্দ্রের প্রিসাইডিং অফিসার আবদুস সাত্তার সারাবাংলাকে অভিযোগের সত‍্যতা স্বীকার করেন। তিনি বলেন, ‘অনেক ভোটারের ফিঙ্গারপ্রিন্ট মিলছে না। বেশি বয়স্ক নারী ও পুরুষের। এতে করে দুইবার, তিনবার, চারবার চেষ্টা করার ফলে ভোটারের দীর্ঘ লাইন জমে যাচ্ছে। ভোটাররা বিরক্ত হচ্ছেন এবং ভোট কাস্টিং কম হচ্ছে। এতে আমাদের কিছু করার নেই।’

একই কেন্দ্রে বয়স্ক ভোটার শহিদ মিয়া ( ৮০), এনআইডিতে তার জন্মতারিখ ১৯৪২। তিনি দীর্ঘ সময় চেষ্টা করেও ভোট দিতে না পেরে হতাশ হয়ে বলেন, ‘আমি ভোট না দিয়ে যাব। অনেক কষ্ট করে ভোট দিতে এসেছি, এখন বলা হচ্ছে আমার নাকি আঙ্গুলের ছাপ মিলছে না।’ অন্যদকে একই কেন্দ্রে হাজী আব্দুর হক (৭২) তিনিও ভোট দিতে এসে ভোট দিতে পারেননি।

অন্যদিকে সাতমোড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ভোট দিতে আসা আব্দুর হাই বলেন, ‘ভ‍্যাসলিন দিয়ে হাতের আঙুল পরিষ্কার করা হচ্ছে। এরপরেও অনেকেই ভোট দিতে পারছেন না। ভোট দিতে না পেরে অনেকেই বাড়ি ফিরে যাচ্ছেন।’

এছাড়াও দড়িকান্দি ভোটকেন্দ্রে ভোট দিতে আসা হামিদা আক্তার বলেন, ‘অনেকক্ষণ লাইনে দাঁড়িয়েছিলাম। ভোট কক্ষে পৌঁছে আর ভোট দিতে পারলাম না। ফিঙ্গার মেলেনি। বলছে পরে আসার জন‍্য।’

আয়েশা বেগম বলেন, ছাপ উঠেনি, ‘ছবিও ভাসেনি। তাই ভোট দিতে পারেনি। মন খারাপ করে বাড়ি চলে যাচ্ছি।’

এছাড়াও বেশ কয়েকটি ভোটকেন্দ্রে ঘুরে দেখা গেছে, ফিঙ্গার সমস‍্যায় ভোট দেওয়া থেকে বঞ্চিত ভোটাররা। ধীরগতির ভোট, কেন্দ্রেও ফিঙ্গারের সমস‍্যায় ভোট দিতে পারেননি অনেকেই। সবাই অভিযোগ হাতের ছাপ উঠে না যন্ত্রে। হাতে লেবু ঘষতে ঘষতে সুমি ইসলাম বলেন, ‘ফিঙ্গার উঠে না।’ ৩৫ বছরের কম বয়সী মায়া বলেন, ‘আমার বয়স কম। কিন্তু আমারও ফিঙ্গার সমস‍্যা।’

ভ‍্যাসলিন দিয়ে হাত মসৃণ করার চেষ্টা করলেও কাজ হয়নি। এদিকে ইভিএম’এ ভোট স্লো হওয়া। ভোটকক্ষের বাইরে ভোটারদের দীর্ঘলাইন আরও দীর্ঘ হচ্ছে। এভাবে দীর্ঘক্ষণ লাইনে দাঁড়িয়ে থাকায় অনেক বয়স্ক মানুষ অসুস্থ হয়ে পড়ছে। ভোট শুরুর প্রথম ৫ ঘণ্টায় ভোট পড়েছে ৩০ থেকে ৩২ শতাংশ।

উল্লেখ্য, ষষ্ঠ ধাপে ২১৬টি ইউনিয়ন পরিষদের ভোটগ্রহণ শুরু হয়েছে। সোমবার (৩১ জানুয়ারি) সকাল ৮টা থেকে বিকেল ৪টা পর্যন্ত ভোট চলবে।

সারাবাংলা/ জিএস/এনএস

ইউনিয়ন পরিষদ (ইউপি) ইলেকট্রনিক ভোটিং মেশিন (ইভিএম) টপ নিউজ

বিজ্ঞাপন
সর্বশেষ
সম্পর্কিত খবর