Friday 22 Nov 2024
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

ওমিক্রনের প্রভাবে বেড়েছে আগ্রহ, রেকর্ড ভ্যাকসিনেশন জানুয়ারিতে

সৈকত ভৌমিক, সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট
১ ফেব্রুয়ারি ২০২২ ১৫:৪৫

ঢাকা: দেশে নভেল করোনাভাইরাসের (কোভিড-১৯) সংক্রমণ ঊর্ধ্বমুখী। একইসঙ্গে কোভিড-১৯ ভাইরাসের নতুন ভ্যারিয়েন্ট বলে পরিচিত ওমিক্রন শনাক্ত হয়েছে বিভিন্ন নমুনার সিকোয়েন্সিংয়ে। কোভিড-১৯ সংক্রমণ নিয়ন্ত্রণে ভ্যাকসিন প্রয়োগ কার্যক্রমে মাঝে কিছুটা সময় মানুষের মাঝে আগ্রহের হার কম দেখা গেলেও জানুয়ারি মাসে রেকর্ড পরিমাণ ভ্যাকসিন প্রয়োগ করা হয়েছে। শুধুমাত্র এই মাসে দেশে প্রথম, দ্বিতীয় ও বুস্টার মিলিয়ে তিন কোটি ৫৮ লাখ ৪১ হাজার ৮১৫ ডোজ ভ্যাকসিন প্রয়োগ করা হয়েছে।

বিজ্ঞাপন

স্বাস্থ্য অধিদফতরের ম্যানেজমেন্ট ইনফরমেশন সেন্টার (এমআইএস) বিভাগের তথ্য অনুযায়ী দেখা যায়, দেশে ডিসেম্বরের তুলনায় জানুয়ারি মাসে বেড়েছে ভ্যাকসিন গ্রহণের জন্য আগ্রহীদের নিবন্ধন সংখ্যা। জাতীয় পরিচয়পত্র, পাসপোর্ট ও জন্মনিবন্ধন সনদ দিয়ে ভ্যাকসিন নিতে আগ্রহীরা নিবন্ধন করছে সুরক্ষা। একইসঙ্গে যাদের জাতীয় পরিচয়পত্র ও জন্মনিবন্ধন নেই তাদের বিশেষ ব্যবস্থাপনায় ভ্যাকসিন দেওয়া হচ্ছে সরকারিভাবে। শুধুমাত্র তাই নয়, ভ্যাকসিন গ্রহণেও অন্য সকল মাসের পরিসংখ্যানকে ছাপিয়ে গেছে জানুয়ারি। আর তাই নিবন্ধনের চাইতেও বেশি ভ্যাকসিন গ্রহীতার সংখ্যা।

বিজ্ঞাপন

ভ্যাকসিন প্রয়োগের লক্ষ্যমাত্রা

বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার লক্ষ্যমাত্রা অনুযায়ী, আগামী জুন মাসের মধ্যে দেশের জনসংখ্যার ৭০ শতাংশ মানুষকে ভ্যাকসিন দেওয়ার পরিকল্পনা গ্রহণ করেছে সরকার। অর্থাৎ ১১ কোটি ৯২ লাখ ২১ হাজার মানুষকে ভ্যাকসিন দিতে হবে এই সময়ে। এর মাঝে এখন পর্যন্ত আট কোটি ৭৪ লাখ চার হাজার ৬৬০ জন সুরক্ষা প্লাটফর্মে নিবন্ধন করেছেন।

বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার লক্ষ্যমাত্রা অনুযায়ী, আগামী জুন মাসের মধ্যে দেশের জনসংখ্যার ৭০ শতাংশকে অর্থাৎ ১১ কোটি ৯২ লাখ ২১ হাজার মানুষকে টিকা দিতে হবে।

লক্ষ্যমাত্রা অনুযায়ী স্বাস্থ্যসেবা বিভাগ ইতোমধ্যে ৯ কোটি ৭৪ লাখ ৯১ হাজার ৮৪২ জনকে প্রথম ডোজ ভ্যাকসিন দিয়েছে। ৭০ শতাংশ মানুষকে ভ্যাকসিনের প্রথম ডোজের আওতায় আনতে আরও ২ কোটি ১৭ লাখ ২৯ হাজার ১৫৮ জনকে ভ্যাকসিন দিতে হবে। দেশে এখন পর্যন্ত ভ্যাকসিন এসেছে ২৪ কোটি ৮৯ লাখ ডোজ।

জানুয়ারিতে ভ্যাকসিন প্রয়োগ পরিসংখ্যান

দেশে নভেল করোনাভাইরাসের (কোভিড-১৯) ওমিক্রন ভ্যারিয়েন্ট শনাক্ত হয় নভেম্বর মাসের নমুনার সিকোয়েন্সিংয়ে। পরবর্তীতে ডিসেম্বর মাসের নমুনায়ও পাওয়া যায় ওমিক্রন ভ্যারিয়েন্ট। জানুয়ারি মাসে দেশে কোভিড-১৯ সংক্রমণ শনাক্তের হার বাড়তে থাকে। এ সময়েই মূলত দেশে ভ্যাকসিন প্রয়োগে সর্বোচ্চ গুরুত্ব দেয় সরকার। আগের মাসগুলোতে কেন্দ্রে ভ্যাকসিন গ্রহণের জন্য আগ্রহী মানুষের সংখ্যা কমতে থাকলেও জানুয়ারি মাসে সরকার বিভিন্ন বয়স ক্যাটাগরিতে ভ্যাকসিন প্রয়োগে গুরুত্ব দেয়। এর মাঝে অন্যতম হলো ১২ থেকে ১৭ বছর বয়সী শিক্ষার্থীদের ভ্যাকসিন প্রয়োগ।

এমআইএস বিভাগের তথ্য বিশ্লেষণ করে দেখা যায়, দেশে জানুয়ারি মাসে সুরক্ষা প্লাটফর্মে ভ্যাকসিন গ্রহণের জন্য নিবন্ধন করেছে ৯৯ লাখ ৯৯ হাজার ৫২৭ জন। এই মাসে ভ্যাকসিন গ্রহণ করেছেন তিন কোটি ৫৮ লাখ ৪১ হাজার ৮১৫ জন। অর্থাৎ এই মাসে ২৭ কার্যদিবসে গড়ে ১৩ লাখ ২৭ হাজার ৪৭৫ জনকে ভ্যাকসিন প্রয়োগ করা হয়েছে।

এর আগে ২০২১ সালের ডিসেম্বর মাসে দেশে ভ্যাকসিন গ্রহণ করে এক কোটি ২০ লাখ ৫৬ হাজার ৪৫৯ জন। অর্থাৎ জানুয়ারি মাসে ডিসেম্বরের চাইতে দুই দশমিক ৯৭২ শতাংশ বেশি ভ্যাকসিন প্রয়োগ করা হয়েছে।

এর মাঝে প্রথম ডোজের ভ্যাকসিন পেয়েছে দুই কোটি ৩৯ লাখ ৮৯ হাজার ৫২৮ জন। এই সংখ্যার মধ্যে আছে এক কোটি তিন লাখ ৮৬ হাজার ১৭০ জন শিক্ষার্থী যাদের বয়স ১২ থেকে ১৭ বছরের মধ্যে। অর্থাৎ এক কোটি ৩৬ লাখ তিন হাজার ৩৫৮ জন ভ্যাকসিন পেয়েছে যাদের বয়স ১৮ বছরের বেশি।

জানুয়ারি মাসে দ্বিতীয় ডোজের ভ্যাকসিন পেয়েছেন এক কোটি তিন লাখ ১৭ হাজার ৫৯৯ জন। এর মাঝে ১৮ লাখ ৬০ হাজার ৮৪৮ জন শিক্ষার্থী দ্বিতীয় ডোজের ভ্যাকসিন পেয়েছেন যাদের বয়স ১২ থেকে ১৭ বছর বয়সসীমার মাঝে।

জানুয়ারি মাসে দেশে ১৫ লাখ ৩৪ হাজার ৬৮৮ জন বুস্টার ডোজের ভ্যাকসিন গ্রহণ করেছেন। প্রথমদিকে সম্মুখসারির যোদ্ধা ও ৬০ বছরের বেশি বয়সীদের বুস্টার ডোজ দেওয়া হলেও পরবর্তীতে বয়সসীমায় পরিবর্তন আনা হয়। ধাপে ধাপে দুই দফায় বয়স কমিয়ে ৫০ বছর ও ৪০ বছর করা হয়। ৩০ জানুয়ারি স্বাস্থ্যমন্ত্রী জানান ৪০ বছরের বেশি বয়সীরাও ভ্যাকসিনের বুস্টার ডোজ পাবেন।

জানুয়ারি মাসে ভ্যাকসিন প্রয়োগে রেকর্ড

দেশে ২০২১ সালের ৭ জানুয়ারি জাতীয় পর্যায়ে ভ্যাকসিন প্রয়োগ শুরু করা হয়। সেই মাসে ভ্যাকসিন প্রয়োগ করা হয় ৩০ লাখ ৭৮ হাজার ৭৯৮ জনকে। পরবর্তীতে মার্চ মাসে ২২ লাখ ৫৯ হাজার ৯০৬ জনকে ভ্যাকসিন প্রয়োগ করা হয়। তবে এর পরে ভারতে সংক্রমণ বাড়তে থাকার প্রভাব পড়ে বাংলাদেশের ভ্যাকসিন প্রয়োগ কার্যক্রমে। সিরাম ইনস্টিটিউটের সঙ্গে চুক্তি অনুযায়ী ভ্যাকসিন দিতে না পারায় এপ্রিল মাসে মাত্র চার লাখ ৪৯ হাজার ২২৫ জনকে ভ্যাকসিন প্রয়োগ করা হয়।

তবে এই সংখ্যা আরও কমে আসে মে মাসে। এই মাসে মাত্র দুই হাজার ৫০১ জনকে ভ্যাকসিন প্রয়োগ করা হয়। একইসঙ্গে ভ্যাকসিন প্রয়োগ কার্যক্রম শ্লথ করে অন্যান্য স্থান থেকেও ভ্যাকসিন ক্রয়ের চেষ্টা করা হয়। জুন মাসে ৫৮ হাজার ৭৪৫ জনকে ভ্যাকসিন প্রয়োগ করা হলেও এর গতি বৃদ্ধি পায় জুলাই মাস থেকে।

মূলত জুলাই মাসে পরে দেশের ভ্যাকসিন কার্যক্রম পুনরায় গতি ফিরে পায়। এই মাসেই দেশে গণটিকা কার্যক্রমের মাধ্যমে ওয়ার্ডভিত্তিক ভ্যাকসিন প্রয়োগ শুরু করা হয়। দেশে এই মাসে ২৯ লাখ ৭৪ হাজার ২৯০ জনকে ভ্যাকসিন প্রয়োগ করা হয়। আগস্ট মাসে ৯৬ লাখ ৮৩ হাজার ৬৬৭ জন ও সেপ্টেম্বর মাসে দেশে এক কোটি ৪৮ লাখ ৩৫ হাজার ৭৬৪জনকে ভ্যাকসিন প্রয়োগ করা হয়।

অক্টোবর মাসে দেশে আবার ভ্যাকসিন প্রয়োগে কিছুটা ভাটা দেখা যায়। এই মাসে ৮৮ লাখ ৩৪ হাজার ৭৮৮ জনকে ভ্যাকসিন প্রয়োগ করা হয়। নভেম্বর মাসে দেশে এক কোটি ৯৬ লাখ ৬৭ হাজার ২৮৯ জনকে ভ্যাকসিন প্রয়োগ করা হয় যা এখন পর্যন্ত দেশে এক মাসে দ্বিতীয় সর্বোচ্চ ভ্যাকসিন প্রয়োগের পরিসংখ্যান। ডিসেম্বর মাসে দেশে এক কোটি ২০ লাখ ৫৬ হাজার ৪৫৯ জনকে ভ্যাকসিন প্রয়োগ করা হয়।

তুলনামূলক বিশ্লেষণে দেখা যায়, দেশে জানুয়ারি মাসে দেশে নভেম্বরের তুলনায় এক দশমিক ৮২ শতাংশ ও ডিসেম্বরের তুলনায় দুই দশমিক ৯৭ শতাংশ বেশি ভ্যাকসিন প্রয়োগ করা হয়েছে।

কর্তৃপক্ষের বক্তব্য

স্বাস্থ্য অধিদফতরের ভ্যাকসিন ডেপ্লয়মেন্ট কমিটির সদস্য সচিব ডা. শামসুল হক বলেন, সরকার সবাইকে ভ্যাকসিন দেওয়ার পরিকল্পনা করেছে। আমরা সেই অনুযায়ী কাজ করে যাচ্ছি। মূলত জানুয়ারি মাসে যে পরিমাণ ভ্যাকসিন দেওয়া হয়েছে তা আমাদের সক্ষমতারই প্রমাণ দেয়। আমরা আরও দ্রুত নতুন পরিকল্পনা নিয়ে দেশের সকল জনগোষ্ঠীর মাঝে ভ্যাকসিন পৌছাতে চাই। যেসব স্থানে এখন পর্যন্ত ভ্যাকসিন দেওয়ার হার কম সেগুলোকেও গুরুত্বের সঙ্গে বিবেচনা করে টিকাদান কর্মসূচির চালিয়ে যেতে চাই।

তিনি বলেন, বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার সিদ্ধান্ত অনুযায়ী আমরা ধাপে ধাপে ভ্যাকসিন প্রয়োগ কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছি। সর্বশেষ আমরা ১২ থেকে ১৭ বছর বয়সী শিক্ষার্থীদের ভ্যাকসিন প্রয়োগ করেছি। যারা এখন পর্যন্ত কোনো শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ভর্তি হতে পারে নি বা শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান থেকে ঝরে গেছে তাদের মতন ১২ থেকে ১৭ বছর বয়সী শিশু-কিশোরদের আমরা ভ্যাকসিনের আওতায় নিয়ে আসবো। পাঁচ থেকে ১১ বছর বয়সী শিক্ষার্থীদের বিষয়ে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা যদি কোনো পরামর্শ দেয় তবে সরকারের নির্দেশনা অনুযায়ী আমরা কাজ করে যাবো। আমাদের সকল ধরণের প্রস্তুতি আছে।

তিনি আরও বলেন, ভ্যাকসিন কর্মসূচি যেসব এলাকায় একটু শ্লথগতিতে আছে সেখানেও আমরা গতি বাড়ানোর চেষ্টা করে যাবো। সেসব এলাকার প্রশাসনের সঙ্গে কথা বলে ব্যবস্থা নেওয়া হবে এ বিষয়ে।

স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক বলেন, ওমিক্রনের কারণে সংক্রমণ বেড়েছে এটা সত্যি। কিন্তু এখন পর্যন্ত মৃত্যুহার কম। আর এটার অন্যতম কারণ হলো ভ্যাকসিন। আমাদের ভ্যাকসিনের কোনো সঙ্কট নাই। সেজন্য আমরা সবাইকে দ্রুত ভ্যাকসিন দিতে চাই।

তিনি বলেন, আমাদের এখন ৯ কোটি ভ্যাকসিন স্টকে আছে। প্রায় ১৬ কোটি দিয়ে ফেলেছি। অর্থাৎ প্রায় ২৬ কোটি ভ্যাকসিন পেয়েছি। আরও পাঁচ কোটি আসবে। এই মুহূর্তে বাড়তি ভ্যাকসিনের প্রয়োজন নেই।

তিনি আরও বলেন, সিনোফার্মের সঙ্গে একটি চুক্তি আছে আমাদের বেসরকারি একটি কোম্পানির। আমরা সেই অনুযায়ী প্রস্তুত আছি। যখনই বলব ভ্যাকসিন লাগবে, তখনই তারা কার্যক্রম শুরু করতে পারবে। তবে এই মুহূর্তে প্রয়োজন নেই বলে সেদিকে জোর দিচ্ছি না।

সরকারিভাবে ভ্যাকসিন তৈরির কাজ চলছে বলেও মন্তব্য করেন স্বাস্থ্যমন্ত্রী। তিনি বলেন, ভ্যাকসিন দিতে এখন মানুষ কম আসছে। কিন্তু আমাদের ভ্যাকসিন দেওয়ার ব্যবস্থা ওয়ার্ড পর্যন্ত আছে। সেই হারে মানুষ পাওয়া যাচ্ছে না।

বিভিন্ন শ্রেণিপেশার মানুষদের ভ্যাকসিন প্রয়োগের আওতায় আনার কাজ চলছে জানিয়ে জাহিদ মালেক বলেন, আমাদের বিভিন্ন সমিতি যারা আছে, যেমন— বাস মালিক সমিতি, দোকান মালিক সমিতি, রেস্তোরাঁ মালিক সমিতি— তাদের লোকেরা অনেকেই ভ্যাকসিন নেয়নি। তাদের ভ্যাকসিন নিতে যেন বাধ্য করা হয়, এজন্য আমরা চিঠি দিয়েছি। ফেডারেশন অব কমার্স, চেম্বার ইন্ডাস্ট্রি— তাদেরও চিঠি দেবো।

উল্লেখ্য, দেশে কোভিড-১৯ সংক্রমণ নিয়ন্ত্রণে ভ্যাকসিন প্রয়োগ কার্যক্রমের উদ্বোধন করা হয় ২০২১ সালের ২৭ জানুয়ারি। ৭ ফেব্রুয়ারি থেকে জাতীয় পর্যায়ে ভ্যাকসিনেশন শুরুর পরে স্বাস্থ্য অধিদফতরের উদ্যোগে নানা কর্মসূচির মাধ্যমে ভ্যাকসিন প্রয়োগ চলে। এর মাঝে একাধিকবার গণটিকাসহ দেশের বিভিন্ন কমিউনিটি ক্লিনিকেও ভ্যাকসিন প্রয়োগ কর্মসূচি চালানো হয়। একইসঙ্গে ১২ থেকে ১৭ বছর বয়সী শিক্ষার্থীদেরও ভ্যাকসিন প্রয়োগ করা হয়। পরবর্তীতে ভ্যাকসিন বুস্টার ডোজ দেওয়াও শুরু করা হয় বাংলাদেশে।

সারাবাংলা/এসবি

করোনাভাইরাস জানুয়ারি ভ্যাকসিন

বিজ্ঞাপন

আরো

সম্পর্কিত খবর