জাতিসংঘ শান্তি বিনির্মাণ কমিশনের প্রথম নারী সভাপতি রাবাব ফাতিমা
২ ফেব্রুয়ারি ২০২২ ০৯:২০
ঢাকা: জাতিসংঘ শান্তি বিনির্মাণ কমিশনের (পিবিসি) সভাপতি নির্বাচিত হয়েছেন জাতিসংঘে নিযুক্ত বাংলাদেশের স্থায়ী প্রতিনিধি রাবাব ফাতিমা। এর মধ্যে দিয়ে কমিশনের প্রথম নারী সভাপতি নির্বাচিত হলেন তিনি।
নিউইয়র্কে জাতিসংঘ সদর দফতরে গত মঙ্গলবার পিবিসি’র চেয়ার ও ভাইস-চেয়ারদের নির্বাচিত করা হয়। জাতিসংঘ সদর দফতরে বাংলাদেশ স্থায়ী মিশনের এক বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়।
পিবিসি একটি আন্তঃসরকারি উপদেষ্টা সংস্থা। সংঘর্ষে ক্ষতিগ্রস্ত দেশগুলোতে শান্তি প্রতিষ্ঠায় কাজ করে এই কমিশন। পাশাপাশি দেশগুলোতে পুনরায় সংঘর্ষ রোধ করা এবং অন্তর্ভুক্তিমূলক ও টেকসই উন্নয়ন নিশ্চিত করাই পিবিসি’র লক্ষ্য।
যখন কোভিড-১৯ মহামারি শান্তি বিনির্মাণ ও উন্নয়ন কর্মকাণ্ডের ওপর মারাত্মক প্রভাব ফেলছে ঠিক তেমনই এক চ্যালেঞ্জিং সময়ে পিবিসি পরিচালনার জন্য সদস্যরাষ্ট্রসমূহ বাংলাদেশের প্রতি যে আস্থা ও বিশ্বাস রেখে বাংলাদেশকে সভাপতি হিসেবে নির্বাচিত করেছে, সেজন্য তাদের ধন্যবাদ জানান রাষ্ট্রদূত ফাতিমা।
তিনি বলেন, ‘উন্নয়ন ও শান্তি বিনির্মাণের ক্ষেত্রে কোভিড-১৯ মহামারি যে প্রভাব ফেলেছে তা দূর করতে আমরা বৈশ্বিক সংহতি এগিয়ে নিতে বিশেষ মনোযোগ দেব।’
সংঘাতপূর্ণ দেশ বা অঞ্চলে শান্তিবিনির্মাণ সক্ষমতাসমূহের উন্নয়নে শান্তিরক্ষীরা যে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখে চলেছে এবং শান্তিবিনির্মাণ কাজে যুক্ত অন্যান্য অংশীজনকে সংঘাতের মূল কারণগুলো মোকাবিলায় যেভাবে সহায়তা করছে তা স্মরণ করেন রাষ্ট্রদূত ফাতিমা। এ পরিপ্রেক্ষিতে শান্তিরক্ষা এবং শান্তি বিনির্মাণ কার্যক্রমের আন্ত:সম্পর্ককে শক্তিশালী করার ওপর জোর দেন তিনি।
রাষ্ট্রদূত ফাতিমা বলেন, শান্তিরক্ষীরা যে সকল দেশে নিয়োজিত সেই দেশসমূহের উন্নয়নে তারা যে অবদান রেখে চলেছে, শীর্ষ শান্তিরক্ষী প্রেরণকারী দেশ হিসেবে বাংলাদেশ সবসময়ই তা গুরুত্বের সঙ্গে মূল্যায়ন করে।
শান্তি বিনির্মাণে নারী ও যুবকদের পূর্ণ, সমান এবং অর্থবহ অংশগ্রহণ নিশ্চিত করতে ‘নারী শান্তি ও নিরাপত্তা’ (ডব্লিউপিএস) এবং ‘যুব শান্তি ও নিরাপত্তা (ওয়াইপিএস) এজেন্ডাকে অগ্রাধিকার দেওয়ার ক্ষেত্রে আগ্রহের কথা তুলে ধরেন রাষ্ট্রদূত ফাতিমা। একইসঙ্গে সাধারণ পরিষদ, নিরাপত্তা পরিষদ, ও ইকোসককে সংযুক্ত করা এবং জাতিসংঘের গোটা ব্যবস্থাপনার সমন্বয় ও তা সক্রিয় রাখার ক্ষেত্রে সমন্বয়কারী ও মতামত প্রধানকারী হিসেবে পিবিসি’র ভূমিকা আরও সুসংহত করার ওপর জোর দেন তিনি।
তিনি আরও বলেন, ‘জাতীয় পর্যায়ে সুসংহত ও কার্যকর শান্তিবিনির্মাণ প্রচেষ্টাকে এগিয়ে নিতে যে সকল সংস্থা, তহবিল, কর্মসূচি এবং জাতিসংঘের কান্ট্রি টিম কাজ করছে। তাদের কার্যক্রমকে আরও গতিশীল রাখতে আমরা অব্যাহতভাবে কাজ করে যাব।’
প্রসঙ্গত, ২০০৫ সালে পিবিসি প্রতিষ্ঠিত করা হয়। জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদ, নিরাপত্তা পরিষদ ও ইকোসক থেকে নির্বাচিত ৩১ জন সদস্য নিয়ে এই কমিশন গঠন করা হয়। জাতিসংঘ ব্যবস্থায় শীর্ষ আর্থিক অবদানকারী এবং শীর্ষ শান্তরক্ষী পাঠানো দেশগুলোও এর সদস্য। প্রতিষ্ঠানকাল থেকেই বাংলাদেশ পিবিসি’র সদস্য। এর আগে ২০১২ সালে কমিশনের সভাপতি হিসেবে দায়িত্ব পালন করে বাংলাদেশ।
সারাবাংলা/এনএস