আদালত প্রাঙ্গণে সাংবাদিকদের ওপর হামলা, ১৮ জন হাসপাতালে ভর্তি
৩ ফেব্রুয়ারি ২০২২ ০০:২৮
বরিশাল: জালিয়াতি মামলায় এক ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যানকে কারাগারে পাঠানোর সংবাদ ও ছবি সংগ্রহ করতে গেলে সাংবাদিকদের ওপর হামলা করেছেন চেয়ারম্যানের স্বজন ও আইনজীবী সহকারীরা। এসময় ভাঙচুর করা হয়েছে সাংবাদিকদের বেশ কয়েকটি মোটরসাইকেল ও টেলিভিশন চ্যানেলের ক্যামেরা। হামলায় আহত ১৮ সাংবাদিককে বরিশাল শের-ই বাংলা মেডিকেল কলেজ (শেবাচিম) হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
বুধবার (২ ফেব্রুয়ারি) বিকেলে বরিশাল আদালত প্রাঙ্গণ ও এর সামনের সড়কে হামলার এই ঘটনা ঘটে। কারাগারে যাওয়া ওই চেয়ারম্যানের নাম শহিদুল ইসলাম। তিনি বরিশালের বাকেরগঞ্জের দাড়িয়াল ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান।
হামলায় আহতরা হলেন— আঞ্চলিক দৈনিক আমাদের বরিশালের ফটো সাংবাদিক মো. নাঈম, আহসান আকিব; দৈনিক মতবাদ পত্রিকার এন আমিন রাসেল; দৈনিক বাংলার বনে পত্রিকার শাফিন আহমেদ রাতুল, জিয়াদ, জুয়েল; দৈনিক আজকের বরিশাল পত্রিকার সাইফুল ইসলাম, সুজন হাওলাদার, আবু কালাম আজাদ (সোহাগ), সাজ্জাদ হোসেন হৃদয়; বাংলাভিশন চ্যানেলের কামাল হোসেন; মোহনা টেলিভিশনের অপূর্ব বাড়ৈ; যমুনা টিভির শুভ হাওলাদার; মাই টিভির শফিক হোসেন, লিটন মোল্লা; দৈনিক প্রথম সকাল পত্রিকার বার্তা সম্পাদক সুমাইয়া জিসান ও দৈনিক সুন্দরবন পত্রিকার বার্তা সম্পাদক মিজান পলাশ।
আহতরা জানান, দাড়িয়াল ইউপি চেয়ারম্যান ও তার চার ভাই-বোনকে জালিয়াতির মামলায় কারাগারে পাঠানোর সংবাদের প্রয়োজনে ছবি তুলতে আদালত প্রাঙ্গণে যান ফটো সাংবাদিকরা। এরপর চেয়ারম্যানের ভাইয়ের ছেলে সুজন হাওলাদার, সাইফুল ও আইনজীবী সহকারী কামরুজ্জামান, বাপ্পিসহ বেশ কয়েকজন সাংবাদিকদের ‘ম্যানেজ’ করার চেষ্টা করেন। ম্যানেজ করতে না পেরে ইউপি চেয়ারম্যানের ছবি ধারণের সময় ফটো সাংবাদিকদের ওপর হামলা চালানো হয়।
প্রথম দফার হামলায় বেশ কয়েকজন ফটো সাংবাদিক আহত হন। পরে প্রতিবাদ করতে গেলে ফটো সাংবাদিকদের ওপর ফের হামলা চালানো হয়। একপর্যায়ে আদালতের সামনে রাস্তায় ফেলে পেটানো হয় সাংবাদিকদের। ভাঙচুর করা হয় সাংবাদিকদের ছয়-সাতটি মোটরসাইকেল।
এরপর অন্যান্য সাংবাদিকরা আদালত প্রাঙ্গণে গেলে তাদের ক্যামেরাও ছিনিয়ে নেওয়ার চেষ্টা করেন আইনজীবী সহকারীরা। পরে বরিশাল চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট কবির উদ্দিন প্রামানিক ও বরিশাল জেলা আইনজীবী সমিতির সাধারণ সম্পাদক রফিকুল ইসলমে খোকন ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনেন।
বরিশাল আইনজীবী সমিতির সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট রফিকুল ইসলাম খোকন বলেন, খবর শুনে আমি ঘটনাস্থলে গিয়ে সবাইকে শান্ত থাকার জন্য বলেছি। বরিশাল চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের বিজ্ঞ বিচারক কবীর উদ্দিন প্রামাণিক নিজে ঘটনাস্থলে আসেন। আমরা সাংবাদিক নেতারা আইনজীবী সহকারীদের নিয়ে বসে ঘটনার সুষ্ঠু সমাধান করব।
এর আগেও গত ১৫ জানুয়ারি একটি ধর্ষণ মামলার এক আসামির ছবি তুলতে গেলে ফটো সাংবাদিকদের হেনেস্তা করা হয় আদালত চত্বরে।
সারাবাংলা/টিআর