বিস্ফোরণের পর আগুন, দগ্ধ ২ বোন
৩ ফেব্রুয়ারি ২০২২ ১৪:৫১
চট্টগ্রাম ব্যুরো: চট্টগ্রাম নগরীর বাকলিয়ার একটি বাসায় বিস্ফোরণের পর সৃষ্ট আগুনে দুই বোন দগ্ধ হয়েছেন। এ সময় ওই বাসাসহ আশপাশের তিনটি বাসার দরজা-জানালা ও আসবাবপত্র বিধ্বস্ত হয়েছে। গ্যাস জমে ওই বাসায় বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটেছে বলে ধারণা করছে পুলিশ ও ফায়ার সার্ভিস।
বৃহস্পতিবার (০৩ ফেব্রুয়ারি) সকালে নগরীর বাকলিয়া থানার রাহাত্তারপুল চান্দাপুকুর পাড় এলাকায় বিসমিল্লাহ টাওয়ার নামে একটি ভবনের পঞ্চম তলায় এ ঘটনা ঘটেছে।
অগ্নিদগ্ধ দু’জন হলেন- সাবরিনা খালেদ (২৩) ও সামিয়া খালেদ (১৮)। তাদের বাড়ি বাঁশখালী উপজেলায়।
পুলিশ ও ফায়ার সার্ভিসের কর্মকর্তারা জানান, বিসমিল্লাহ টাওয়ারের দুই তলা পর্যন্ত একটি কিন্ডারগার্টেন স্কুল আছে। পাঁচতলা ভবনটির বাকিগুলোতে ভাড়া বাসা হিসেবে ব্যবহৃত হচ্ছে। সকাল সাড়ে ১০টার দিকে ভবনের পঞ্চম তলায় বিস্ফোরণের বিকট শব্দ শোনেন স্থানীয়রা। এ সময় কফিল উদ্দিন নামে স্থানীয় একজন জাতীয় জরুরি সেবা নম্বর ট্রিপল নাইনে ফোন করেন।
কফিল উদ্দিন সারাবাংলাকে বলেন, ‘আমার বাসাও চান্দাপুকুর পাড়ে। আমি রাস্তা দিয়ে হেঁটে যাচ্ছিলাম। হঠাৎ বিস্ফোরণের বিকট শব্দ শুনি। জানালা দিয়ে আগুনও দেখতে পাই। তখন আমি তাড়াতাড়ি ট্রিপল নাইনে ফোন করি। ফায়ার সার্ভিসের গাড়ি আসে। তবে এর আগেই ওই ভবনের লোকজন আগুন নিভিয়ে দু’জনকে বের করে আনে। তাদের চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।’
ঘটনাস্থলে যাওয়া ফায়ার সার্ভিসের চন্দপুরা স্টেশনের সিনিয়র অফিসার শহীদুল ইসলাম সারাবাংলাকে বলেন, ‘যে বাসায় বিস্ফোরণ হয়েছে, সেই বাসার দরজা-জানালা এবং আসবাবপত্র বিধ্বস্ত হয়েছে। বাসার ভেতর মালামাল এলোমেলো অবস্থায় আমরা দেখেছি। পাশে আরও দু’টি বাসার দরজা ভেঙে গেছে। সবগুলো বাসার জানালায় থাই গ্লাস লাগানো। আমাদের ধারণা, রাতে সম্ভবত গ্যাসের চুলার সুইচ বন্ধ করা হয়নি। শীতের কারণে থাই গ্লাসগুলো সবগুলোই বন্ধ ছিল। গ্যাস জমে গিয়ে বিস্ফোরণ হয়েছে। তবে বোমা কিংবা অন্য কোনো বিস্ফোরকের আলামত আমরা পাইনি।’
বাকলিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) রাশেদুল হক সারাবাংলাকে বলেন, ‘ভবনটিতে গ্যাসের কোনো লাইন ছিল না। সব বাসায় সিলিন্ডার থেকে গ্যাস ব্যবহার করা হচ্ছিল। রাতে সম্ভবত চুলা সচল ছিল। গ্যাস জমে গিয়েছিল। সকালে দিয়াশলাই জ্বালানোর সঙ্গে সঙ্গে বিস্ফোরণ হয়ে আগুন ধরে যায়। দুই বোন ওই বাসায় থাকতো, তাদের সঙ্গে আর কেউ থাকতো না। স্থানীয় লোকজন দগ্ধ অবস্থায় তাদের উদ্ধার করে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যায়।’
ওসি জানান, অগ্নিদগ্ধ সামিয়া চট্টগ্রাম নগরীতে সরকারি হাজী মুহাম্মদ মহসীন কলেজের উচ্চ মাধ্যমিক দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্রী। বড় বোন সাবরিনাও একই কলেজের অনার্সের ছাত্রী। দু’জনই চিকিৎসাধীন থাকায় তাদের বিষয়ে বিস্তারিত জানাতে পারেননি ওসি।
চমেক হাসপাতালের বার্ন অ্যান্ড প্লাস্টিক সার্জারি ইউনিটের প্রধান অধ্যাপক রফিক উদ্দিন আহমেদ সারাবাংলাকে বলেন, ‘উভয়ের শরীরের প্রায় ৫০ শতাংশ পুড়ে গেছে এবং শ্বাসনালী ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। তাদের অবস্থা আশঙ্কাজনক।’
সারাবাংলা/আরডি/পিটিএম