ঢাকা: নির্বাচন কমিশন আইন (ইসি) চলমান রাজনৈতিক সংকটকে আরও ঘণীভূত করবে বলে মন্তব্য করেছেন ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের আমির মুফতি সৈয়দ মুহাম্মদ রেজাউল করীম।
শুক্রবার (৪ ফেব্রুয়ারি) বিকেলে পুরানা পল্টনে আইএবি মিলনায়তনে জাতীয় শিক্ষক ফোরাম আয়োজিত শিক্ষক সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ মন্তব্য করেন।
মুফতি সৈয়দ মুহাম্মদ রেজাউল করীম বলেন, ‘সরকার রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে লোক দেখানো সংলাপ করেছে। রাজনৈতিক দলগুলোর মতামতকে মূল্যায়ন না করে নির্বাচন কমিশন (ইসি) আইন করেছে। এই আইন জনগণের কল্যাণ বয়ে আনবে না। বরং চলমান সংকটকে আরও ঘণীভূত করবে।’
তিনি বলেন, ‘২০২৩ সালে পাবলিক পরীক্ষায় ধর্মশিক্ষা বাতিলের প্রস্তাবের মাধ্যমে সরকার ইসলামী শিক্ষা ধ্বংসের চক্রান্ত করছে। ধর্মীয় ও নৈতিক শিক্ষার অভাবে মনুষ্যত্ববোধ হারিয়ে যাচ্ছে। মানুষ অনৈতিক কাজে জড়িয়ে পড়ছে। শিক্ষার সর্বস্তরে ধর্মীয় ও নৈতিক শিক্ষা না থাকায় তরুণ প্রজন্ম বেপরোয়া হয়ে উঠছে। আগামী প্রজন্মকে রক্ষা করতে হলে শিক্ষার সর্বস্তরে ধর্মীয় শিক্ষাকে বাধ্যতামূলক করতে হবে। এমপিওভুক্ত ও নন-এমপিওভুক্ত মাদরাসা ও স্কুলের মধ্যে বিরাজমান বৈষম্য দূরীকরণে শিক্ষাব্যবস্থা জাতীয়করণ করতে হবে।’
মুফতি সৈয়দ মুহাম্মদ রেজাউল করীম বলেন, ‘এসএসসির সিলেবাস থেকে ধর্মীয় শিক্ষা তুলে দেওয়া হয়েছে। ধর্মীয় শিক্ষা না থাকলে মানুষ নৈতিকতা হারিয়ে ধ্বংসের দিকে চলে যাবে। যার নমুনা দেখা যাচ্ছে। সামান্য কিছু হলেই আত্মহত্যার প্রবণতা শুরু হয়েছে। আর এগুলো হয়েছে ধর্মীয় শিক্ষা না থাকার কারণে। অনেক পরিবারে ছেলে-মেয়ে উচ্চ শিক্ষিত হলেও নৈতিক শিক্ষা না থাকায় বাবা-মায়ের খোঁজ-খবর নিচ্ছে না।’
‘করোনার অজুহাতে শিক্ষাব্যবস্থা ধ্বংস করার মিশন নিয়ে মাঠে নেমেছেন শিক্ষামন্ত্রী। করোনায় বাণিজ্যমেলা, একুশে বই মেলাসহ সব কিছু স্বাভাবিক। কিন্তু শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ’- বলেন মুফতি সৈয়দ মুহাম্মদ রেজাউল করীম।
ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের সিনিয়র নায়েবে আমির মোসাদ্দেক বিলস্নাহ আল-মাদানী বলেন, ‘সরকারের শতকরা ৯৭ ভাগ আমলা দুর্নীতিগ্রস্ত। দেশের সাধারণ মানুষ যারা প্রবাসী তারা বিদেশ থেকে টাকা পাঠায়। আর সরকারের মন্ত্রী-এমপিরা এবং দলীয় নেতারা বিদেশে টাকা পাচার করে দেশকে ক্ষতিগ্রস্ত করে।’
ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের মহাসচিব মাওলানা ইউনুছ আহমাদ বলেন, ‘গাছের গোড়া কেটে আগায় পানি দেওয়া যেমন ভণ্ডামো, তেমনিভাবে পাবলিক পরীক্ষা থেকে ইসলামী শিক্ষা তুলে দিয়ে নৈতিকতাবোধসম্পন্ন জাতি আশা ভণ্ডামো।
জাতীয় শিক্ষক ফোরামের সভাপতি অধ্যাপক মাহবুবুর রহমানের সভাপতিত্বে ও আহসানুল্লাহ খানের পরিচালনায় অনুষ্ঠানে অন্যদের মধ্যে বক্তব্য দেন ইসলাম আন্দোলন বাংলাদেশের সিনিয়র নায়েবে আমির মুফতি সৈয়দ মুহাম্মদ ফয়জুল করীম, ঢাকা দক্ষিণের সভাপতি মাওলানা ইমতিয়াজ আলম, জাতীয় শিক্ষক ফোরামের সহ-সভাপতি মাওলানা এ বি এম জাকারিয়া, ইশতিয়াক মো. আল আমিন, ইসলামী শিক্ষা উন্নয়ন বাংলদেশের মহাসচিব মো. আব্দুর রহমানসহ অন্যরা।