Saturday 07 September 2024
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

কোকেন চোরাচালান মামলার বিচার শুরু

স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট
৭ ফেব্রুয়ারি ২০২২ ১৫:২৭

চট্টগ্রাম ব্যুরো: চট্টগ্রাম বন্দরে অবৈধ কোকেনের চালান জব্দের ঘটনায় চোরাচালান আইনে দায়ের হওয়া মামলায় ১০ আসামির বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠনের মধ্য দিয়ে বিচার শুরু হয়েছে। আদালত ২ মার্চ প্রথম সাক্ষ্যগ্রহণের সময় নির্ধারণ করেছেন।

সোমবার (৭ ফেব্রুয়ারি) চট্টগ্রামের চতুর্থ অতিরিক্ত মহানগর দায়রা জজ শরীফুল ইসলাম ভূঁইয়া ১০ আসামির বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করে বিচার শুরুর আদেশ দেন।

চট্টগ্রাম মহানগর পিপি মো. ফখরুদ্দিন চৌধুরী সারাবাংলাকে জানিয়েছেন, মামলার ১০ আসামির মধ্যে পাঁচজন পলাতক আছেন। হাজতে থাকা তিনজন এবং জামিনে থাকা দু’জন অভিযোগ গঠনের শুনানিতে হাজির ছিলেন। তারা মামলা থেকে অব্যাহতির আবেদন করলেও আদালত নামঞ্জুর করেন। রাষ্ট্রপক্ষে পিপি পাঁচ আসামির বিরুদ্ধে অভিযোগ পড়ে শোনান। প্রত্যেকে নিজেকের নির্দোষ দাবি করেন। আদালত ১৯৭৪ সালের বিশেষ ক্ষমতা আইনের ২৫ (বি) ও (ডি) ধারায় আসামিদের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করেন।

এদিকে একই ঘটনায় দায়ের হওয়া মাদক আইনের মামলায় ওই আদালতে সাক্ষ্যগ্রহণ চলছে। সোমবার ২২তম আসামির সাক্ষ্যগ্রহণের পর আদালত ২ মার্চ পরবর্তী সাক্ষ্যগ্রহণের দিন ধার্য করেছেন।

পিপি ফখরুদ্দিন চৌধুরী জানিয়েছেন, গত সোমবার মাদক আইনের মামলায় বিচারিক হাকিম মো. ফরিদুল আলম সাক্ষ্য দিয়েছেন। তিনি চট্টগ্রাম মহানগর আদালতে হাকিম হিসেবে দায়িত্ব পালনের সময় এ মামলার তিন আসামির ১৬৪ ধারায় জবানবন্দি গ্রহণ করেছিলেন।

২০২০ সালের ২৯ জুন ১০ জনকে অভিযুক্ত করে বিশেষ ক্ষমতা আইনের ওই মামলায় অভিযোগপত্র জমা দিয়েছিল পুলিশ। অভিযুক্তরা হলেন- আমদানিকারক প্রতিষ্ঠান চট্টগ্রামের খানজাহান আলী লিমিটেডের চেয়ারম্যান নুর মোহাম্মদ ও তার ভাই মোস্তাক আহম্মদ, কসকো-বাংলাদেশ শিপিং লাইনসের ব্যবস্থাপক এ কে এম আজাদ, সিকিউরিটিজ প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তা মেহেদী আলম, সিঅ্যান্ডএফ প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তা সাইফুল ইসলাম, আবাসন ব্যবসায়ী মোস্তফা কামাল, প্রাইম হ্যাচারির ব্যবস্থাপক গোলাম মোস্তফা সোহেল, পোশাক রফতানিকারক প্রতিষ্ঠান মণ্ডল গ্রুপের বাণিজ্যিক নির্বাহী আতিকুর রহমান, লন্ডনপ্রবাসী চাঁদপুরের ফরিদগঞ্জের ফজলুর রহমান ও মৌলভীবাজারের বকুল মিয়া।

এদের মধ্যে গোলাম মোস্তফা সোহেল, মোস্তফা কামাল ও আতিকুর রহমান কারাগারে আছেন। জামিনে আছেন সাইফুল ইসলাম ও একেএম আজাদ। আসামি নুর মোহাম্মদ, ফজলুর রহমান, বকুল মিয়া, মোস্তাক আহমেদ ও মেহেদী আলম পলাতক আছেন।

২০১৫ সালের ৬ জুন চট্টগ্রাম নগর গোয়েন্দা পুলিশের তৎকালীন অতিরিক্ত উপ-কমিশনার এস এম তানভির আরাফাতের দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতে কোকেন সন্দেহে চট্টগ্রাম বন্দরে সূর্যমুখী তেলের চালান জব্দ করে শুল্ক গোয়েন্দা ও তদন্ত অধিফতর। এরপর ২৭ জুন তেলের চালানের ১০৭টি ড্রামের মধ্যে একটি ড্রামের নমুনায় কোকেন শনাক্ত হয়। বলিভিয়া থেকে আসা চালানটির প্রতিটি ড্রামে ১৮৫ কেজি করে সূর্যমুখী তেল ছিল। পরে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি), মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদফতরের রাসায়নিক পরীক্ষাগারসহ চারটি পরীক্ষাগারে তেলের চালানের দুটি ড্রামের নমুনায় কোকেন শনাক্ত হয়। চালানটি উরুগুয়ের মন্টিভিডিও থেকে জাহাজীকরণ করা হয়েছিল। পরে তা সিঙ্গাপুর হয়ে চট্টগ্রাম বন্দরে আসে।

কোকেন জব্দের ঘটনায় চট্টগ্রামের বন্দর থানায় ২০১৫ সালের ২৭ জুন মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইনে মামলা হয়। আসামি করা হয় চালানটির আমদানিকারক প্রতিষ্ঠান খানজাহান আলী লিমিটেডের চেয়ারম্যান নুর মোহাম্মদকে। র‌্যাব নুর মোহাম্মদসহ ১০ জনকে আসামি করে ২০১৭ সালের ৩ এপ্রিল আদালতে অভিযোগপত্র জমা দেয়। ২০১৯ সালের ২৯ এপ্রিল মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইনের এই মামলায় ১০ আসামির বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করা হয়। একই ঘটনায় চোরাচালানের অভিযোগে বিশেষ ক্ষমতা আইনের মামলায় অধিকতর তদন্ত শেষে ২০২০ সালের ২৯ জুন সম্পূরক অভিযোগপত্র আদালতে জমা পড়ে। এতেও আসামি করা হয় ১০ জনকে।

সারাবাংলা/আরডি/এনএস

কোকেন চোরাচালান চট্টগ্রাম


বিজ্ঞাপন
সর্বশেষ
সম্পর্কিত খবর