নতুন ৩ রুটে ‘ঢাকা নগর পরিবহন’ চালুর ঘোষণা ডিএসসিসি মেয়রের
৭ ফেব্রুয়ারি ২০২২ ২০:৫৯
ঢাকা: সবুজ গুচ্ছের (গ্রিন ক্লাস্টার) নতুন তিন রুটে ‘ঢাকা নগর পরিবহন’ চালুর ঘোষণা দিয়েছেন ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের (ডিএসসিসি) মেয়র ব্যারিস্টার শেখ ফজলে নূর তাপস।
সোমবার (৭ ফেব্রুয়ারি) বিকেলে ডিএসসিসি’র প্রধান কার্যালয় নগর ভবনের বুড়িগঙ্গা হলে বাস রুট রেশনালাইজেশন কমিটির ২১তম সভা শেষে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে এ ঘোষণা দেন তিনি।
বাস রুট রেশনালাইজেশন কমিটির সভাপতি ব্যারিস্টার শেখ ফজলে নূর তাপ বলেন, ‘গত বছরের ২৬ ডিসেম্বর রুট রেশনালাইজেশনের পরীক্ষামূলক যাত্রাপথ হিসেবে ঘাটারচর থেকে কাঁচপুর পর্যন্ত বাস চালু করি। প্রথম যাত্রাপথ আমাদের ২১ নম্বর যাত্রাপথ। এটা সবুজ গুচ্ছের অন্তর্ভুক্ত। সেই সবুজ গুচ্ছের অন্তর্ভুক্ত ২২, ২৩ ও ২৬ নম্বর যাত্রাপথ আমরা চিহ্নিত করেছি। এই তিন যাত্রাপথে আমরা কার্যক্রম পরিচালিত করব।’
নতুন তিন যাত্রাপথ কবে নাগাদ চালু হবে? সাংবাদিকদের এমন প্রশ্নের জবাবে ডিএসসিসি মেয়র তাপস বলেন, ‘এসব রুটে আরও ভালো সেবা দিতে কী ধরনের পরিকল্পনা গ্রহণ করতে হবে, কী কী অবকাঠামো উন্নয়ন করতে হবে, এজন্য পরামর্শকরা কাজ শুরু করেছেন। আগামী সভায় তারা নতুন যাত্রাপথের প্রতিবেদন ও সুপারিশমালা কমিটির কাছে জমা দেবেন। পরে আমরা ভবিষ্যত করণীয় নির্ধারণ করে দ্রুততার সঙ্গে একটি নির্দষ্ট সময়সীমার মধ্যে এই কাজটি করার লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করব।’
সভায় পুরো সবুজ গুচ্ছে নগর পরিবহনের লক্ষ্যমাত্রা জানিয়ে ডিএসসিসি মেয়র বলেন, ‘আপনারা লক্ষ্য করেছেন, আমরা এখন আর একটি একটি করে যাত্রাপথ ধরছি না। আমরা একসঙ্গে তিনটি যাত্রাপথ নিয়ে কাজ করছি। তার মানে আমাদের কার্যক্রম আরও বেগবান ও গতিশীল হচ্ছে। এই তিন যাত্রাপথ শেষ হলে পরবর্তী যাত্রাপথ আরও সহজ হয়ে যাবে। এই সবুজ গুচ্ছে আটটি যাত্রাপথ রয়েছে। একটা চালু আছে। বাকি তিনিটি চালু হলে অর্ধেক সম্পন্ন হবে। পরবর্তী সময়ে বাকি চারটা যাত্রাপথ শেষ করে সবুজ গুচ্ছ শেষ করা হবে। আমরা আশাবাদী। এই বছরেই এই কার্যক্রম আমরা শেষ করতে পারব।’
যাত্রী সেবায় ঢাকা নগর পরিবহনের মূল লক্ষ্য জানিয়ে মেয়র তাপস বলেন, ‘যেকোনো বিনিয়োগের সঙ্গে সঙ্গেই কিন্তু তার লাভ-লোকসান বোঝা যায় না। এখনই এটা নির্ধারণের সময়ও আসেনি। তবে আয় এবং খরচ মোটামুটি সমান। এই তিনটি যাত্রাপথ চালু হলে আরও লাভ হবে। আমাদের মূল বিষয় লাভ করা নয়। আমাদের মূল বিষয় হচ্ছে যাত্রী সেবা।’
চালু হওয়ার রুটে অন্য বাস চলাচল বন্ধের বিষয়ে তিনি বলেন, ‘অনুমোদনহীন বাস জব্দ করার জন্য অভিযান চালানো হচ্ছে। প্রয়োজনে আরও কঠোর হব।’
ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের (ডিএনসিসি) মেয়র মো. আতিকুল ইসলাম অনলাইন প্লাটফর্মে সংযুক্ত হয়ে সভায় অংশ নেন।
চার আন্তঃজেলা বাস টার্মিনাল নির্মাণে সময়বদ্ধ সূচির ওপর গুরুত্বারোপ করে ডিএনসিসি মেয়র মো. আতিকুল ইসলাম বলেন, ‘বাস রুট রেশনালাইজেশন কার্যক্রমের সফলতা ও ঢাকার ওপর বাসের চাপ কমা পরস্পর সম্পৃক্ত। সেজন্য আন্তঃজেলা বাস টার্মিনাল নির্মাণে আমাদের সুনির্দিষ্ট সময়সূচি নিয়ে কাজ করতে হবে। এজন্য ডিটিসিএ আগামী সভায় চার আন্তঃজেলা বাস টার্মিনাল নির্মাণে সুনির্দিষ্ট সময়সূচি ও কর্মপরিকল্পনা দাখিল করবে।’
সভার শুরুতেই ঢাকা দক্ষিণ সিটি ও উত্তর সিটির মেয়রদ্বয় ঢাকা নগর পরিবহন পরিচালনায় বিআরটিএ ও ট্রাফিক পুলিশের জোরদার ও দৃশ্যমান ভূমিকা না থাকায় উষ্মা প্রকাশ করেন। এ সময় দুই মেয়র ঢাকা নগর পরিবহন সেবা ফলপ্রসূ ও কার্যকর করার জন্য বিআরটিএ ও পুলিশকে আরও বেশি দৃশ্যমান পদক্ষেপ গ্রহণের তাগিদ দেন।
উল্লেখ্য, ২২ নম্বর যাত্রাপথ হিসেবে ঘাটারচর থেকে ভুলতা পর্যন্ত চলবে নগর পরিবহনের বাস। ২৩ নম্বর যাত্রাপথ ঘাটারচর থেকে মেঘনা ঘাট পর্যন্ত। ২৬ নম্বর যাত্রাপথ হচ্ছে ঘাটারচর থেকে নারায়ণগঞ্জ পর্যন্ত।
সভায় অন্যান্যের মধ্যে রাজউক চেয়ারম্যান এ বি এম আমিন উল্লাহ নুরী, বাংলাদেশ রোড ট্রান্সপোর্ট অথোরিটি (বিআরটিএ) চেয়ারম্যান নূর মোহাম্মদ মজুমদার, বাংলাদেশ রোড ট্রান্সপোর্ট করপোরেশনের চেয়ারম্যান মো. তাজুল ইসলাম, ঢাকা পরিবহন সমন্বয় কর্তৃপক্ষের সাবেক নির্বাহী পরিচালক খন্দকার রাকিবুর রহমান, ঢাকা পরিবহন সমন্বয় কর্তৃপক্ষের নির্বাহী পরিচালক নীলিমা আখতার, ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের প্রধান নিবার্হী কর্মকর্তা ফরিদ আহম্মদ, ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মো. সেলিম রেজা, ঢাকা মেট্টোপলিটন পুলিশের অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার মো. মুনিবুর রহমান, বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন মালিক সমিতির মহাসচিব খন্দকার এনায়েত উল্লাহ, বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন শ্রমিক ফেডারেশনের সাধারণ সম্পাদক ওসমান আলী, গণপরিবহন বিশেষজ্ঞ ড. এস এম সালেহ উদ্দিনসহ কমিটির সদস্যরা উপস্থিত ছিলেন।
সারাবাংলা/ইউজে/পিটিএম