রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসনে সহযোগিতা অব্যাহত রাখবে লুক্সেমবার্গ
৭ ফেব্রুয়ারি ২০২২ ২৩:৫৮
বাংলাদেশের সঙ্গে দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক আরও বিস্তৃত ও গভীর করার নতুন অন্বেষণ করতে আগ্রহের কথা জানিয়েছে লুক্সেমবার্গ। একইসঙ্গে বলপূর্বক বাস্তুচ্যুত রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীকে নিজ ভূমি মিয়ানমারে প্রত্যাবাসনের বিষয়ে বাংলাদেশকে সহযোগিতা অব্যাহত রাখার আশ্বাস পুনর্ব্যক্ত করেছে দেশটি।
সোমবার (৭ ফেব্রুয়ারি) প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে লুক্সেমবার্গের প্রধানমন্ত্রী জেভিয়ার বেটেলের সঙ্গে শুভেচ্ছা বিনিময়ের সময় বেটেল এমন আশ্বাস দিয়েছেন।
প্রধানমন্ত্রীর প্রেস উইং থেকে পাঠানো বিবৃতিতে বলা হয়, প্রায় আধা ঘণ্টা স্থায়ী কথোপকথনে দুই প্রধানমন্ত্রী দুই দেশের মধ্যেকার বিভিন্ন বিষয় নিয়ে আলোচনা করেন এবং বিদ্যমান দ্বিপাক্ষিক সহযোগিতা আরও বিস্তৃত ও গভীর করতে নতুন সুযোগ অন্বেষণ করতে সম্মত হন।
শেখ হাসিনা বাংলাদেশের চলমান আর্থসামাজিক উন্নয়নের অগ্রযাত্রায় লুক্সেমবার্গকে অবিচল সমর্থক ও বিশ্বস্ত অংশীদার হিসেবে উল্লেখ করেন। তিনি লুক্সেমবার্গের প্রধানমন্ত্রীকে বাংলাদেশে চলমান করোনা ভ্যাকসিন প্রয়োগ কার্যক্রমের অগ্রগতি ও কোভিড-১৯ মোকাবিলা সম্পর্কে অবহিত করেন।
গত বছর বাংলাদেশের স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী এবং জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবার্ষিকী উদযাপনের সময় লুক্সেমবার্গের গ্র্যান্ড ডিউকের পাঠানো একটি অভিনন্দন বার্তার কথাও স্মরণ করেন প্রধানমন্ত্রী। এসময় তিনি রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসনে লুক্সেমবার্গের সহায়তা চান।
এসময় জেভিয়ার বেটেল রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসনে লুক্সেমবার্গের সহায়তা অব্যাহত রাখার আশ্বাস পুনর্ব্যক্ত করেন। রয়্যাল ইনস্টিটিউট অব ব্রিটিশ আর্কিটেক্টস (আরআইবিএ) সাতক্ষীরার শ্যামনগরে অবস্থিত লুক্সেমবার্গের সাহায্যপুষ্ট ‘ফ্রেন্ডশিপ হাসপাতাল’ ভবনটিকে ২০২১ সালের সেরা স্থাপনার স্বীকৃতি দেওয়ায় জেভিয়ার বেটেল সন্তুষ্টি প্রকাশ করেন।
কথোপকথনে দুই প্রধানমন্ত্রী দ্বিপাক্ষিক বিমান পরিষেবা বিষয়ক চুক্তি যত দ্রুতসম্ভব সম্পাদন করতে সম্মত হন। লুক্সেমবার্গ অগ্রাধিকারভিত্তিতে সরাসরি কার্গো ফ্লাইট চালু করতে আগ্রহী বলেও জানান বেটেল।
দুই দেশের মধ্যে বাণিজ্য ও অর্থনৈতিক সহযোগিতা বাড়াতেও সদিচ্ছা প্রকাশ করেন দুই প্রধানমন্ত্রী। শেখ হাসিনা আর্থিক খাত ব্যবস্থাপনায় লুক্সেমবার্গের দক্ষতার প্রশংসা করেন এবং এর থেকে উপকৃত হওয়ার সুযোগ গ্রহণের আগ্রহের কথা জানান। প্রধানমন্ত্রী বেটেলও এসময় উল্লেখ করেন, তার দেশে সহস্রাধিক বাংলাদেশি বসবাস করছেন এবং অনেক শিক্ষার্থী পড়ালেকা করছেন।
জেভিয়ার বেটেলকে শেখ হাসিনা জানান, বাংলাদেশ আনুষ্ঠানিকভাবে ২০২৬ সালে জাতিসংঘের স্বল্পোন্নত দেশের তালিকা থেকে উত্তীর্ণ হবে। উত্তরণ-পরবর্তী সময়ে ইউরোপীয় ইউনিয়নের বাজারে জিএসপি প্লাসের মতো বাণিজ্য সুবিধার জন্য ইউরোপীয় ইউনিয়নের কাছে লুক্সেমবার্গ সরকারের সহযোগিতা চান। এসময় জেভিয়ার বেটেল বাংলাদেশের প্রতি আন্তরিক সহায়তা দিতে নীতিগতভাবে সম্মত হন।
দুই সরকারপ্রধান অভিন্ন উদ্বেগের বিষয় সংশ্লিষ্ট জলবায়ু পরিবর্তন নিয়েও আলোচনা করেন। শেখ হাসিনা অবকাঠামো, পানিশোধন, নগর উন্নয়ন এবং নবায়নযোগ্য জ্বালানি খাতে লুক্সেমবার্গের জলবায়ু-স্মার্ট বিনিয়োগকে স্বাগত জানান। জেভিয়ার বেটেল প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে তার সুবিধামতো সময়ে লুক্সেমবার্গ সফরের আমন্ত্রণ জানান। এ সময় শেখ হাসিনা চলমান আর্থসামাজিক অগ্রগতি দেখার জন্য জেভিয়ার বেটেলকেও বাংলাদেশ সফরের আমন্ত্রণ জানান।
শুরুতে দুই নেতা দুই দেশের মধ্যে কূটনৈতিক সম্পর্কের ৫০ বছর উপলক্ষে এবং সর্বত্র বন্ধুত্বপূর্ণ সহযোগিতা বজায় রাখার জন্য একে অন্যকে অভিনন্দন জানান। শেখ হাসিনা বাজেটে সহায়তা এবং ভ্যাকসিন দানের মাধ্যমে মহামারির প্রভাব কমাতে বাংলাদেশকে সহায়তা করার জন্য ‘টিম ইউরোপ’কে ধন্যবাদ জানান। বাসস।
সারাবাংলা/টিআর
জেভিয়ের বেটেল প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বাংলাদেশ-লুক্সেমবার্গ ভিডিও কনফারেন্স লুক্সেমবার্গের প্রধানমন্ত্রী