৫টি ইউপি’র বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন, ব্যাহত নাগরিক সেবা
১০ ফেব্রুয়ারি ২০২২ ০৯:২০
গাইবান্ধা: জেলার সাদুল্লাপুর উপজেলার পাঁচটি ইউনিয়ন পরিষদ (ইউপি) কার্যালয়ের বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন করা হয়েছে। বছরের পর বছর বিদ্যুৎ বিল না দেওয়ায় এসব বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন করা হয়েছে। এতে করে পাঁচ ইউপির কাছে ১ লাখ ৯১ হাজার ৩৬২ টাকার বিদ্যুৎ বিল পাওনা রয়েছে বলে জানিয়েছে রংপুর পল্লী বিদ্যুৎ সমিতি। এ পরিস্থিতিতে প্রয়োজনীয় সেবা না পাওয়ায় চরম দুর্ভোগে পড়েছেন সাধারণ মানুষ।
রংপুর পল্লী বিদ্যুৎ সমিতি-১ সাদুল্লাপুর জোনাল অফিসের ডেপুটি জেনারেল ম্যানেজার (ডিজিএম) মো. মোজাম্মেল হক গতকাল বুধবার (৯ ফেব্রুয়ারি) এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
অভিযোগ রয়েছে, দফায় দফায় বিল পরিশোধের জন্য চেয়ারম্যানদের চিঠি দিলেও তা আমলে না নেওয়ায় বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন করেছে পল্লী বিদ্যুৎ সমিতি। উপজেলার সংযোগ বিচ্ছিন্ন করা ইউনিয়নগুলো হলো— ১ নং রসুলপুর, ২ নং নলডাঙ্গা, ৩ নং দামোদরপুর, ৫ নং ফরিদপুর ও ৮ নং ভাতগ্রাম ইউনিয়ন পরিষদ।
এ বিষয়ে মোজাম্মেল হক বলেন, ‘রসুলপুর ইউনিয়নে ২৪ মাসের বিদ্যুৎ বিল বকেয়া ৩৭ হাজার ৯৬৬ টাকা, নলডাঙ্গা ইউনিয়নে ৩২ মাসের বকেয়া ৫৮ হাজার ৬৬৬ টাকা, দামোদরপুর ইউনিয়নে ৭ মাসের ২৮ হাজার ৩১৮ টাকা, ফরিদপুর ইউনিয়নে ৩০ মাসের ৪৭ হাজার ২১ টাকা ও ভাতগ্রাম ইউনিয়নে ২০ মাসের ৬১ হাজার ৬৮৩ টাকা বিদ্যুৎ বিল বকেয়া পড়েছে। বকেয়া পরিশোধের জন্য একাধিকবার নোটিশ দেওয়া সত্ত্বেও বিল পরিশোধ না করায় বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন করা হয়েছে।’
তিনি আরও বলেন, ‘গত বছরের মে মাসে ফরিদপুর ইউনিয়ন এবং বাকি চার ইউনিয়ন পরিষদ কার্যালয়ের সংযোগ বিচ্ছিন্ন করা হয়েছে গেল জানুয়ারি মাসের শেষ সপ্তাহে। এসব বকেয়া বিল পরিশোধের জন্য দ্রুতই সংশ্লিষ্ট ইউনিয়ন পরিষদে চূড়ান্ত (লাল নোটিশ) চিঠি দেওয়া হবে। তারপরেও বিল পরিশোধের ব্যতয় ঘটলে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে অবগত করে পরবর্তীতে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’
এদিকে, ইউনিয়ন পরিষদগুলোর সংযোগ বিচ্ছিন্ন করায় সেখানে স্থবির হয়ে পড়েছে নাগরিক সেবা। এতে সেবা বঞ্চিত মানুষ চরম অসন্তুষ্ট। কেউ কেউ দুই সপ্তাহ ধরে ঘুরেও সেবা না পেয়ে ফিরে যাচ্ছেন বলে অভিযোগ করেছেন। বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্নের জন্য সংশ্লিষ্ট ইউনিয়নের চেয়ারম্যানদের উদাসীনতা ও অবহেলাকেই দায়ী করছেন অনেকেই। যদিও গত ৩১ জানুয়ারি অনুষ্ঠিত নির্বাচনে পাঁচ ইউনিয়ন পরিষদেই চেয়ারম্যান নির্বাচিত হয়েছেন নতুন মুখ। তাহলে বকেয়া বিদ্যুৎ বিলের দায় কে নেবেন- এমন প্রশ্নও দেখা দিয়েছে জনমনে?
এসব ইউনিয়ন পরিষদের তথ্য সেবা কেন্দ্রের উদ্যোক্তারা বলছেন, বিদ্যুৎ সংযোগ না থাকায় কোনো কাজ করা সম্ভব হচ্ছে না। তাছাড়া পরিষদের আইপিএস ও সোলার যা আছে তা ল্যাপটপ বা কম্পিউটার ব্যবহারের উপযোগী না। ফলে প্রতিনিয়তই পরিষদে এসে ফিরে যাচ্ছেন সেবা প্রত্যাশীরা।
তবে এ বিষয়ে জানতে চেয়ারম্যানদের ফোন দিলেও তারা সদুত্তর না দিয়ে বিষয়টি এড়িয়ে যান।
এ বিষয়ে স্থানীয় সরকার গাইবান্ধার উপ-পরিচালক মোছা. রোখছানা বেগম বলেন, ‘সংযোগ বিচ্ছিন্ন ইউনিয়ন পরিষদের বকেয়া বিদ্যুৎ বিল পরিশোধের জন্য সাদুল্লাপুরের ইউএনওকে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। দ্রুতই পরিষদ কার্যালয়ে বিদ্যুৎ সংযোগ স্বাভাবিক হবে আশা করছি।’
সারাবাংলা/এনএস
৫ ইউনিয়ন পরিষদ গাইবান্ধা বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন সাদুল্লাপুর