১ মাসে বিএসএমএমইউয়ের করোনা রোগীর ৮২% ওমিক্রনে আক্রান্ত
১০ ফেব্রুয়ারি ২০২২ ২৩:০৭
ঢাকা: নভেল করোনাভাইরাসে (কোভিড-১৯) সংক্রমিত হয়ে ৯ জানুয়ারি থেকে ৯ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত সময়ে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ে (বিএসএমএমইউ) চিকিৎসা নেওয়া ৮২ শতাংশ রোগীই ওমিক্রন ভ্যারিয়েন্টে আক্রান্ত। আর বাকি ১৮ শতাংশ রোগী ডেল্টা ভ্যারিয়েন্টে আক্রান্ত।
বিএসএমএমইউয়ের গবেষণায় এই তথ্য উঠে এসেছে বলে জানিয়েছে প্রতিষ্ঠানটি। বৃহস্পতিবার (১০ ফেব্রুয়ারি) দুপুরে বিএসএমএমইউয়ের ডা. মিল্টন হলে আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে বিশ্ববিদ্যালয়টির জিনোম সিকোয়েন্সিং রিসার্চ প্রজেক্টের প্রধান পৃষ্ঠপোষক (সুপারভাইজার) উপাচার্য অধ্যাপক ডা. মো. শারফুদ্দিন আহমেদ এ তথ্য জানান।
ডা. শারফুদ্দিন বলেন, গত ৯ জানুয়ারি থেকে এ মাসের ৯ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত মোট ভর্তি রোগী এবং বহির্বিভাগে আসা রোগীদের ৮২ শতাংশকে ওমিক্রন ভ্যারিয়েন্টে আক্রান্ত ও ১৮ শতাংশকে ডেল্টা ভ্যারিয়েন্ট আক্রান্ত হিসেবে পেয়েছি। এই সময়ে ওমিক্রনের তিনটি উপধরন (সাব-ভ্যারিয়েন্ট) দেখা গেছে। সেগুলো হলো— BA.1, BA.1.1, BA.2। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার ভাষ্য অনুযায়ী এদের মধ্যে BA.2 বেশি সংক্রামক।
বিএসএমএমইউ উপাচার্য আরও জানান, ডেল্টা ভ্যারিয়েন্টের চেয়ে ওমিক্রন ভ্যারিয়েন্টে অনেক বেশি সংক্রামক। ওমিক্রন ভ্যারিয়েন্টের জিনোমে ডেল্টা ভ্যারিয়েন্টের চেয়ে বেশি মিউটেশন পাওয়া গেছে, যার বেশিরভাগ ভাইরাসটির স্পাইক প্রোটিনে হয়েছে। এই স্পাইক প্রোটিনের ওপর ভিত্তি করে বেশিরভাগ ভ্যাকসিন তৈরি করা হয়ে থাকে। আর স্পাইক প্রোটিনের গঠনগত বদলের জন্যই প্রচলিত ভ্যাকসিনেশনের পরেও ওমিক্রন ভ্যারিয়েন্টে আক্রান্ত হওয়ার সম্ভাবনা থেকে যায়।
বিএসএমএমইউ জেনেটিক্স অ্যান্ড মলিকুলার বায়োলজি বিভাগের অধ্যাপক ও অ্যানাটমি বিভাগের চেয়ারম্যান অধ্যাপক ডা. লায়লা আনজুমান বানু বলেন, কোভিড-১৯-এর জিনোম সিকোয়েন্সিং গবেষণার উদ্দেশ্য সার্স-কোভ-২-এর জিনোমের গঠন উন্মোচন ও পরিবর্তনের ধরণ এবং বৈশ্বিক কোভিড-১৮ ভাইরাসের জিনোমের সঙ্গে এর আন্তঃসম্পর্ক বের করা, ভাইরাসের বিবর্তনীয় সম্পর্ক, রোগের উপসর্গ, রোগের প্রখরতা, তুলনামূলক হাসপাতাল অবস্থানের মেয়াদকাল এবং বাংলাদেশি কোভিড-১৯ জেনোম ডাটাবেজ তৈরি করা।
তিনি বলেন, আন্তর্জাতিক সিকোয়েন্সিং ডাটাবেজ জিন ব্যাংকে বিএমএমইউয়ের ৯৩৭টি ভাইরাল জিনোম জমা দেওয়া হয়েছে। জিনোমিক ডাটাবেজে বিএসএমএমইউয়ের এই গবেষণা ভ্যাকসিন তৈরির ক্ষেত্রে বৈজ্ঞানিক অবদানের একটি মাইলফলক হিসেবে কাজ করবে।
এদিন জানানো হয়, বিএসএমএমইউয়ের গবেষণায় ৯ মাস থেকে শুরু করে ৯০ বছরের বয়স পর্যন্ত রোগী অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছিল। এর মধ্যে বর্তমানে ৩০ থেকে ৫৯ বছর বয়সের রোগীদের সংখ্যা বেশি। শিশুদের মধ্যেও কোভিড সংক্রমণ পাওয়া গেছে। পুরুষ ও নারীদের আক্রান্তের হার প্রায় সম সংখ্যক— ৪৯ শতাংশ পুরুষ ও ৫১ শতাংশ নারী। কোভিড আক্রান্ত রোগীদের মধ্যে যাদের কো-মরবিডিটি রয়েছে, যেমন— ক্যান্সার, উচ্চ রক্তচাপ, শ্বাস রোগ, হৃদরোগ, ডায়াবেটিস— তাদের রোগের প্রকটতা বেশি।
এর আগে, গত ১৮ জানুয়ারি এক অনুষ্ঠানে প্রতিষ্ঠানটি জানিয়েছিল, হাসপাতালে যারা গেছেন তাদের ২০ শতাংশ ওমিক্রন ভ্যারিয়েন্ট এবং ৮০ শতাংশ ডেল্টা ভ্যারিয়েন্টে আক্রান্ত।
সারাবাংলা/এসবি/টিআর
ওমিক্রন ভ্যারিয়েন্ট জিনোম সিকোয়েন্সিং ডেল্টা ভ্যারিয়েন্ট বিএসএমএমইউ