Saturday 28 September 2024
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

এ বছরের ৭৪% নমুনাতেই ওমিক্রন, ছড়িয়েছে ৭ বিভাগে

সৈকত ভৌমিক, সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট
১১ ফেব্রুয়ারি ২০২২ ১৪:২৩

ঢাকা: গত বছরের নভেম্বরে সংগ্রহ করা নমুনাতেই করোনাভাইরাসের (কোভিড-১৯) ওমিক্রন ভ্যারিয়েন্ট শনাক্ত হয়েছিল দেশে। তারপরও ডিসেম্বর পর্যন্ত যেসব নমুনার জিনোম সিকোয়েন্সিং করা হয়েছিল, তাতে ডেল্টা ভ্যারিয়েন্টের উপস্থিতিই ছিল বেশি। নতুন বছরে এসে সেই চিত্র বদলে গেছে। এ বছরে এখন পর্যন্ত ২৬৭টি নমুনার জিনোম সিকোয়েন্সিংয়ের ফলপ্রকাশ করা হয়েছে। এসব নমুনার প্রায় তিন-চতুর্থাংশেই মিলেছে ওমিক্রন ভ্যারিয়েন্টের উপস্থিতি। বাকি নমুনাগুলোর প্রায় সবই ডেল্টা ভ্যারিয়েন্ট।

বিজ্ঞাপন

বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা ও জার্মান সরকারের সঙ্গে অংশীদারিত্বের ভিত্তিতে পরিচালিত গ্লোবাল ইনিশিয়েটিভ অন শেয়ারিং অল ইনফ্লুয়েঞ্জা ডাটা (জিআইএসএইড) ওয়েবসাইটে জমা হওয়া তথ্য বিশ্লেষণ করে এ চিত্র উঠে এসেছে। অন্যদিকে, রোগতত্ত্ব, রোগনিয়ন্ত্রণ ও গবেষণা প্রতিষ্ঠান (আইইডিসিআর) জানাচ্ছে, তাদের অধীনে জিনোম সিকোয়েন্সিং করা নমুনায় ওমিক্রন ভ্যারিয়েন্টের উপস্থিতি পাওয়া গেছে দেশের সাত বিভাগেই।

বিজ্ঞাপন

জিআইএসএইডের তথ্য বলছে, ১ জানুয়ারি থেকে ৩০ জানুয়ারি পর্যন্ত সিকোয়েন্সিংয়ে জন্য সংগ্রহ করা ২৬৭টি নমুনার মধ্যে ১৯৭টিতেই ওমিক্রন ভ্যারিয়েন্ট শনাক্ত হয়েছে। সে হিসাবে ওমিক্রনের উপস্থিতি মোট নমুনার ৭৩ দশমিক ৭৮ শতাংশেই। বাকি নমুনার মধ্যে ৫৯টি নমুনার সিকোয়েন্সিংয়ে শনাক্ত হয়েছে ডেল্টা ভ্যারিয়েন্ট, যা মোট নমুনার ২২ দশমিক ০৯ শতাংশ।

অন্যদিকে, ওমিক্রন ভ্যারিয়েন্ট শনাক্ত হয়েছে যেসব নমুনায়, এর মধ্যে একাধিক নমুনাতেই রয়েছে এই ভ্যারিয়েন্টের ভিন্ন রূপ বা উপধরণ হিসেবে পরিচিত বিএ.২ ও বিএ.১.১ লিনেজ।

সাত বিভাগেই ওমিক্রন

এদিকে, গত এক মাসে সারাদেশ থেকে আসা ২৩৮টি নমুনার মধ্যে ১৪৮টি নমুনার জিনোম সিকোয়েন্সিং করে রোগতত্ত্ব, রোগনিয়ন্ত্রণ ও গবেষণা প্রতিষ্ঠান (আইইডিসিআর) জানাচ্ছে, ১১৮টি অর্থাৎ ৮০ শতাংশ নমুনাতেই রয়েছে ওমিক্রন ভ্যারিয়েন্টের উপস্থিতি। বাকি ৩০টি তথা ২০ শতাংশ নমুনায় পাওয়া গেছে ডেল্টা ভ্যারিয়েন্ট।

আইইডিসিআরের ওয়েবসাইটে প্রকাশিত এ সংক্রান্ত প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, দেশের আট বিভাগের মধ্যে সাতটিতেই ছড়িয়েছে ওমিক্রন ভ্যারিয়েন্ট। প্রতিষ্ঠানটি আরও জানিয়েছে, ওমিক্রনের উপধরন বিএ.১ শনাক্ত হয়েছে ৫৮ জনের শরীরে (৩৯ শতাংশ) এবং বিএ.২ শনাক্ত হয়েছে ৬০ জনের শরীরে (৪১ শতাংশ)।

প্রতিবেদনে আরও জানানো হয়, ঢাকা বিভাগের ৭০টি নমুনার জিনোম সিকোয়েন্সে ৬৫টিতে ওমিক্রন এবং পাঁচটিতে ডেল্টা ভ্যারিয়েন্ট শনাক্ত হয়েছে। চট্টগ্রাম বিভাগের ১৮টি নমুনার জিনোম সিকোয়েন্সে ১৪টিতে ওমিক্রন ও বাকি চারটিতে ডেল্টা ভ্যারিয়েন্ট শনাক্ত হয়েছে। রাজশাহী বিভাগের ২২টির ১৫টিতে ওমিক্রন ও ৭টিতে ডেল্টা ভ্যারিয়েন্ট শনাক্ত হয়েছে।

এছাড়া, খুলনা বিভাগের ১৪টি নমুনা ১২টিতে ওমিক্রন ও দুইটিতে ডেল্টা ভ্যারিয়েন্ট, বরিশাল বিভাগের ৯ নমুনার ছয়টিতে ওমিক্রন ও তিনটিতে ডেল্টা, সিলেট বিভাগের ছয় নমুনার তিনটিতে ওমিক্রন ও তিনটিতে ডেল্টা এবং রংপুর বিভাগের সাত নমুনার তিনটিতে ওমিক্রন ও চারটিতে ডেল্টা ভ্যারিয়েন্ট শনাক্ত হয়েছে। কেবল ময়মনসিংহ বিভাগে গত এক মাসে কোনো ওমিক্রন ভ্যারিয়েন্ট শনাক্ত হয়নি। এই বিভাগের দুইটি নমুনার জিনোম সিকোয়েন্সিংয়ে দুইটিতেই ডেল্টা ভ্যারিয়েন্ট শনাক্ত হয়েছে বলে জানানো হয় প্রতিবেদনে।

জিআইএসএইডসহ বিশ্বের অন্যান্য ডাটাবেজ সাইটের তথ্য বিশ্লেষণ করে দেখা যায়, দেশে এখন পর্যন্ত মোট ২৮৬টি নমুনায় ওমিক্রন ভ্যারিয়েন্ট শনাক্ত হয়েছে। এর মধ্যে প্রথম ওমিক্রন ভ্যারিয়েন্টটি শনাক্ত হয় গত ১৪ নভেম্বর সংগ্রহ করা একটি নমুনায়। এরপর ডিসেম্বর মাসের শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত বিভিন্ন সময়ে সংগ্রহ করা নমুনাতেও ছিল ওমিক্রনের উপস্থিতি।

এ নিয়ে দেশের বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান থেকে এখন পর্যন্ত জিআইএসএইডে করোনাভাইরাসের চার হাজার ৫৮০টি নমুনার জিনোম সিকোয়েন্সিংয়ের ফল জমা দেওয়া হয়েছে।

অন্যদিকে বিএসএমএমইউয়ের অ্যানাটমি বিভাগে জানুয়ারি মাসে সংগ্রহ করা ১৫৫টি জিনোম সিকোয়েন্সিংয়ে ৩৭টি কোভিড-১৯ নমুনায় ডেল্টা ভ্যারিয়েন্টের উপস্থিতি শনাক্ত হয়েছে। আর ৮৯টি নমুনার জিনোম সিকোয়েন্সিংয়ে ওমিক্রনসহ এর নানা উপধরনও পাওয়া গেছে। অর্থাৎ এসব নমুনার ৫৭ দশমিক ৪২ শতাংশে ওমিক্রন পাওয়া গেছে। তবে ৪২টি নমুনার সিকোয়েন্সিং ফলাফল নির্ণয় করা সম্ভব হয়নি বলে জানিয়েছে বিএসএমএমইউ।

রোগতত্ত্ব, রোগ নিয়ন্ত্রণ ও গবেষণা প্রতিষ্ঠানের (আইইডিসিআর) উপদেষ্টা ডা. মুশতাক হোসেন সারাবাংলাকে বলেন, দেশে ভ্যারিয়েন্ট যাই আসুক না কেন, ভাইরাস থেকে নিজেকে নিরাপদে রাখতে হলে সবাইকে মাস্ক পরতে হবে। একইসঙ্গে হাত ধোয়ার অভ্যাস চালু রাখতে হবে। মাস্ক না পরে যদি ভ্যারিয়েন্ট নিয়ে কেউ দুঃশ্চিন্তা করে, তবে লাভ কী!

মহামারি বিশেষজ্ঞ ডা. মুশতাক বলেন, কেউ যদি ভাইরাসকে নিজের কাছে প্রবেশের সুযোগ না দেয়, তাহলে ভাইরাসের পক্ষে কাউকে আক্রান্ত করা সম্ভব না। সে কারণেই স্বাস্থ্যবিধি মানতে হবে, মাস্ক পরতে হবে। একইসঙ্গে ভ্যাকসিন নিতে হবে। ভ্যাকসিন একদিকে যেমন সংক্রমণের ঝুঁকি কমাবে, অন্যদিকে সংক্রমিতদের হাসপাতালে যাওয়ার সংখ্যাও কমাবে।

সারাবাংলা/এসবি/টিআর

আইইডিসিআর ওমিক্রন ভ্যারিয়েন্ট করোনাভাইরাস জিআইএসএইড জিনোম সিকোয়েন্সিং

বিজ্ঞাপন
সর্বশেষ

উর্মিলার সংসার ভেঙে যাওয়ার কারণ
২৮ সেপ্টেম্বর ২০২৪ ২১:০২

নতুন পরিচয়ে কুসুম সিকদার
২৮ সেপ্টেম্বর ২০২৪ ২০:৫৭

সম্পর্কিত খবর