সংক্রমণ ছাড়াল ১৯ লাখ, শেষ ১১ দিনে ১ লাখ
১২ ফেব্রুয়ারি ২০২২ ২১:৫৭
ঢাকা: দেশে করোনাভাইরাসের (কোভিড-১৯) সংক্রমণ শনাক্তের সংখ্যা ছাড়িয়ে গেছে ১৯ লাখ। এর মধ্যে গত ১১ দিনেই প্রায় এক লাখ মানুষের মধ্যে কোভিড-১৯ সংক্রমণ শনাক্ত হয়েছে। এর আগে, ১ ফেব্রুয়ারি দেশে কোভিড-১৯ সংক্রমণের সংখ্যা ১৭ লাখ ছাড়িয়ে ১৮ লাখে পৌঁছায়।
শনিবার (১ ফেব্রুয়ারি) স্বাস্থ্য অধিদফতরের কোভিড-১৯ সংক্রান্ত নিয়মিত বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, দেশে সবশেষ ২৪ ঘণ্টায় দেশে করোনা সংক্রমণ শনাক্ত হয়েছে পাঁচ হাজার ২৩ জনের শরীরে। একই সময়ে করোনায় আক্রান্ত হয়ে মারা গেছেন ২০ জন। এ নিয়ে দেশে করোনা সংক্রমণের মোট সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ১৯ লাখ চার হাজার ৮২৬ জনে। অন্যদিকে দেশে করোনা সংক্রমণ নিয়ে মোট মারা গেছেন ২৮ হাজার ৭৯১ জন।
দেশে জানুয়ারি মাসের শুরু থেকেই করোনা সংক্রমণ বাড়তে থাকে। সব মিলিয়ে জানুয়ারি মাসে দেশে দুই লাখ ১৩ হাজার ২৯৪ জনের মধ্যে কোভিড-১৯ সংক্রমণ শনাক্ত হয়। ১২ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত দেশে এক লাখ পাঁচ হাজার ৯৯৩ জনের মাঝে কোভিড-১৯ সংক্রমণ শনাক্ত হয়েছে।
যেভাবে এক লাখ থেকে ১৯ লাখ সংক্রমণ
দেশে ২০২০ সালের ৮ মার্চ প্রথমবারের মতো তিন জনের মাঝে কোভিড-১৯ সংক্রমণ শনাক্ত হয়। এর ১০২ দিন পরে দেশে কোভিড-১৯ সংক্রমণ ছাড়ায় এক লাখ। ২০২০ সালের ১৮ জুন দেশে কোভিড-১৯ সংক্রমিত হয় এক লাখ দুই হাজার ২৯২ জনের মাঝে। ১৮ জুলাই দেশে কোভিড-১৯ সংক্রমণ ছাড়ায় দুই লাখ। দেশে এই এক লাখ সংক্রমণ শনাক্ত হয় ৩০ দিনে।
এর ৩৯ দিন পর ২৬ আগস্ট দেশে কোভিড-১৯ সংক্রমণ ছাড়ায় তিন লাখ। ২৬ অক্টোবর দেশে কোভিড-১৯ সংক্রমণ ছাড়ায় চার লাখ। দেশে এই এক লাখ সংক্রমণ শনাক্ত হয় ৬১ দিনে। ৫৫ দিন পর ২০ ডিসেম্বর দেশে কোভিড-১৯ সংক্রমণ ছাড়ায় পাঁচ লাখ। আরও ৯৯ দিন পর ২০২১ সালের ২৯ মার্চ দেশে কোভিড-১৯ সংক্রমণ ছাড়ায় ছয় লাখ। এরপর অবশ্য মাত্র ১৬ দিনে সংক্রমণ ছাড়ায় সাত লাখ, দিনটি ছিল ১৪ এপ্রিল।
৩১ মে দেশে কোভিড-১৯ সংক্রমণ ছাড়ায় আট লাখ। দেশে এই এক লাখ সংক্রমণ শনাক্ত হয় ৪৭ দিনে। ২৯ জুন দেশে কোভিড-১৯ সংক্রমণ ছাড়ায় ৯ লাখ। দেশে এই এক লাখ সংক্রমণ শনাক্ত হয় ২৯ দিনে। এর ১০ দিন পর ৯ জুলাই দেশে কোভিড-১৯ সংক্রমণ ছাড়ায় ১০ লাখ। ৯ দিন পর ১৮ জুলাই দেশে কোভিড-১৯ সংক্রমণ ছাড়ায় ১১ লাখ। আরও ১০ দিন পর ২৮ জুলাই দেশে কোভিড-১৯ সংক্রমণ ছাড়ায় ১২ লাখ। এরপর সাত দিনেই ১৩ লাখ সংক্রমণ ছাড়ায় গত ৪ আগস্ট।
১৩ আগস্ট দেশে কোভিড-১৯ সংক্রমণ ছাড়ায় ১৪ লাখ। দেশে এই এক লাখ সংক্রমণ শনাক্ত হয় ৯ দিনে। ৩১ আগস্ট দেশে কোভিড-১৯ সংক্রমণ ছাড়ায় ১৫ লাখ। দেশে এই এক লাখ সংক্রমণ শনাক্ত হয় ১৮ দিনে।
২০২২ সালের ১২ জানুয়ারি দেশে কোভিড-১৯ সংক্রমণ ছাড়ায় ১৬ লাখ। দেশে এই এক লাখ সংক্রমণ শনাক্ত হয় ১৩৪ দিনে। আর গত ২৫ জানুয়ারি দেশে কোভিড-১৯ সংক্রমণ ছাড়ায় ১৭ লাখ। দেশে এই এক লাখ সংক্রমণ শনাক্ত হয় মাত্র ১৩ দিনে।
দেশে কোভিড-১৯ সংক্রমণ ১৮ লাখ ছাড়ায় এবারে ১ ফেব্রুয়ারি। এরপরে ১১ দিন সময়ে দেশে আরও এক লাখ নমুনায় কোভিড-১৯ সংক্রমণ শনাক্ত হয়েছে।
কর্তৃপক্ষ যা বলছে
রোগতত্ত্ব, রোগ নিয়ন্ত্রণ ও গবেষণা প্রতিষ্ঠানের (আইইডিসিআর) প্রধান বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা অধ্যাপক ডা. এ এস এম আলমগীর সারাবাংলাকে বলেন, ‘স্বাস্থ্যবিধি না মানলে সংক্রমণ বাড়বেই। তাই সংক্রমণ নিয়ন্ত্রণে সবাইকে মাস্ক পরে স্বাস্থ্যবিধি মানতে হবে। রাজধানীতে মানুষজনের মাঝে মাস্ক পরাটা একটু বেড়েছে। আর তাই এখানে সংক্রমণের সংখ্যা কমছে। কিন্তু রাজধানীর বাইরে সংক্রমণ বাড়ছে।’
তিনি বলেন, ‘দেশে ভ্যারিয়েন্ট যাই আসুক না কেন, ভাইরাস থেকে নিজেকে নিরাপদে রাখতে হলে সবাইকে মাস্ক পরতে হবে। একইসঙ্গে হাত ধোয়ার অভ্যাস চালু রাখতে হবে। মাস্ক না পরে যদি ভ্যারিয়েন্ট নিয়ে কেউ দুশ্চিন্তা করে, তবে লাভ কী! কেউ যদি ভাইরাসকে নিজের কাছে প্রবেশের সুযোগ না দেয়, তাহলে ভাইরাসের পক্ষে কাউকে আক্রান্ত করা সম্ভব না। সে কারণেই স্বাস্থ্যবিধি মানতে হবে, মাস্ক পরতে হবে। একইসঙ্গে ভ্যাকসিন নিতে হবে। ভ্যাকসিন একদিকে যেমন সংক্রমণের ঝুঁকি কমাবে, অন্যদিকে সংক্রমিতদের হাসপাতালে যাওয়ার সংখ্যাও কমাবে।’
সারাবাংলা/এসবি/একে