Friday 22 Nov 2024
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

শাহজালাল বিমানবন্দরের তৃতীয় টার্মিনালের অগ্রগতি ৩০ শতাংশ

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট
১৪ ফেব্রুয়ারি ২০২২ ১১:১৩

ঢাকা: হজরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের তৃতীয় টার্মিনালের নির্মাণ কাজ ৩০ শতাংশ শেষ হয়েছে। ২০২৩ সালের জুন নাগাদ এই টার্মিনাল উদ্বোধন করা সম্ভব হবে বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা।

কাজের অগ্রগতি সম্পর্কে জানতে চাইলে বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষ (বেবিচক)-এর চেয়ারম্যান এয়ার ভাইস মার্শাল এম মফিদুর রহমান সারাবাংলাকে বলেন, বিমানবন্দরের তৃতীয় টার্মিনালের কাজের অগ্রগতি এখন পর্যন্ত ৩০ শতাংশ। দ্রুত গতিতে কাজ চলছে। শ্রমিকরা দিন রাত পালাক্রমে কাজ করছেন। যেভাবে কাজ চলছে তাতে নির্ধারিত সময়ের আগেই আমরা টার্মিনালটি চালু করতে পারব।

বিজ্ঞাপন

বেবিচক সূত্রে জানা যায়, শাহজালাল বিমানবন্দরে বর্তমানে বছরে ৮০ লাখ যাত্রী সেবা দেওয়া সম্ভব হচ্ছে। তৃতীয় টার্মিনালের কাজ শেষ হলে এই বিমানবন্দরে সেবা দেওয়া যাবে ২ কোটিরও বেশি যাত্রীকে।

বিমানবন্দরের তৃতীয় টার্মিনালের কাজের অগ্রগতিতে সন্তোষ প্রকাশ করে বিমান পরিবহন ও পর্যটন প্রতিমন্ত্রী মো. মাহবুব আলী সারাবাংলাকে বলেন, আমাদের লক্ষ্য ২০২৩ সালের জুনেই যেন তৃতীয় টার্মিনাল চালু করে দেওয়া যায়। আমরা সেই লক্ষ্যেই কাজ করছি। কাজ দ্রুত গতিতে এগিয়ে যাচ্ছে। আমরা করোনাভাইরাস মহামারির মধ্যে একদিনও কাজ বন্ধ করিনি। যেভাবে কাজ চলছে তাতে আশা করছি নির্ধারিত সময়ের আগেই টার্মিনালটি যাত্রীদের ব্যবহারের জন্য খুলে দিতে পারব।

২০২০ সালে নির্মাণকাজের শুরুতে দফায় দফায় পাঁচটি শক্তিশালী বোমা উদ্ধার করা হয় নির্মাণাধীন এলাকা থেকে। এরপরও কাজ থেমে থাকেনি। সতর্কতার সঙ্গে দ্রুতগতিতে এগিয়ে চলছে নির্মাণ কাজ। কাজ করছে প্রায় ৫ হাজার শ্রমিক।

বিজ্ঞাপন

জানা গেছে, থার্ড টার্মিনালে থাকবে সকল প্রযুক্তির ছোঁয়া। ২ লাখ ৩০ হাজার বর্গমিটারের এই বিমানবন্দরটির নকশা করেছেন বিখ্যাত স্থপতি রোহানি বাহারিন। সিঙ্গাপুরের চ্যাংগি এয়ারপোর্টের টার্মিনাল ৩, চীনের গুয়াংজুর এটিসি টাওয়ার ভবন, ভারতের আহমেদাবাদ আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর, ইসলামাবাদ আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর, মালদ্বীপ, ফিলিপাইন, কম্বোডিয়া, ব্রুনাই, মিয়ানমার ও ভিয়েতনামসহ বিশ্বের বিভিন্ন দেশের বিমানবন্দরের নকশা করেছেন তিনি।

এই বিমানবন্দরে একসঙ্গে ৩৭টি বিমান অ্যাপ্রোন বা পার্ক করার জায়গা থাকবে। আর ভেতরে থাকবে ১২টি বোর্ডিং ব্রিজ, ১১টি বডি স্ক্যানার, ১৬টি লাগেজ বেল্ট। এছাড়াও থাকবে স্বয়ংক্রিয় ইমিগ্রেশন সিস্টেম। নির্মাণাধীন তৃতীয় টার্মিনালটিতে বেশ কয়েকটি স্ট্রেইট এসকেলেটর লাগানো হবে। যারা বিমানবন্দরের দীর্ঘপথ হাঁটতে পারবেন না, তাদের জন্য থাকবে এই ব্যবস্থা। এছাড়া আরও থাকবে বেবি কেয়ার-চিলড্রেন প্লে এরিয়া, ফার্স্ট-এইড, থাকবে ২৪ ঘণ্টা চিকিৎসকসহ হেলথ ইন্সপেকশন সুবিধা, মুভি লাউঞ্জ, ফুড কোর্ট, ওয়াই-ফাই সুবিধা, এমনকি যাত্রীদের কেনাকাটার জন্য তৈরি হচ্ছে ১৪টি স্পটে ডিউটি ফ্রি শপ। তবে এই বিমানবন্দরের তৃতীয় টার্মিনালের সঙ্গে সংযুক্ত থাকবে মেট্রোরেল। তৈরি হবে পৃথক একটি স্টেশনও। এর মাধ্যমে বাংলাদেশে আসা যাত্রীরা বিমানবন্দর থেকে বের না হয়েই মেট্রোরেলে করে নিজেদের গন্তব্যে যেতে পারবেন। ফলে যানজট ভোগান্তি কমবে যাত্রীদের।

প্রসঙ্গত, ২০১৫ সালে থার্ড টার্মিনাল নির্মাণ ও সম্প্রসারণের প্রাথমিক সম্ভাব্যতা প্রতিবেদন এবং খসড়া মাস্টারপ্ল্যান প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে তোলা হয়। এরপর ২০১৭ সালের ২৪ অক্টোবর বিমানবন্দরটি নির্মাণে অনুমোদন দেয় জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটি (একনেক)। শুরুতে টার্মিনালটি নির্মাণের ব্যয় ধরা হয়েছিল ১৩ হাজার ৬১০ কোটি টাকা। পরে প্রকল্প ব্যয় ৭ হাজার ৭৮৮ কোটি ৫৯ লাখ টাকা বাড়ান হয়। সবমিলে এখন প্রকল্পটির খরচ ২১ হাজার ৩৯৮ কোটি টাকারও বেশি। প্রকল্পটি বাস্তবায়নে বাংলাদেশ সরকার দিচ্ছে ৫ হাজার ২৫৮ কোটি ৩ লাখ ৮৮ হাজার টাকা। বাকি ১৬ হাজার ১৪১ কোটি ২ লাখ ৪৫ হাজার টাকা ঋণ হিসেবে দিচ্ছে জাপানের সংস্থা জাইকা।

সারাবাংলা/এসজে/আইই

তৃতীয় টার্মিনাল শাহজালাল বিমানবন্দর

বিজ্ঞাপন

আরো

সম্পর্কিত খবর