স্বৈরাচার প্রতিরোধের বীরদের ভুলে না যাওয়ার আহ্বান ছাত্র ইউনিয়নের
১৪ ফেব্রুয়ারি ২০২২ ১৬:৪৫
চট্টগ্রাম ব্যুরো: ভালোবাসা দিবসের ব্যবসায়িক আয়োজনের নামে সামরিক স্বৈরাচার প্রতিরোধের আন্দোলনে আত্মাহুতি দেওয়া বীরদের ভুলে না যাওয়ার আহ্বান জানিয়েছে ছাত্র ইউনিয়ন।
সোমবার (১৪ ফেব্রুয়ারি) সকালে নগরীর মিউনিসিপ্যাল মডেল হাইস্কুল প্রাঙ্গণে নির্মিত অস্থায়ী শহিদ মিনারে ছাত্র ইউনিয়নের নেতাকর্মীরা স্বৈরাচার প্রতিরোধ দিবসের বীর শহিদদের প্রতি শ্রদ্ধা জানান। এসময় তারা বিপন্ন গণতন্ত্র, মানবতা ও স্বাধীনতা রক্ষার শপথ নেন।
শহিদ মিনারে পুষ্পস্তবক অর্পণ শেষে এক সভায় জেলা ছাত্র ইউনিয়নের সভাপতি অ্যানি সেন বলেন, ‘১৯৮৩ সালের ১৪ ফেব্রুয়ারি গণবিরোধী মজিদ খান শিক্ষা কমিশন বাতিল, সামরিক শাসন প্রত্যাহারের দাবিতে বের করা মিছিলে গুলি চালায় স্বৈরাচার এরশাদ সরকারের পেটোয়া বাহিনী। শহিদ হন জাফর, জয়নাল, মোজাম্মেল, আইয়ুব, দীপালি, কাঞ্চনসহ আরও অনেকে। পরের বছর থেকে এই দিনকে স্বৈরাচার প্রতিরোধ দিবস হিসেবে পালন শুরু হয়। ১৯৯০ সালের ৬ ডিসেম্বর ছাত্র-জনতার আন্দোলনের মুখে স্বৈরাচারের পতন পর্যন্ত ধারাবাহিক সংগ্রামে প্রেরণা জুগিয়েছিল সেদিনের এই আত্মত্যাগ।’
‘কিন্তু দুঃখের বিষয় আজ বাংলাদেশ ভালোবাসা দিবসের নামে ব্যবসায়িক আয়োজনের আড়ালে ভুলতে বসেছে সেদিনের প্রতিরোধ যোদ্ধা বীরদের। এই ফেব্রুয়ারি মাস ভাষার জন্য আত্মত্যাগের মাস, গণতন্ত্রের জন্য আত্মত্যাগের মাস। প্রকৃতিতে বসন্তের সূচনা করে আসে ফাল্গুন। অথচ আমরা আমাদের গৌরবের ইতিহাস ভুলে করপোরেট পুঁজির লাভজনক ব্যবসার কাছে আত্মসমর্পণ করেছি। ধীরে ধীরে আমরা অভিশপ্ত, অকৃতজ্ঞ জাতিতে পরিণত হচ্ছি।’
সভায় সাধারণ সম্পাদক ইমরান চৌধুরী বলেন, ‘আমরা কি ভুলে যাব আমাদের গণতান্ত্রিক অধিকার আদায়ের জন্য জীবন উৎসর্গকারী বীর শহিদদের? দেশে আজ সন্ত্রাস-সাম্প্রদায়িকতা ও দখলদারিত্বের রামরাজত্ব চলছে। রক্তে অর্জিত গণতন্ত্র মানবতা আজ বিপন্ন। স্বাধীনতার অর্থ আজ মানুষ ভুলতে বসেছে। শিক্ষাব্যবস্থা ধ্বংস হয়ে যাচ্ছে। স্বৈরাচার প্রতিরোধ দিবসের চেতনা বুকে ধারণ করে আমাদের আজ রুখে দাঁড়ানোর কথা ছিল। অথচ আমরা ভালোবাসা দিবসের নামে ব্যবসায়িক আয়োজনের কাছে সেই চেতনা হারিয়ে ফেলেছি।’
ছাত্র ইউনিয়নের নেতারা স্বৈরাচার প্রতিরোধ দিবস রাষ্ট্রীয়ভাবে পালনের দাবি জানিয়েছেন। সভায় আরও বক্তব্য রাখেন জেলা ছাত্র ইউনিয়নের শিক্ষা ও গবেষণা সম্পাদক নিশান রায়, স্কুল ছাত্র বিষয়ক সম্পাদক অয়ন সেনগুপ্ত, সদস্য এস এম নাবিল, শুভ দেবনাথ, সৌরজিৎ, অরিত্র।
সারাবাংলা/আরডি/টিআর