সারে ভর্তুকিতে প্রয়োজন ২৮০০০ কোটি টাকা, বরাদ্দ ৯০০০
১৪ ফেব্রুয়ারি ২০২২ ১৯:০৩
ঢাকা: গত কয়েক মাস ধরে আন্তর্জাতিক বাজারে সারের দাম বাড়তি। কিন্তু এই খাতে সরকারের বরাদ্দ বাড়েনি। কৃষিমন্ত্রী ড. আব্দুর রাজ্জাক জানিয়েছেন, এ বছর সারের জন্য ২৮ হাজার কোটি টাকা ভর্তুকি লাগবে। যেখানে বাজেটে বরাদ্দ রাখা হয়েছে মাত্র ৯ হাজার কোটি টাকা।
সোমবার (১৪ ফেব্রুয়ারি) সচিবালয়ে কৃষি মন্ত্রণালয়ের সম্মেলন কক্ষে সারে মজুত, দাম, ভর্তুকিসহ সার্বিক বিষয় নিয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ কথা জানান। তিনি বলেন, এই ১৯ হাজার কোটি টাকার ঘাটতি কিভাবে মেটানো হবে তা এখনো জানা নেই। মন্ত্রী বলেন, সারে অতিরিক্ত ভর্তুকি নিয়ে উভয় সংকটে রয়েছে কৃষি মন্ত্রণালয়।
কৃষিমন্ত্রী বলেন, চলতি ২০২১-২২ অর্থবছরে আন্তর্জাতিক বাজারে সারের মূল্য বিগত বছরের চেয়ে প্রায় ৩ গুণ বাড়লেও বর্তমান কৃষি বান্ধব সরকার অভ্যন্তরীণ বাজারে কৃষক পর্যায়ে সারের দাম বৃদ্ধি করেনি। অব্যাহতভাবে ভর্তুকি দিয়ে সুলভমূল্যে সার সরবরাহের মাধ্যমে কৃষি উৎপাদনের ধারা বজায় রেখেছে।
এতো ভর্তুকি দিলে অন্যান্য উন্নয়ন কর্মকাণ্ড ব্যাহত হবে জানিয়ে মন্ত্রী বলেন, অন্যদিকে সারের দাম বাড়লে কৃষকের কষ্ট বৃদ্ধি পাবে। উৎপাদন খরচ বাড়বে, খাদ্য উৎপাদন ব্যাহত হবে এবং খাদ্যপণ্যের দাম আরও বেড়ে যেতে পারে।
তিনি বলেন, এ বছর সরকারকে বাজেটের ৯ হাজার ৫০০ কোটি টাকার স্থলে ২৮ হাজার কোটি টাকা ভর্তুকি দিতে হবে। ইতোমধ্যেই ১৯ হাজার কোটি টাকা ভর্তুকি দেওয়া হয়েছে। গত ২০২০-২১ অর্থবছরে ভর্তুকিতে লেগেছিল ৭ হাজার ৭১৭ কোটি টাকা। এতো বিশাল অংকের ভর্তুকি কোথা থেকে আসবে এ বিষয়ে সরকার সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিয়ে কাজ করছে।
তিনি আরও বলেন, কোভিড পরিস্থিতির প্রভাবে বিশ্বব্যাপী সারের মূল্য অস্বাভাবিক পরিমাণে বেড়েছে, যা গতবছরের তুলনায় প্রায় তিনগুণ। তাছাড়া জ্বালানি তেলের দাম বাড়ায় জাহাজ ভাড়াও প্রায় দুইগুণ বেড়েছে। সারের দাম বেড়ে যাওয়ায় উভয় সংকটে সরকার। তবে বিশ্বের অনেক দেশ খাদ্য সংকটে পড়লেও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নির্দেশনায় ও আমাদের সকলের সম্মিলিত প্রচেষ্টায় আমরা সব দুর্যোগ মোকাবিলা করে দেশের খাদ্য উৎপাদনের চলমান ধারা অব্যাহত রাখতে পেরেছি।
কৃষিমন্ত্রী বলেন, সারের দাম বেড়ে যাওয়ায় বর্তমানে ভর্তুকি দাঁড়িয়েছে প্রতি বেজব ইউরিয়া ৮২ টাকা, টিএসপি ৫০ টাকা, এমএপব ৪১ টাকা এবং ডিএপিতে ৭৯ টাকা। বর্তমান আওয়ামী লীগ সেকার ২০০৯ সাল থেকে ২০২১-২২ অর্থবছর পর্যন্ত সার, সেচসহ কৃষি উপকরণে মোট ৮৮ হাজার ৮২৮ কোটি টাকা ভর্তুকি প্রদান করেছে। ২০০৫-০৬ অর্থবছরের তুলনায় বর্তমানে প্রায় ২৭ গুণ বেশি ভর্তুকি দেওয়া হয়েছে। যার ফলে খাদ্য উৎপাদন বৃদ্ধি পাচ্ছে এবং কৃষকরা সরাসরি উপকৃত হচ্ছেন।
সারাবাংলা/জেআর/এএম