চট্টগ্রামে খুনের মামলায় দু’জনের মৃত্যুদণ্ড, যাবজ্জীবন ৬
১৫ ফেব্রুয়ারি ২০২২ ১৩:৩২
চট্টগ্রাম ব্যুরো: চট্টগ্রামের রাঙ্গুনিয়ায় জিল্লুর ভাণ্ডারি নামে এক ব্যক্তিকে গুলি করে হত্যার মামলায় আদালত দুই আসামিকে মৃত্যুদণ্ড দিয়েছেন। একই রায়ে আদালত আরও ৬ জনকে যাবজ্জীবন সশ্রম কারাদণ্ড দিয়েছেন। এছাড়া অভিযোগ প্রমাণ না হওয়ায় আরও ৫ আসামিকে বেকসুর খালাস দিয়েছেন আদালত।
মঙ্গলবার (১৫ ফেব্রুয়ারি) চট্টগ্রামের প্রথম অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ শেখ ছামিদুল ইসলাম এ রায় দিয়েছেন।
আসামিদের মধ্যে মো. ইসমাইল ওরফে পিস্তল ইসমাইল এবং শহীদুল ইসলাম খোকনকে মৃত্যুদণ্ড দেওয়া হয়েছে। আবু, কামাল, জসিম, তোতা, নাছির ও সুমনকে যাবজ্জীবন সশ্রম কারাদণ্ড ও ৫০ হাজার টাকা জরিমানা অনাদায়ে আরও এক বছরের কারাদণ্ড দেওয়া হয়।
এছাড়া আসামি সাইফুদ্দিন, আজিম, নাজিম, রঞ্জু ও জাহাঙ্গীরকে বেকসুর খালাস দিয়েছেন আদালত।
চট্টগ্রাম জেলা মহানগর আদালতের অতিরিক্ত পিপি লোকমান হোসেন চৌধুরী সারাবাংলাকে বলেন, ‘দণ্ডবিধির ৩০২ ধারায় আনীত অভিযোগ রাষ্ট্রপক্ষ প্রমাণ করতে সক্ষম হয়েছে। আদালত দুই আসামিকে মৃত্যুদণ্ড ও ছয়জনকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দিয়েছেন।’
মামলার নথি পর্যালোচনায় জানা গেছে, ২০১৫ সালের ২১ জানুয়ারি রাতে রাঙ্গুনিয়া উপজেলার রানীরহাট প্রাথমিক বিদ্যালয়ের মূল ফটকের কাছে জিল্লুর রহমান ওরফে জিল্লুর ভাণ্ডারিকে মারধরের পর গুলি করে হত্যা করা হয়। এ ঘটনায় নিহতের ছোট ভাই মোহাম্মদ আজিম উদ্দিন রাঙ্গুনিয়া থানায় হত্যা মামলা করেন। পরে ২০১৬ সালের ৯ অক্টোবর ১৩ জনকে আসামি করে আদালতে অভিযোগপত্র জমা দেয় সিআইডি।
অভিযোগপত্রে বলা হয়েছে, ঘটনার তিনমাস আগে জিল্লুর ভাণ্ডারির ভাই মোহাম্মদ জিয়াউদ্দিন বাবলুকে কাতার নিয়ে যান আসামি ইসমাইলের ভাই মোহাম্মদ জব্বার। সেখানে যাওয়ার পর বাবলু বুঝতে পারেন, তার ভিসা নিয়ে জটিলতা আছে। এ নিয়ে বাবলুর সঙ্গে জব্বারের কথা কাটাকাটি হয়। পরবর্তীতে বাবলুর ভিসা বাতিল করে তাকে দেশে ফেরত পাঠিয়ে দেন জব্বার।
২০১৫ সালের ২০ জানুয়ারি রাতে জব্বারের ভাই ইসমাইলকে রানিরহাট বাজারে পেয়ে জিল্লুর ভাণ্ডারি তার ছোট ভাইকে দেশে ফেরত পাঠানোর কারণ জানতে চান। এসময় ভিসা বাবদ দেওয়া টাকা ফেরত চান জিল্লুর। এ নিয়ে তাদের মধ্যে কথা কাটাকাটি হয়। পরদিন রাতে জিল্লুরকে একা পেয়ে মারধর করে আসামিরা। একপর্যায়ে তার পায়ে গুলি করা হয়। আহত অবস্থায় তাকে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হলে চিকিৎসাধীন অবস্থায় সে রাতেই তার মৃত্যু হয়।
২০১৯ সালের ২৮ মে ১৩ আসামির বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করে বিচার শুরু হয়। মামলার অভিযোগপত্রে মোট ২৫ জন সাক্ষীর মধ্যে ২৩ জনের সাক্ষ্য নেওয়া হয়।
আসামিদের মধ্যে মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত খোকন ও খালাস পাওয়া রঞ্জু কারাগারে আছে। মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত ইসমাইল ও যাবজ্জীবন দণ্ডপ্রাপ্ত ছয় আসামিই পলাতক আছে। রায় ঘোষণার সময় সাইফুদ্দিন, আজিম ও নাজিম আদালতে হাজির ছিলেন। তিন জনই খালাস পেয়েছেন।
সারাবাংলা/আরডি/এমও