Sunday 29 September 2024
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

সব পেশাজীবীর যোগ্যদের নিয়ে ভারসাম্যমূলক ইসি গঠনের দাবি

স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট
১৫ ফেব্রুয়ারি ২০২২ ১৭:৩৮

ঢাকা: নির্দিষ্ট দুয়েকটি পেশাজীবীদের প্রাধান্য না দিয়ে সব পেশাজীবীদের মধ্য থেকে যোগ্যদের নিয়ে একটি ভারসাম্যমূলক নির্বাচন কমিশন (ইসি) গঠনের দাবি সার্চ কমিটির কাছে জানিয়েছেন সাংবাদিকরা। একইসঙ্গে তারা যোগ্যতার ভিত্তিতেই কমিশনে সংখ্যালঘু সম্প্রদায় এবং নারীদের প্রতিনিধিত্ব নিশ্চিত করার দাবিও তুলে ধরেছেন।

মঙ্গলবার (১৫ ফেব্রুয়ারি) সার্চ কমিটির সঙ্গে বৈঠক শেষে এ কথা জানিয়েছেন সিনিয়র সাংবাদিক ও সাংবাদিক নেতা মনজুরুল আহসান বুলবুল। বিকেল ৪টায় শুরু হয়েছে সাড়ে ৫টার দিকে এই বৈঠক শেষ হয়।

বিজ্ঞাপন

বৈঠক শেষে সাংবাদিক নেতা মনজুরুল আহসান বুলবুল বলেন, আমরা অতীতে দেখেছি— নির্বাচন কমিশনে দুয়েকটি পেশার ব্যক্তিদের উপস্থিতিই বেশি থাকে। তবে আমরা চাই, সব ধরনের পেশার প্রতিনিধিত্ব রেখে যোগ্য ব্যক্তিদের নিয়ে যেন একটি ভারসাম্যমূলক ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচন কমিশন গঠন করা হয়। যোগ্যতার ভিত্তিতে বিবেচনা করে এক জন নারী ও সংখ্যালঘুকে যেন কমিশনে রাখা হয়। একইসঙ্গে নির্বাচন কমিশনের সদস্যদের মধ্যে কাউকে মুখপাত্র হিসেবে রাখার প্রস্তাবও করেছি।

তিনি বলেন, এরই মধ্যে যাদের নাম তালিকায় এসেছে, তাদের বিষয়ে বিস্তারিত তথ্য সংগ্রহ করতে হবে। তাদের রাজনৈতিক পরিচয় যাচাই করতে হবে। তারা রাজনৈতিকভাবে ভোট পাল্টেছে কি না, তাদের বিরুদ্ধে কোনো ধরনের কেলেঙ্কারির অভিযোগ আছে কি না— এগুলো খতিয়ে দেখতে হবে। মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় বিশ্বাসী, এমন লোকদের নিয়ে কমিশন গঠন করতে হবে।

আরও পড়ুন-

বিজ্ঞাপন

সার্চ কমিটির কাছে নির্বাচন কমিশনের জন্য বিভিন্ন রাজনৈতিক দল, সংগঠন ও ব্যক্তি নাম পাঠিয়েছিলেন। তাদের কাছ থেকে জমা পড়া ৩২২ জনের নামের তালিকা এরই মধ্যে প্রকাশ করেছে সার্চ কমিটি। এই তালিকা প্রকাশকে ঠিক হয়নি বলে ব্যক্তিগতভাবে মনে করেন সাংবাদিক নেতা বুলবুল। তিনি বলেন, আমার ব্যক্তিগত মতামত— এই ৩২২ জনের নাম প্রকাশ করা ঠিক হয়নি। অনেকেই জানেন না তাদের নাম পাঠানো হয়েছে। কেউ কেউ খুশি হলেও অনেকেই বিব্রত হয়েছেন। এ ক্ষেত্রে চূড়ান্তভাবে ১০ জনের নাম ঠিক করার আগে সম্মতি নিতে হবে যে তারা রাজি আছেন কি না। তবে এই ১০ জনের নাম আগে প্রকাশ করা যবে না।

বিএনপিসহ কয়েকটি রাজনৈতিক দল সার্চ কমিটির আহ্বানে সাড়া দেয়নি। এতে সার্চ কমিটি ব্যথিত হয়েছে বলেও জানান ফেডারেল সাংবাদিক ইউনিয়ন বিএফইউজে’র সাবেক সভাপতি ও বর্তমান নির্বাহী কমিটির সদস্য মনজুরুল আহসান বুলবুল। এসব দল এখনো নির্বাচন কমিশনের জন্য যোগ্যদের নাম প্রস্তাব করলে সার্চ কমিটি সেই নাম নেবে বলে তিনি জানান। সার্চ কমিটির কাছে যেসব নাম এসেছে, এর বাইরে কমিটি অনুসন্ধানের মাধ্যমে যোগ্য কাউকে পেলে তাদের প্রস্তাবে অন্তর্ভুক্ত করবে— সার্চ কমিটি এমন তথ্য জানিয়েছে বলে জানান তিনি।

মনজুরুল আহসান বুলবুল আরও বলেন, আমর এর আগের নির্বাচন কমিশনগুলোতে বিভিন্ন ধরনের বিভাজন দেখেছি। এরকম কোনো বিভাজন আমরা নির্বাচন কমিশনের মতো জায়গায় দেখতে চাই না। প্রধান নির্বাচন কমিশনার ও কমিশনারদের পদে এমন ব্যক্তিদের নিয়োগ দিতে হবে যিনি একাধারে সিভিল প্রশাসন, সামরিক প্রশাসন ও পুলিশ প্রশাসনসহ সবকিছু চালানোর মতো দক্ষ হবেন। যোগ্যতার ভিত্তিতে তেমন ব্যক্তিদের কমিশনে নিয়োগ দেওয়া হলে অনেক সীমাবদ্ধতার মধ্যেও তারা কাজ করতে পারবে। কিন্তু যোগ্যতার ভিত্তিতে কমিশন গঠন করা না হলে কমিশন কর্তৃত্ব নিয়ে কাজ করতে পারবে না। সেক্ষেত্রে তাদের সফল হওয়ার সুযোগ নেই।

সার্চ কমিটি ৯ সিনিয়র সাংবাদিককে আমন্ত্রণ জানিয়েছিল। সেই আহ্বানে সাড়া দেননি পাঁচ জন। এ বিষয়ে দৃষ্টি আকর্ষণ করলে মনজুরুল আহসান বুলবুল বলেন, কে আসেননি, কেন আসেননি— সেটি তারা নিজেরাই বলতে পারবেন। এ বিষয়ে আমি কিছু বলতে পারব না।

আরেক সাংবাদিক নঈম নিজাম বলেন, নির্বাচন কমিশনে যোগ্যতার ভিত্তিতে নিয়োগ দতে হবে। যাদের নাম প্রস্তাব করা হবে তারা নির্বাচন কমিশনের সদস্য হতে রাজি কি না, সেটি অবশ্যই নিশ্চিত করতে হবে।

নঈম নিজাম আরও বলেন, নির্বাচন একটি সার্বজনীন বিষয়। তাই সার্বজননীন হয়— এমন লোকদের নিয়ে কমিশন গঠন করতে হয়। মানুষ আগামী নির্বাচনের জন্য অপেক্ষা করে আছে। সেই নির্বাচন কতটা গ্রহণযোগ্য হবে, সেটি দেখতে হবে। মানুষ গ্রহণযোগ্য একটি নির্বাচন চায়। আর গ্রহণযোগ্য নির্বাচনের জন্য গ্রহণযোগ্য নির্বাচন কমিশন প্রয়োজন।

এদিন বৈঠকে বসতে ৯ সিনিয়র সাংবাদিককে আমন্ত্রণ জানিয়েছিল সার্চ কমিটি। তবে তাদের মধ্যে শেষ পর্যন্ত বৈঠকে উপস্থিত হয়েছেন চার জন। এর  মনজুরুল আহসান বুলবুল ছাড়া বাকিরা হলেন— দ্য বিজনেস স্ট্যান্ডার্ডের সম্পাদক ইনাম আহমেদ চৌধুরী, বাংলাদেশ প্রতিদিনের সম্পাদক নঈম নিজাম ও চ্যানেল আইয়ের বার্তা প্রধান শাইখ সিরাজ।

সার্চ কমিটির আমন্ত্রণ পেলেও নিউ এজ সম্পাদক নুরুল কবীর, জিটিভির এডিটর ইন চিফ সৈয়দ ইশতিয়াক রেজা, মাছরাঙ্গা টেলিভিশনের ব্যবস্থাপনা পরিচালক অঞ্জন চৌধুরী, জাতীয় প্রেস ক্লাবের সাবেক সভাপতি শওকত মাহমুদ ও ঢাকা ট্রিবিউনের সম্পাদক জাফর সোবহান বৈঠকে অংশ নেননি।

সারাবাংলা/জিএস/টিআর

টপ নিউজ সার্চ কমিটি সিনিয়র সাংবাদিক

বিজ্ঞাপন
সর্বশেষ
সম্পর্কিত খবর