Friday 27 September 2024
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

তামাকে কর বাড়ালে ৯ হাজার কোটি টাকা বাড়তি রাজস্ব আদায় হবে

স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট
১৫ ফেব্রুয়ারি ২০২২ ১৬:২৯

ঢাকা: তামাকের বিদ্যমান কর কাঠামোকে জটিল বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা। তারা বলছেন, এই জটিল কর কাঠামো তামাকের ব্যবহার নিরুৎসাহিতকরণের পথে একটি বড় বাধা। এ জন্য এই কর কাঠামোকে সহজ করতে হবে। সেটি করা গেলে তামাকের ব্যবহার কমাতে তা কার্যকর ভূমিকা রাখবে। পাশাপাশি তামাকজাত পণ্য থেকে সরকারের ৯ হাজার দুইশ কোটি টাকা বাড়তি রাজস্ব আয় করতে পারবে।

মঙ্গলবার (১৫ ফেব্রুয়ারি) তামাক কর বৃদ্ধি বিষয়ে ঢাকা আহ্ছানিয়া মিশনের উদ্যোগে আয়োজিত ইকোনমিক রিপোর্টাস ফোরামের কার্যনির্বাহী কমিটির সদস্যদের সঙ্গে ভার্চুয়াল এক মতবিনিময় সভায় বক্তারা এসব কথা বলেন।

বিজ্ঞাপন

ইকোনমিক রিপোর্টাস ফোরামের সহসভাপতি শফিকুল আলমের সভাপতিত্বে মতবিনিময় সভায় বক্তব্য রাখেন ঢাকা আহ্ছানিয়া মিশনের স্বাস্থ্য ও ওয়াশ সেক্টরের পরিচালক ইকবাল মাসুদ, বাংলাদেশ কেমিক্যাল ইন্ডাস্ট্রি করপোরেশনের (বিসিআইসি) সাবেক চেয়ারম্যান ও ক্যাম্পেইন ফর টোবাকো ফ্রি কিডস বাংলাদেশের লিড পলিসি অ্যাডভাইজার মো. মোস্তাফিজুর রহমান ও ইকোনমিক রিপোর্টাস ফোরামের সাধারণ সম্পাদক এস এম রাশেদুল ইসলাম।

ঢাকা আহ্ছানিয়া মিশনের তামাক নিয়ন্ত্রণ প্রকল্পের প্রকল্প সমন্বয়কারী মো. শরিফুল ইসলামের সঞ্চালনায় সেমিনারে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন উন্নয়ন সমন্বয়ের পরিচালক (গবেষণা) আবদুল্লাহ নাদভী।

মূল প্রবন্ধে বলা হয়, প্রধানমন্ত্রী ২০১৬ সালে যখন ২০৪০ সালের মধ্যে তামাকমুক্ত দেশ গঠনের লক্ষ্য নির্ধারণ করেছিলেন, তখন এ লক্ষ্য অর্জনের জন্য ‘বর্তমান শুল্ক কাঠামো সহজ’ করা এবং এ অঞ্চলের সর্বোত্তম ব্যবস্থা থেকে শিক্ষা নিয়ে সরকারের শুল্ক আয় বাড়ানোর নির্দেশনা দিয়েছিলেন।

বিজ্ঞাপন

এ প্রসঙ্গে ফিলিপাইনের উদাহরণ টেনে বলা হয়, ফিলিপাইনে ‘সিন ট্যাক্স রিফর্ম অ্যাক্ট ২০১২’-এর মাধ্যমে তামাকে কার্যকর করারোপের সুফল পাওয়া গেছে। সেখানে এক্সাইজ ট্যাক্স চার গুণের বেশি বাড়ানোয় খুচরা মূল্য এক ধাক্কায় অনেকটা বেড়ে যায়। এর ফলে ধূমপায়ীর হার ৬ বছরে ২৮ শতাংশ থেকে ২৩ শতাংশের নিচে নেমে আসে। রাজস্বও বেড়ে যায়।

২০২২-২৩ অর্থবছরে শতকরা হিসাবে নিম্ন স্তরের সিগারেটের দাম সর্বোচ্চ পরিমাণে বাড়ানোর প্রস্তাব করা হয়। কারণ, ২০২০-২১ অর্থবছরের হিসাব অনুযায়ী মোট যে সিগারেট বিক্রি হয়, তার সবচেয়ে বড় অংশ (৭৫ শতাংশ) হলো নিম্ন স্তরের সিগারেট।

প্রস্তাবনাগুলো বাস্তবায়নের সম্ভাব্য ফলাফল হিসেবে বলা হয়, সরকার যদি তামাক কর বাড়ায়, তাহলে সিগারেট ব্যবহারকারীর অনুপাত ১৫ দশমিক ১ শতাংশ থেকে ১৪ দশমিক ০৩ শতাংশে নেমে আসবে। ১৩ লাখ প্রাপ্তবয়স্ক নাগরিক সিগারেট ব্যবহার ছেড়ে দেবেন, ৯ লাখ তরুণ সিগারেট ব্যবহার শুরু করা থেকে বিরত থাকবেন। এছাড়া ৮ লাখ ৯০ হাজার অকাল মৃত্যু রোধ করা যাবে। আর ৯ হাজার দুইশ কোটি টাকা বাড়তি রাজস্ব আদায় হবে সিগারেট বিক্রি থেকে।

ঢাকা আহ্ছানিয়া মিশনের স্বাস্থ্য ও ওয়াশ সেক্টরের পরিচালক ইকবাল মাসুদ বলেন, অসংক্রামক ব্যধির প্রাদুর্ভাব বিশ্বের যেসব দেশে বেশি, তাদের মধ্যে বাংলাদেশ রয়েছে।

ইকোনমিক রিপোর্টাস ফোরামের সাধারণ সম্পাদক এস এম রাশেদুল ইসলাম বলেন, গণমাধ্যম সবসময় জনস্বাস্থ্যের সঙ্গে সঙ্গতিপূর্ণ বিষয়কে ফোকাস করে। তামাকবিরোধী কার্যক্রমে গণমাধ্যম তাই অংশীদার হিসেবেই পাশে থাকবে।

বাংলাদেশ কেমিক্যাল ইন্ডাস্ট্রি করপোরেশনের (বিসিআইসি) সাবেক চেয়ারম্যান ও ক্যাম্পেইন ফর টোবাকো ফ্রি কিডস বাংলাদেশের লিড পলিসি অ্যাডভাইজার মো. মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, বাংলাদেশে তামাকের কর কাঠামো জটিল। তামাক পণ্যের ধরন, বৈশিষ্ট্য, দামের স্তর অনুযায়ী শুল্ক হারের ভিন্নতা রয়েছে। ফলে তামাক পণ্য সহজলভ্য থেকে যাচ্ছে, তামাক ব্যবহারের হারও প্রায় অপরিবর্তিত থাকছে।

সারাবাংলা/জিএস/টিআর

কর কাঠামো তামাকজাত পণ্য তামাকে কর

বিজ্ঞাপন
সর্বশেষ
সম্পর্কিত খবর