‘বীরাঙ্গনা মুক্তিযোদ্ধাদের জন্য হচ্ছে বীর নিবাস’
১৫ ফেব্রুয়ারি ২০২২ ১৯:৩৭
ঢাকা: এবার দেশের বীরাঙ্গনা মুক্তিযোদ্ধাদের জন্য আলাদা আবাসন ব্যবস্থা করে দিচ্ছে সরকার। ‘বীর নিবাস’ নামে এই আবাসন নির্মাণ করে দেওয়া হবে বলে জানিয়েছেন মুক্তিযুদ্ধ বিষয়কমন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মেল হক।
মঙ্গলবার (১৫ ফেব্রুয়ারি) মহান স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী উপলক্ষে মহিলা ও শিশুবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের উদ্যোগে ওসমানী স্মৃতি মিলনায়তনে মুক্তিযুদ্ধে অসামান্য অবদানের স্বীকৃতস্বরূপ নারী বীর মুক্তিযোদ্ধাদের সম্মাননা প্রদান অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তৃতায় তিনি একথা বলেন।
মহিলা ও শিশুবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রী ফজিলাতুন নেসা ইন্দিরা সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে তিনি বলেন, ‘জিয়াউর রহমান মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস ভুলিয়ে দেওয়ার জন্য সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে পাকিস্তান হানাদার বাহিনীর আত্মসমর্পণের জায়গায় শিশু পার্ক নির্মাণ করেছিলেন।’
তিনি বলেন, ‘আমরা ঐতিহাসিক সোহরাওয়ার্দী উদ্যানের নির্দিষ্ট স্থান মুক্তিযুদ্ধের সূতিকাগার হিসেবে সংরক্ষণ করতে চাই। যেখানে মানুষ গিয়ে মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস জানতে পারবে। এছাড়া মুক্তিযুদ্ধের সময় যেসব স্থানে যুদ্ধ হয়েছিল, সেসব স্থান আমরা সংরক্ষণ করছি। বধ্যভূমিগুলোও আমরা সংরক্ষণ করছি। এছাড়া যদি কোনো মুক্তিযোদ্ধা মারা যান তাদের একই রকম ডিজাইনের কবর দেওয়া হবে। যেন ৫০ বছর পরেও কবর দেখে বোঝা যায়, এটি একজন বীর মুক্তিযোদ্ধার কবর।’
বীর মুক্তিযোদ্ধারা বিনামূল্যে হাসপাতালে চিকিৎসা সেবা পাচ্ছেন জানিয়ে মন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মেল হক বলেন, ‘জেলা, উপজেলাসহ দেশের বিশেষায়িত হাসপাতালসমূহে চিকিৎসা, ওষুধ, টেস্ট যা প্রয়োজন তার সবই দেওয়া হচ্ছে।’
মহিলা ও শিশুবিষয়ক প্রতিমন্ত্রী ফজিলাতুন নেসা ইন্দিরা বলেন, ‘মুক্তিযুদ্ধ শুরু থেকেই, সরাসরি যুদ্ধে অংশগ্রহণ ও বীর মুক্তিযোদ্ধাদের সহায়তা এবং আত্মসম্ভ্রম ও আত্মত্যাগের মাধ্যমে মহান মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাসে দৃষ্টান্ত হয়ে আছেন নারী বীর মুক্তিযোদ্ধারা। মহান মুক্তিযুদ্ধে নারীদের আত্মত্যাগ অপরিসীম। বিধবা হতে পারে জেনেও স্ত্রীরা স্বামীদের যুদ্ধক্ষেত্রে পাঠিয়েছে। পুত্রহারা হতে পারে জেনেও মায়েরা পুত্রদের রণক্ষেত্রে পাঠিয়েছে। নির্যাতিত হতে পারে জেনেও কন্যারা অস্ত্র হাতে যুদ্ধ করে বিজয় ছিনিয়ে এনেছে।’
প্রতিমন্ত্রী বলেন, ‘স্বাধীনতার ৫০ বছরে ও জাতীয় পর্যায়ে একসঙ্গে দেশব্যাপী নারী বীর মুক্তিযোদ্ধাদের আনুষ্ঠানিক সম্মাননা প্রদান করা হয়নি। এবারই আলাদাভাবে বাংলাদেশের সকল নারী বীর মুক্তিযোদ্ধাদের একই দিনে, একই সময়ে, একইসঙ্গে সম্মাননা দেওয়া হচ্ছে।’
অনুষ্ঠানে ৬৫৪ জন নারী বীর মুক্তিযোদ্ধাকে সম্মাননা দেওয়া হয়। সম্মাননাপ্রাপ্ত সকল নারী বীর মুক্তিযোদ্ধাদের ক্রেস্ট/সম্মাননা স্মারক, উত্তরীয়, শাড়ি ও স্যুভেনিয়র দেওয়া হয়। প্রধান অতিথি ওসমানী স্মৃতি মিলনায়তন হতে ৬৫ জন মহিলা বীর মুক্তিযোদ্ধাকে এবং বাকিদের জেলা প্রশাসকরা তাদের কার্যালয়ের সম্মেলন কক্ষে সংশ্লিষ্ট জেলার নারী বীর সম্মননা দেন।
সারাবাংলা/জেআর/পিটিএম