ঘুষসহ দুদকের জালে নৌ অধিদপ্তরের প্রধান প্রকৌশলী
১২ এপ্রিল ২০১৮ ১৮:৪৭
।। গোলাম সামদানী, স্পেশাল করেসপেন্ডন্ট ।।
ঢাকা: ৫ লাখ টাকা ঘুষ গ্রহণের সময় নৌপরিবহন অধিদপ্তরের প্রধান প্রকৌশলী ড. এস এম নাজমুল হককে গ্রেফতার করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)।
বৃহস্পতিবার (১২ এপ্রিল) সন্ধ্যায় রাজধানীর সেগুনবাগিচার একটি রেস্তোরাঁ থেকে দুদক পরিচালক নাসিম আনোয়ারের নেতৃত্বে ৭ সদস্যের একটি দল ঘুষ গ্রহণের সময় তাকে হাতেনাতে গ্রেফতার করেন।
এ বিষয়ে নাসিম আনোয়ার সাংরাবাংলাকে বলেন, মেসার্স সৈয়দ শিপিং মাইন্ড এর নকশা ও জাহাজ অনুমোদনের জন্য মোট পনের লাখ টাকা ঘুষ দাবি করেছিলেন নৌপরিবহন অধিদপ্তরের প্রধান প্রকৌশলী। ঘুষের প্রথম কিস্তির ৫ লাখ টাকা নাজমুল হক আগেই নিয়েছিলেন। দ্বিতীয় কিস্তির জন্য সম্প্রতি পীড়াপীড়ি শুরু করেন তিনি। এরপর মেসার্স সৈয়দ শিপিং মাইন্ডের কর্তৃপক্ষ বৃহস্পতিবার সকালে আমাদের সঙ্গে যোগাযোগ করেন। এরপর আমরা তাকে গ্রেফতারের জন্য সেগুন রেস্তোরাঁতে এই অভিযানের পরিকল্পনা করি।
তিনি আরো জানান, বৃহস্পতিবার রাতে প্রধান প্রকৌশলীকে দুদকের হাজতখানাতে রাখা হবে। শুক্রবার রমনা থানায় তার বিরুদ্ধে সহকারী পরিচালক মোহাম্মদ আবদুল ওয়াদুদ বাদী হয়ে মামলা করবেন। এরপর তাকে আদালতে পাঠানো হবে।
এসময় প্রধান প্রকৌশলীর কাছ থেকে ১ হাজার টাকার নোটের ৫ টি বান্ডিলে মোট ৫ লাখ টাকা উদ্ধার করা হয়েছে উল্লেখ করে তিনি আরও বলেন, ‘ঘুষ লেনদেনের ঘটনা ঘটার আগেই আমরা তার ( ড. এস এম নাজমুল হক) টেবিলের চারপাশে অবস্থান নিয়েছিলাম। টাকার বান্ডিলগুলো হস্তান্তরিত হওয়ার পর তিনি রেস্তোরাঁর টেবিলের উপরে হাত রেখে লুকানোর চেষ্টা করছিলেন। ঠিক এই সময়েই আমরা গিয়ে তাকে গ্রেফতার করি।’
দুদকের পরিচালক বলেন, ‘এর আগে তিনি বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের জাহাজের নকশা ও জাহাজ অনুমোদনের জন্য ১৫-২০ লাখ টাকা ঘুষ নিয়েছেন, আমাদের কাছে এমন অভিযোগ প্রায়ই আসতো। আজ (বৃহস্পতিবার) মেসার্স সৈয়দ শিপিংয়ের এম ভি প্রিন্স অব সোহাগ নামের একটি জাহাজের নকশা অনুমোদন করতে তিনি এই ঘুষ নিচ্ছিলেন।’
গ্রেফতার প্রসঙ্গে প্রকৌশলী ড. এস এম নাজমুল হক সাংবাদিকদের বলেন, ‘আমি নির্দোষ, আমি সেগুনে স্যুপ খাচ্ছিলাম। সেখান থেকে আমাকে ধরে নিয়ে আসা হয়। আমি কিছু জানি না।’
এর আগে ২০১৭ সালের ১৮ জুলাই নিজ কার্যালয়ে বসে ঘুষ নেওয়ার সময় হাতেনাতে দুদকের কাছে গ্রেপ্তার হন নৌপরিবহন অধিদপ্তরের আরেক প্রধান প্রকৌশলী ও শিপ সার্ভেয়ার এ কে এম ফখরুল ইসলাম। এরপর ২ আগস্ট ২০১৭ তারিখে তাকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছিলো।
সারাবাংলা/জিএস/এমআইএস