ঢাকা: এখন থেকে ১৪ বছর আগে পরপারে পাড়ি জমিয়েছেন জনপ্রিয় চিত্রনায়ক এস এম আসলাম তালুকদার মান্না। সেসময় তার মৃত্যুতে অবহেলার অভিযোগ আনা হয় রাজধানীর বেসরকারি ইউনাইটেড হাসপাতালের চিকিৎসকদের বিরুদ্ধে। বিচার বিভাগীয় তদন্তে শেষে ৬ চিকিৎসকের বিরুদ্ধে প্রতিবেদনও দাখিল করা হয়। আদালত আসামিদের বিরুদ্ধে চার্জগঠন করে বিচার শুরুর আদেশ দিলেও উচ্চআদালতে মামলাটির কার্যক্রম স্থগিত হয়ে যায়।
২০০৮ সালের ১৭ ফেব্রুয়ারি বুকে ব্যথা অনুভব করায় ভোর রাত চারটায় ইউনাইটেড হাসপাতালে ভর্তি হন নায়ক মান্না। কিন্তু চিকিৎসকরা হাসপাতালে আসেন সকাল নয়টায়। ’মায়োকারডিয়াল ইনফ্রাকশনে’ আক্রান্ত হলে ৯০ মিনিটের মধ্যে রোগীকে নির্দিষ্ট ইনজেকশন দিতে হয়। কিন্তু মান্নাকে ওই ইনজেকশন দেওয়া হয় ৫ ঘণ্টা পর। হৃদরোগ বিভাগের ওই ৬ চিকিৎসকের অবহেলার জন্য মান্নার মৃত্যু হয় বলে অভিযোগ দায়ের করা হয়।
বর্তমানে মামলাটি এক নম্বর ঢাকার বিশেষ জজ আদালতে বিচারাধীন। সম্প্রতি মান্নার পরিবার থেকে স্থগিতাদেশ প্রত্যাহারের আবেদন করেছেন। তবে এ বিষয়ে জানার জন্য মান্নার স্ত্রী শেলী মান্নাকে কয়েকদফা মোবাইল করা হলেও তিনি ফোন ধরেননি।
সংশ্লিষ্ট আদালতের স্পেশাল পাবলিক প্রসিকিউটর জাহাঙ্গীর হোসেন (দুলাল) জানান, এটি একটি আলোচিত মামলা। কিন্তু মামলাটির কার্যক্রম হাইকোর্ট স্থগিত করেছেন। এজন্য দীর্ঘদিন ধরে মামলাটির বিচার হচ্ছে না। স্থগিত অর্ডার বাতিলের জন্য মান্নার পরিবারের পক্ষ থেকে আবেদন করা হয়েছে বলে শুনেছি। আমরা প্রস্তুত আছি। অপেক্ষায় আছি বিচারকাজ শুরুর। যদি স্থতিগ আদেশ তুলে দেয় আমাদের কাছে মামলা আসলে সাক্ষি হাজির করে যত দ্রুত সম্ভব মামলাটির বিচার শেষ করব।
আদালত মামলাটি বিচার বিভাগীয় তদন্তের নির্দেশ দেন। গত ১৩ নভেম্বর তৎকালীন ঢাকা মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট সাইফুর রহমান সিদ্দিক বিচার বিভাগীয় তদন্ত শেষে ৬ চিকিৎসকের বিরুদ্ধে প্রতিবেদন দাখিল করেন। মামলার আসামিরা হলেন, ডা. মো. এনায়েত হোসেন শেখ, ডা. জহির উদ্দিন মাহমুদ ইলিয়াস, ডা. মোমেনুজ্জামান, ডা. ফাতেমা, ডা. মাইনুল ইসলাম মজুমদার ও ডা. খন্দকার মাহবুব হোসাইন।
আসামিদের বিরুদ্ধে ২০০৯ সালের ১৮ অক্টোবর চার্জগঠন করেন তৎকালীন ঢাকার বিশেষ জজ আদালত-১ এর বিচারক ফিরোজ আলম। এরপর সাক্ষ্যগ্রহণের তারিখ ধার্য করেন বিচারক। সাক্ষ্য গ্রহণের জন্য ধার্য থাকা দিনেই সংশিষ্ট বিচারক বদলি হয়ে যান। থেমে যায় সাক্ষ্য গ্রহণ। এরপর আসামিরা মামলার কার্যক্রম স্থগিত চেয়ে উচ্চ আদালতে আবেদন করলে আদালত তা মঞ্জুর করেন।