ঢাকা: বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক (রাজশাহী বিভাগের দায়িত্বপ্রাপ্ত) এস এম কামাল হোসেন বলেছেন, বিএনপি হচ্ছে লম্ফজম্প পুরানো গাড়ির মতো। জোড়াতালির বিএনপির এখন ড্রাইভারও নাই। তাই ওরা খাদে পড়বেই।
শনিবার (১৯ ফেব্রুয়ারি) দুপুরে পাবনার পুলিশ লাইনস মাঠে জেলা আওয়ামী লীগের ত্রি-বার্ষিক সম্মেলনে প্রধান বক্তার বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন। সম্মেলনে ভার্চুয়ালি যুক্ত হয়ে প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তব্য দেন আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের।
প্রধান বক্তা এসএম কামাল হোসেন বিএনপি-জামায়াতের সরকারবিরোধী কর্মকাণ্ডের সমালোচনা করে নেতাকর্মীদের উদ্দেশে বলেন, ‘তাদের আর ছাড় দেওয়ার কোনো জায়গা নেই। কারণ শেখ হাসিনা না বাঁচলে আমি, আপনি বাঁচব না। শেখ হাসিনা না বাঁচলে বাংলাদেশ বাঁচবে না। তাই তো ওদের সব ক্ষোভ হচ্ছে শেখ হাসিনার প্রতি। কারণ খালেদা-তারেক পাকিস্তানের এজেন্ডা বাস্তবায়ন করতে চায়। তারা প্রমাণ করতে চায়, বঙ্গবন্ধুর নেতৃত্বে বাংলাদেশ স্বাধীন হওয়া ভুল ছিল।’
ক্ষমতাসীন সরকারের বিভিন্ন উন্নয়ন কর্মকাণ্ড তুলে ধরে তিনি বলেন, ‘২০২২ সাল হবে শেখ হাসিনার নেতৃত্বে তাক লাগানোর বছর। পদ্মাসেতু দিয়ে যানবাহন চলবে। মেট্রোরেল ও কর্ণফুলী টানেলের কাজ শেষ হবে। আর বাংলাদেশের মানুষ বলবে, সাবাশ শেখের বেটি শেখ হাসিনা। বাবা যেমন কারও কাছে মাথা নথ করেননি, শেখের বেটি শেখ হাসিনাও কারও কাছে মাথা নত করে না।’
শেখ হাসিনার ভয়ে বিএনপি নির্বাচনে আসতে চায় না দাবি করে এসএম কামাল বলেন, ‘কারণ শেখ হাসিনার বিকল্প বাংলাদেশে শেখ হাসিনা-ই। বিএনপি হচ্ছে লম্ফজম্প পুরানো গাড়ির মতো। ওখানে কোনো রাজনৈতিক কর্মী নাই। ওখানে আছে একাত্তরের যুদ্ধাপরাধী, মুক্তিযুদ্ধের বিরোধিতাকারী আর আছে অতি বিপ্লবীরা। যারা বাংলাদেশের স্বাধীনতায় বিশ্বাস করে না। জোড়াতালির বিএনপির এখন ড্রাইভার নাই। মূল ড্রাইভার খালেদা জিয়া এতিমের টাকা আত্মসাৎ করে জেলখানায়। মানবিক নেত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনা বাইরে রেখেছেন। আরেক চালক বিশ্বে দুর্নীতির বরপুত্র। এটা আমার কথা নয় ২০০৮ সালে গণমাধ্যমে সংবাদ প্রকাশিত হয়েছিল।’
তিনি বলেন, ‘ওরা নির্বাচনে আসতে ভয় পায়। তাই ষড়যন্ত্রের পথ বেছে নিয়েছে। আর আমাদের নেত্রী শেখ হাসিনা শুধু বাংলাদেশে নয়, বিশ্ব নেতৃত্ব তার প্রশংসা করে। করোনার সংকটে ভ্যাকসিন নিয়ে বিএনপির অপপ্রচার-মিথ্যাচারের সমালোচনার জবাবে তিনি বলেন, ‘শেখ হাসিনা বাঁচলে বাংলাদেশ বাঁচবে। শেখ হাসিনা এগিয়ে গেলে বাংলাদেশ এগিয়ে যাবে। আমাদের শেখ হাসিনা দিনরাত পরিশ্রম করেন আপনাদের জন্য। তাই এই দলটাকে তৃণমূলে ঢেলে সাজাতে হবে। তাই পাবনা জেলায় যে কয়েকটি উপজেলার সম্মেলন বাকি আছে, যারা নতুন নেতৃত্ব আসবে- তাদের আগামী মার্চের মধ্যে উপজেলা সম্মেলনগুলো শেষ করতে হবে।’
এসএম কামাল আশাবাদ ব্যক্ত করে বলেন, ‘এই সম্মেলনে যে নেতৃত্ব আসবে, সেই নেতৃত্ব আগামী দিনে পাবনায় পাবনায় তৃণমূল পর্যায়ে দলকে সুসংগঠিত করবে। তারা ২০২৩ সালে জননেত্রী শেখ হাসিনাকে বিজয় উপহার দেবে, আজকের সম্মলনে এটাই আমাদের শপথ নিতে হবে।’
দীর্ঘ সাত বছর পর এদিন পাবনা জেলা আওয়ামী লীগের ত্রি-বার্ষিক সম্মেলন অনুষ্ঠিত হলো। সম্মেলনে সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক হিসাবে প্রবীণ ও নবীন অনেকে পদপ্রত্যাশী ছিলেন। তবে সব জল্পনা-কল্পনার অবসান ঘটিয়ে জেলা আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি (সিনিয়র সহ-সভাপতি) ও জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান রেজাউল রহিম লালকে সভাপতি ও পাবনা সদর আসনের সাংসদ গোলাম ফারুক খন্দকার প্রিন্সকে পুনরায় সাধারণ সম্পাদক ঘোষণা করা হয়। আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য আব্দুর রহমান নতুন কমিটির এই দুজনের নাম ঘোষণা করেন।
পাবনা জেলা আওয়ামী লীগের ত্রি-বার্ষিক সম্মেলন পুলিশ লাইনস মাঠে বেলা ১১ টায় উদ্বোধন করেন আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য আব্দুর রহমান। জেলা আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি রেজাউল রহিম লালের সভাপতিত্বে ও সাধারণ সম্পাদক গোলাম ফারুক প্রিন্সের পরিচালনায় বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য দেন- রাজশাহী সিটি করপোরেশনের মেয়র ও সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য এ এইচ এম খায়রুজ্জামান লিটন, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক এবং তথ্য ও সম্প্রচারমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ, স্বাস্থ্য ও জনসংখ্যাবিষয়ক সম্পাদক ডা. রোকেয়া সুলতানা, কার্যকরী সদস্য বেগম আখতার জাহান, প্রফেসর মেরিনা জাহান কবিতা এমপি, সৈয়দ আবদুল আউয়াল শামীম।
এছাড়াও মঞ্চে উপস্থিত ছিলেন তথ্য ও প্রযুক্তিবিষয়ক প্রতিমন্ত্রী জুনায়েদ আহমেদ পলক, পাবনা-১ আসনের সংসদ সদস্য অ্যাডভোকেট শামসুল হক টুকু, পাবনা-৩ আসনের সংসদ সদস্য মকবুল হোসেন, পাবনা-৪ আসনের সংসদ সদস্য বীরমুক্তিযোদ্ধা নুরুজ্জামান বিশ্বাস, পাবনা-২ আসনের সংসদ সদস্য আহমেদ ফিরোজ কবির, পাবনা-সিরাজগঞ্জ সংরক্ষিত আসনের নারী সংসদ সদস্য নাদিরা ইয়াসমিন জলিসহ জেলা আওয়ামী লীগের নেতারা।