নতুন ইসি দিয়ে হবে না, সরকার পরিবর্তন দরকার: ফখরুল
১৯ ফেব্রুয়ারি ২০২২ ১৮:০২
ঢাকা: বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, নতুন ইসি বা নির্বাচন কমিশন তৈরি করা হচ্ছে। আমরা পূর্বেই বলেছি যে, এই নির্বাচন কমিশন দিয়ে কোনো কাজ হবে না; সরকার পরিবর্তন দরকার।
শনিবার (১৯ ফেব্রুয়ারি) দুপুরে জাতীয় প্রেস ক্লাব মিলনায়তনে এক আলোচনা সভায় তিনি এসব কথা বলেন। ‘দি ইউনিভার্সেল একাডেমি’র উদ্যোগে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেনের ‘স্মৃতির অ্যালবাম’ গ্রন্থের প্রকাশনা উপলক্ষে এ আলোচনা সভা আয়োজন করা হয়।
মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, ‘সার্চ কমিটি গঠন করে জনগণের সঙ্গে প্রতারণা করে পুরোপুরি বোকা বানিয়ে আবারও সেই ২০১৪ ও ২০১৮ সালের মতো একটা নির্বাচন কমিশন বানিয়ে তাদের (আওয়ামী লীগের) ক্ষমতাকে তারা পাকাপোক্ত করতে চায়। একদলীয় শাসন ব্যবস্থা কায়েম করতে চায়।’
দুদক কর্মকর্তার চাকুরিচ্যুতি প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘দুর্নীতি দমন কমিশনের একজন কর্মকর্তাকে অপসারণ করা হয়েছে এবং কেন অপসারণ করা হয়েছে? তিনি কিছু ব্যক্তিকে চিহ্নিত করেছিলেন যে, এরা দুর্নীতি করছে ব্যাপকভাবে, বিশেষ করে কক্সবাজারে। সেই মানুষগুলোই তার বিরুদ্ধে অভিযোগ করেছে যে, তিনি নাকি দুর্নীতি পরায়ণ। কোনো রকমের সুষ্ঠু তদন্ত ছাড়াই তাকে অপসারণ করা হয়েছে। এই দেশ দুর্নীতি ভয়াবহভাবে ছড়িয়ে পড়েছে এবং সেটার সম্পূর্ণভাবে নেতৃত্ব দিচ্ছে সরকার।’
মির্জা ফখরুল বলেন, ‘ঢাকা এয়ারপোর্ট থেকে টঙ্গির যে রাস্তা এই রাস্তার প্রতি কিলোমিটারের খরচ দেখানো হয়েছে ২১৩ কোটি টাকা, যা পৃথিবীর কোথাও নেই। প্রতিটি ক্ষেত্রে ব্যাপক দুর্নীতি এবং এটি ছড়িয়ে পড়েছে ক্যানসারের মতো।’
‘এখন বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে দুর্নীতি করছেন উপাচার্যরা, এখন স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ে যারা কাজ করছেন তারা দুর্নীতি করছেন, বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে, মেডিকেল কলেজগুলোতে দুর্নীতি করা হচ্ছে- এমন একটা জায়গা নাই, যেখানে দুর্নীতি হচ্ছে না। এই অবস্থা থেকে উত্তরণে সকলকে ঐক্যবদ্ধ হতে হবে’— বলেন মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।
ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেনের বর্ণাঢ্য কর্মজীবনের কথা তুলে ধরে তিনি বলেন, ‘ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন সব সময়, সব কালে জন্মায় না। এরা ক্ষণজন্মা মানুষ। সারাটা জীবন তিনি দেশের জন্য, মানুষের কল্যাণের জন্য কাজ করেছেন। ড. মোশাররফ যেখানে হাত দিয়েছেন সফল হয়েছেন। তিনি দীর্ঘজীবী হোন, আরও বহু সময় ধরে এই জাতিকে নেতৃত্ব দিন, আমাদের নেতৃত্ব দিন। তার জ্ঞান, দক্ষতা, অভিজ্ঞতা আমাদের মধ্যে ছড়িয়ে দিন। বিশেষ করে নতুন প্রজন্মের মাঝে ছড়িয়ে দেন- এই কামনা করছি।’
ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন বলেন, ‘এই গ্রন্থ কোনো প্রবন্ধ বা কোনো নভেল বা সাহিত্য নয়। আমার ছাত্রজীবন, লন্ডনে অবস্থানকালে মুক্তিযুদ্ধে অবদান রাখার কিছু স্মৃতি, পারিবারিক, রাজনৈতিক, রাজনীতির বাইরেও যে সামাজিক কাজ-কর্ম রয়েছে যেসব ছবি ভবিষ্যত প্রজন্মের কাছে শেয়ার করে যেতে চাই বলে এই গ্রন্থটি করেছি। এই গ্রন্থটি আমি উৎসর্গ করেছি আমার নাতিদের। আমার স্নেহাস্পদ নাতি খন্দকার মাশরাফ হোসেন, নিশান ইসলাম, খন্দকার ইশরাক হোসেন ও খন্দকার মিরাফ হোসেন, নাতনি মিহিরা সিয়ারা খন্দকারসহ দেশের বিদেশে বসবাসরত তাদের সমবয়েসী বাংলাদেশি নাতি-নাতনিদের উদ্দেশ্যে উৎসর্গকৃত।’
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য অধ্যাপক আনোয়ারুল্লাহ চৌধুরীর সভাপতিত্বে ও সুপ্রিম কোর্টের নবীন আইনজীবী ব্যারিস্টার খন্দকার মারুফ হোসেনের পরিচালনায় আলোচনা সভায় অন্যদের মধ্যে বক্তব্য দেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপ-উপাচার্য অধ্যাপক আ ফ ম ইউসুফ হায়দার, বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান শওকত মাহমুদ, চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা আমান উল্লাহ আমান, আবদুস সালাম, যুগ্ম মহাসচিব খায়রুল কবির খোকন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক এবিএম ওবায়দুল ইসলাম, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক আবদুল লতিফ মাসুম, ফেডারেল সাংবাদিক ইউনিয়নের সভাপতি এম আবদুল্লাহ, সাংবাদিক নুর উদ্দিন আহমেদ নুরু, প্রকাশক শিহাব উদ্দিন ভুঁইয়া প্রমুখ।
সারাবাংলা/এজেড/পিটিএম