Friday 22 Nov 2024
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

‘ডিজিটাল সিকিউরিটি অ্যাক্ট মানবাধিকারের জন্য হুমকি’

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট
২০ ফেব্রুয়ারি ২০২২ ০৮:৪৯

সুলতানা কামাল, ছবি: সারাবাংলা

ঢাকা: ডিজিটাল সিকিউরিটি অ্যাক্ট মানবাধিকারের জন্য হুমকি বলে উল্লেখ করেছেন মানবাধিকার সংস্কৃতি ফাউন্ডেশনের (এমএসএফ) সভাপতি অ্যাডভোকেট সুলতানা কামাল। এই আইনের মাধ্যমে অনেক সাধারণ মানুষ এবার ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে বলেও জানান তিনি।

এমএসএফ’র ধানমন্ডির কার্যালয়ে গতকাল শনিবার (১৯ ডিসেম্বর) সাংবাদিকদের সঙ্গে এক মত বিনিময় সভায় সংগঠনের প্রতিষ্ঠাতা ও সভাপতি এসব কথা বলেন। এ সময় তিনি মানবাধিকার সংস্কৃতি ফাউন্ডেশনের প্রতিষ্ঠার উদ্দেশ্য ও লক্ষ্য তুলে ধরার পাশাপাশি দেশের মানবাধিকার পরিস্থিতি নিয়ে মুক্ত আলোচনা করেন।

বিজ্ঞাপন

সুলতানা কামাল বলেন, ‘ডিজিটাল সিকিউরিটি অ্যাক্ট মানবাধিকারের জন্য হুমকি। তবে একটি রাষ্ট্রে ডিজিটাল সিকিউরিটি আইন থাকাটাই যে তা মানবাধিকারের জন্য হুমকি, সেটি আমরা ভাবছি না। যতক্ষণ পর্যন্ত আমাকে না ধরছে, এটা নিয়ে আমি চিন্তিত হচ্ছি না। দেশের শিক্ষিত সমাজের মধ্যেও এটি নিয়ে এক ধরনের অস্বচ্ছতা রয়েছে। আর সাধারণ মানুষ ভাবে যে এর সঙ্গে তাদের কোনো সম্পর্কই নাই। কিন্তু আমরা দেখেছি ডিজিটাল সিকিউরিটি আইনে অনেক সাধারণ মানুষ এবার ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।’

সম্প্রতি আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী র‍্যাবের কয়েকজন কর্মকর্তার ওপর মার্কিন নিষেধাজ্ঞা বিষয়ক মতামতে তিনি বলেন, ‘র‍্যাব যে মানবাধিকার লঙ্ঘন করে আসছে তা আমরা দীর্ঘদিন ধরেই বলে আসছি। কিন্তু এটি আমাদের জন্য দুর্ভাগ্যজনক যে আজ মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের নিষেধাজ্ঞার পর প্রায় দু’মাস ধরে বিচার বহির্ভূত হত্যাকাণ্ডের কথা শোনা যাচ্ছে না।’

তিনি বলেন, ‘আমরা ২০০৪ সাল থেকেই র‍্যাবের গঠন নিয়ে কথা বলে আসছি। কিন্তু তখন সন্ত্রাস দমনের জন্য এটি জরুরি ছিল বিধায় আমরা কোন আপত্তি জানাইনি। এলিট ফোর্স র‍্যাব গঠন হওয়ার আগে ছিল অপারেশন ক্লিন হার্ট। আমরা সেসময় থেকেই বিচার বহির্ভূত হত্যাকাণ্ড নিয়ে আপত্তি জানিয়ে আসছি। সন্ত্রাস দমনের জন্য র‍্যাব গঠনের পর তাদের ক্রসফায়ারের কাজে ব্যবহার করার বিরুদ্ধেও আমরা কথা বলেছি। রাষ্ট্রীয় সন্ত্রাস নামে বইও বের করেছিলাম ওই সময়। সেখানেও আমাদের ওপর আক্রমণ হয়েছিল। আমাদের প্রতিষ্ঠান থেকে বিচার বহির্ভূত হত্যাকাণ্ডের বিরুদ্ধে মামলা করলে আদালত রায়ও দিয়েছিল- র‍্যাব যেন আর ক্রসফায়ার না করে। ওই সময়ের অ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলম কথাও দিয়েছিলন ক্রসফায়ার আর হবে না। তবে এগারো দিনের মত বন্ধ থাকার পর আবারও ক্রস ফায়ার চালু হয়।’

বিজ্ঞাপন

সুলতানা কামাল আরও বলেন, ‘আমরা প্রতিবাদ, আবেদন ও মামলাসহ নানাভাবে চেষ্টা করেছি বিচার বহির্ভূত হত্যাকাণ্ড যাতে আর না হয়। কিন্তু যেই বিদেশ থেকে নিষেধাজ্ঞা আসল এখন দুইমাস ধরে কোনো বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ডের খবর পাওয়া যাচ্ছে না। অনেক অজ্ঞাত পরিচয় লাশ অবশ্য মিলছে যা সম্পর্কে আমরা কিছু জানি না। কিন্তু আপাতভাবে দেখা যাচ্ছে এটি বন্ধ আছে। আমরা খুবই খুশি হতাম যদি আমাদের কথা শুনে বিচারবহির্ভুত হত্যাকাণ্ড বন্ধ হত।’

এছাড়াও দেশে বিচারহীনতার সংস্কৃতি থাকার কারণে মানুষ আজ বিচার চাইতে ভয় পায় বলেও মন্তব্য করেন তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সাবেক এই উপদেষ্টা। তিনি বলেন, মানবাধিকার সংস্কৃতি তখনই প্রতিষ্ঠিত হবে যখন প্রতিটি মানুষ নির্ভয়ে, শান্তিতে ও স্বাধীনভাবে বসবাস করতে পারবে। আর সেটি নিশ্চিত করবে সরকার। তবে আমাদের দেশের মানুষের মানবাধিকারের বোধ না থাকার কারণে তারা নিজেদের অধিকার রক্ষা করতে ব্যর্থ হচ্ছে।

সারাবাংলা/আরএফ/এনএস

ডিজিটাল সিকিউরিটি অ্যাক্ট মানবাধিকার

বিজ্ঞাপন

আরো

সম্পর্কিত খবর