চট্টগ্রামে শহীদ মিনারে যেতে পারবে সংগঠন থেকে শুধু ৫ জন
২০ ফেব্রুয়ারি ২০২২ ১১:৪৫
চট্টগ্রাম ব্যুরো: কোভিড-১৯ সংক্রমণ পরিস্থিতি বিবেচনায় রেখে একুশে ফেব্রুয়ারি উপলক্ষে চট্টগ্রামের কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে শহীদদের শ্রদ্ধাঞ্জলি জানানোর কর্মসূচি চূড়ান্ত করেছে জেলা প্রশাসন ও নগর পুলিশ। সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, সংগঠন থেকে সর্বোচ্চ পাঁচজন এবং ব্যক্তিপর্যায়ে দু’জনকে শহীদ মিনারে প্রবেশ করতে দেওয়া হবে। মাস্ক ছাড়া কাউকে প্রবেশ করতে দেওয়া হবে না। প্রবেশপথে থাকবে হাত ধোয়ার ব্যবস্থা।
সাংস্কৃতিক বলয় নির্মাণ প্রকল্পের আওতায় নগরীর কে সি দে রোডে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার ভেঙে ফেলায় এবার নগরীর মিউনিসিপ্যাল মডেল হাইস্কুল প্রাঙ্গনে নির্মিত অস্থায়ী শহীদ মিনারে শ্রদ্ধা নিবেদন করা হবে। গত ৫ ফেব্রুয়ারি চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের মেয়র রেজাউল করিম চৌধুরী অস্থায়ী শহীদ মিনার উদ্বোধন করেছেন।
গত ১৫ ফেব্রুয়ারি চট্টগ্রামের জেলা প্রশাসক মো. মমিনুর রহমান সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে প্রস্তুতি সভা করে শ্রদ্ধা নিবেদন ও প্রভাত ফেরির কর্মসূচি চূড়ান্ত করেছেন। জেলা প্রশাসন থেকে পাওয়া তথ্য অনুযায়ী, অন্যান্যবারের মতো এবারও রাত ১২টায় প্রথম দফা শ্রদ্ধা নিবেদনের কর্মসূচি থাকছে শহীদ মিনারে। সকাল ৭টা থেকে শুরু হবে প্রভাতফেরি।
শহীদ মিনারের প্রবেশপথে পর্যাপ্ত সংখ্যক স্বেচ্ছাসেবক থাকবেন। মাস্ক পরে সংগঠন থেকে পাঁচজন এবং ব্যক্তিপর্যায়ে সর্বোচ্চ দু’জন শহীদ মিনারে প্রবেশ করতে পারবেন। স্বেচ্ছাসেবকদের কাছ থেকে হ্যান্ড স্যানিটাইজার নিয়ে হাত পরিস্কার করতে হবে। প্রবেশপথে হাত ধোয়ার ব্যবস্থাও থাকবে। এছাড়া কারও কাছে মাস্ক না থাকলে স্বেচ্ছাসেবকরাই সরবরাহ করবেন।
এদিকে নগর পুলিশের ট্রাফিক বিভাগ প্রভাতফেরি এবং শহীদ মিনারে প্রবেশের রুট নির্ধারণ করেছে। নগর পুলিশের উপ-কমিশনার (ট্রাফিক-দক্ষিণ) মো. নাসিরুদ্দিন সারাবাংলাকে জানিয়েছেন, নগরীর আমতল থেকে প্রভাতফেরি শুরু হবে। মিউনিসিপ্যাল স্কুলপ্রাঙ্গনে শহীদ মিনারে শ্রদ্ধা নিবেদন শেষে নিউমার্কেটের সামনে দিয়ে বের হতে হবে। কোনোভাবেই আমতল দিয়ে ফিরে আসা যাবে না এবং নিউমার্কেটের সামনে দিয়ে মিউনিসিপ্যাল স্কুলের দিকে যাওয়া যাবে না।
শনিবার (১৯ ফেব্রুয়ারি) নগর পুলিশের এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়েছে, রোববার রাত ৯টা থেকে নগরীর তিনপোল থেকে আমতল হয়ে নিউমার্কেট পর্যন্ত সড়কের উভয়পাশে যানবাহন চলাচল বন্ধ থাকবে। একইভাবে সিনেমা প্যালেস থেকে রাইফেল ক্লাব পর্যন্ত সড়কেও যানবাহন চলাচল বন্ধ থাকবে। তবে তিনপোলের মাথা থেকে শিক্ষা অফিসের সামনে দিয়ে আমতল পর্যন্ত একমুখী সড়ক চালু থাকবে। নিউমার্কেট, আমতল, তিনপুল ও সিনেমা প্যালেস মোড়ে প্রতিবন্ধক বসানো হবে এবং যানবাহন নির্দিষ্ট সড়ক দিয়ে ঘুরিয়ে দেওয়া হবে।
রাত ১২টায় এবং সকালে শহীদ মিনারে ফুল দিতে আসা গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তি ও সরকারি কর্মকর্তারা নগরীর ওয়াসা-কাজির দেউরি- নেভাল ক্রসিং- লাভ লেইন- বৌদ্ধ মন্দির- বোস ব্রাদার্স- রাইফেল ক্লাব হয়ে আমতল মোড় পৌঁছবেন। তাদের গাড়ি থাকবে রাইফেল ক্লাবের মাঠে। সুবিধা অনুযায়ী তিন পোলের মাথা এবং নিউমার্কেট মোড়েও গাড়ি রাখা যাবে। সবাইকে আমতল থেকে পায়ে হেঁটে শহীদ মিনারে যেতে হবে। গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তি ও সরকারি কর্মকর্তারা শহীদ মিনারে শ্রদ্ধা নিবেদন শেষে পুনরায় আমতল দিয়ে চলে যেতে পারবেন।
নগর পুলিশের অতিরিক্ত উপ-কমিশনার (জনসংযোগ) শাহাদাত হোসেন রাসেল সারাবাংলাকে বলেন, ‘কোভিড-১৯ পরিস্থিতিতে বেশি জনসমাগম যাতে না হয়, সবাই যাতে সুশৃঙ্খলভাবে ফুল দিয়ে দ্রুত শহীদ মিনার ছেড়ে যেতে পারেন, আমরা সে বিষয়ে সতর্ক থাকব। আমাদের পিকেট ডিউটি বেশি থাকবে এবার। সে অর্থে প্রভাতফেরি হবে না। কোনো প্রতিষ্ঠান কিংবা সংগঠন থেকে পাঁচজন এলে দ্রুত তারা যাতে শহীদ মিনারে প্রবেশ করতে পারেন এবং শ্রদ্ধা জানিয়ে বেরিয়ে যেতে পারেন, সেই ব্যবস্থা আমরা করব।’
সারাবাংলা/আরডি/এনএস