তথ্যপ্রযুক্তি বিষয়ে এমপিওভুক্তদেরও আবেদনের সুযোগ দিতে নির্দেশ
২০ ফেব্রুয়ারি ২০২২ ১৮:২৫
ঢাকা: বেসরকারি শিক্ষক নিবন্ধন ও প্রত্যয়ন কর্তৃপক্ষের (এনটিআরসিএ) গত ৬ ফেব্রুয়ারি জারি করা বিশেষ গণবিজ্ঞপ্তিতে ‘তথ্য যোগাযোগ ও প্রযুক্তি (আইসিটি)’ বিষয়ে এমপিওভুক্ত শিক্ষকদের বিভাগীয় প্রার্থী হিসেবে আবেদনের সুযোগ দিতে নির্দেশ দিয়েছেন হাইকোর্ট।
একইসঙ্গে তথ্য যোগাযোগ ও প্রযুক্তি বিষয়ে এমপিওভুক্ত শিক্ষকদের বেসরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের আইসিটি শিক্ষক পদে বিভাগীয় প্রার্থী হিসেবে এনটিআরসিএর (পরবর্তীতে আইসিটি বিষয়ে শিক্ষক নিয়োগে) সব বিজ্ঞপ্তিতে আবেদনের সুযোগ দিতে বিবাদীদের নিষ্ক্রিয়তা এবং ব্যর্থতা কেন বেআইনি ঘোষণা করা হবে না, তা জানতে চেয়ে রুল জারি করেছেন আদালত।
আগামী চার সপ্তাহের মধ্যে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক বিভাগের সচিব ও এনটিআরসির চেয়ারম্যানসহ সংশ্লিষ্ট চার জনকে এই রুলের জবাব দিতে বলা হয়েছে।
রোববার (২০ ফেব্রয়ারি) এমপিওভুক্ত ১০১ জন আইসিটি শিক্ষকের করা আবেদনের প্রাথমিক শুনানি নিয়ে বিচারপতি মামনুন রহমান ও বিচারপতি খোন্দকার দিলীরুজ্জামানের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ এ আদেশ দেন।
আদালতে রিটকারীদের পক্ষে শুনানি করেন আইনজীবী মোহাম্মদ ছিদ্দিক উল্লাহ মিয়া। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল বিপুল বাগমার।
আদেশের বিষয়টি সারাবাংলাকে নিশ্চিত করেছেন আইনজীবী মোহাম্মদ ছিদ্দিক উল্লাহ মিয়া। তিনি বলেন, ‘বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের (স্কুল ও কলেজ) জনবলকাঠামো ও এমপিও নীতিমালা-২০২১ এর ১১.২০ অনুসারে নিবন্ধনধারী শিক্ষক-কর্মচারী সমপদ/সমস্কেলে প্রতিষ্ঠান পরিবর্তনের ক্ষেত্রে এ নীতিমালার পরিশিষ্ট ‘ঘ’ তে বর্ণিত শিক্ষাগত যোগ্যতা (শ্রেণি/বিভাগ) প্রযোজ্য হবে না; সেক্ষেত্রে তাদের প্রথম নিয়োগকালীন শিক্ষাগত যোগ্যতা প্রযোজ্য হবে। তবে এ নীতিমালা জারির তারিখ থেকে নতুনভাবে উচ্চতর পদে নিয়োগের ক্ষেত্রে পরিশিষ্ঠ ‘ঘ’ তে বর্ণিত ন্যূনতম শিক্ষাগত যোগ্যতা ও অভিজ্ঞতা থাকতে হবে। এনটিআরসিএ তৃতীয় গণবিজ্ঞপ্তির ধারাবাহিকতায় গত ৬ ফেব্রুয়ারি বেসরকারি স্কুল-কলেজ, মাদ্রাসা ও কারিগরি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে, বিশেষ গণবিজ্ঞপ্তি-২০২২ প্রকাশ করে।’
এনটিআরসিএর ওই গণবিজ্ঞপ্তিতে স্কুল, কলেজ, মাদরাসা, কারিগরি ও ব্যবসায় ব্যবস্থাপনা বিভাগে এমপিও এবং নন-এমপিও শিক্ষক পদের বিপরীতে ১৫ হাজার ১৬৩টি ফাঁকা পদের তালিকা প্রকাশ করা হয়েছে। এর মধ্যে এমপিওভুক্ত ১২ হাজার ৮০৭টি এবং নন-এমপিওভুক্ত ২ হাজার ৩৫৬টি পদের জন্যে অনলাইন আবেদন গ্রহণের কথা বলা হয়েছে। কিন্তু ওই বিজ্ঞপ্তিতে তথ্য যোগাযোগ ও প্রযুক্তি বিষয়ে এমপিওভুক্ত শিক্ষকদের জন্য আবেদনের কোন সুযোগ রাখা হয়নি।
আইনজীবী মোহাম্মদ ছিদ্দিক উল্লাহ মিয়া আরও বলেন, ‘২০১৫ সালের ১৪ জুন বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের জনবলকাঠামো ও এমপিও নীতিমালা-২০১০ সংশোধন করা হয় এবং আগের স্বীকৃত সহকারী শিক্ষকের (কম্পিউটার) শিক্ষাগত যোগ্যতা স্নাতক ডিগ্রি/সমমান এবং সরকার অনুমোদিত প্রতিষ্ঠান হতে কম্পিউটার বিষয়ে ন্যূনতম ছয় (৬) মাসের প্রশিক্ষণের বিষয়টি সংশোধন করে বাংলাদেশ কারিগরি শিক্ষা বোর্ড হতে তিন (৩) বছর মেয়াদী ডিপ্লোমা ইন কম্পিউটার সায়েন্স ডিগ্রি করা হয়। কিন্তু ইতোমধ্যে আবেদনকারীরা আগের নীতিমালা অনুসারে তথ্য যোগাযোগ ও প্রযুক্তি/কম্পিউটার বিষয়ে এনটিআরসি কর্তৃক নিবন্ধন গ্রহণ করলেও তাদের বিশেষ বিজ্ঞপ্তি তথা শিক্ষক নিয়োগ প্রক্রিয়ায় অংশ গ্রহণের সুযোগ দেওয়া হয়নি। তাই আইসিটি বিষয়ের ১০১ জন শিক্ষক সংক্ষুদ্ধ হয়ে হাইকোর্টে রিট দায়ের করেন।’
ওই রিটের প্রাথমিক শুনানি নিয়ে আইসিটি বিষয়ে এমপিওভুক্ত শিক্ষকদের বিভাগীয় প্রার্থী হিসেবে বিশেষ গণবিজ্ঞপ্তিতে আবেদনের সুযোগ দিতে নির্দেশ দিয়েছেন হাইকোর্ট। একইসঙ্গে এ বিষয়ে রুল জারি করেছেন আদালত। আগামী চার সপ্তাহের মধ্যে সংশ্লিষ্টদের রুলের জবাব দিতে বলা হয়েছে।
সারাবাংলা/কেআইএফ/পিটিএম