কলেজ ছাত্রকে হত্যার ঘটনায় নারীসহ গ্রেফতার ৩
২০ ফেব্রুয়ারি ২০২২ ২১:৪৯
নরসিংদী: অপহরণের পর কলেজ ছাত্র মিঠু হোসেনকে হত্যার ঘটনায় তিন জনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। রোববার (২০ ফেব্রুয়ারি) বিকালে নরসিংদীর পুলিশ সুপার কাজী আশরাফুল আজিম সাংবাদিক সম্মেলনে এই তথ্য জানান।
গ্রেফতারকৃতরা হলো- গাজীপুরের শ্রীপুর উপজেলার মিঠালু গ্রামের পিয়ার উদ্দিনের মেয়ে শাহনাজ আক্তার পপি (২৮), তার স্বামী আবদুল বাতেন (৩৫) এবং একই এলাকার তাপন খান (৩২)। শনিবার সকালে গাজীপুর ও শ্রীপুরের বিভিন্ন এলাকায় অভিযান চালিয়ে তাদের গ্রেফতার করে পুলিশ।
এর আগে, গত বৃহস্পতিবার নরসিংদীর মনোহরদীর একটি বাড়ির খড়ের গাদার নিচ থেকে মিঠু হোসেনের মৃতদেহ উদ্ধার হয়। তিনি সিরাজগঞ্জ সদর উপজেলার রায়পুর এলাকার মৃত মোসলেম উদ্দিনের ছেলে। সিরাজগঞ্জের একটি ইসলামিয়া ডিগ্রি কলেজের প্রথম বর্ষের ছাত্র ছিলেন।
পুলিশ জানায়, গ্রেফতার শাহনাজ আক্তার পপির ফেসবুককেন্দ্রীক একটি প্রতারক চক্র রয়েছে। দলনেতা পপি নিজের ছদ্মনাম ব্যবহার করে নিজের প্রকৃত পরিচয় গোপন করে বিভিন্ন সুন্দরী মেয়েদের ছবি দিয়ে একাধিক ফেসবুক আইডি পরিচালনা করে। বিভিন্ন উঠতি বয়সী তরুণদের টার্গেট করে তাদের সঙ্গে প্রথমে বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক ও পরবর্তীতে প্রেমের ফাঁদে ফেলে একটি নির্দিষ্ট স্থানে দেখা করতে প্রলুব্ধ করে। দেখা করতে এলে তার সহযোগী হানিফসহ ৩/৪ জনের প্রতারক চক্রটি তাকে আটকে রেখে মারধর করে মুক্তিপণ দাবি করে।
পুলিশ সুপার কাজী আশরাফুল আজিম বলেন, এমনি ভাবে কলেজ ছাত্র মিঠুর সঙ্গে ফেসবুকে বন্ধুত্ব করে প্রেমের ফাঁদে ফেলে গত বুধবার মনোহরদীতে দেখা করার জন্য ডেকে আনে প্রতারক শাহনাজ আক্তার পপি। পপি পূর্ব পরিকল্পিতভাবে মিঠুকে তার সহযোগীদের নিকট তুলে দেয়। তাঁরা পাশ্ববর্তী শিবপুর উপজেলার আশুটিয়া পূর্বপাড়া এলাকায় আটকে রেখে মারধর করে মিঠুর অভিভাবকদের কাছে মুক্তিপণ দাবি করে।
মুক্তিপণের টাকা দিতে ব্যর্থ হলে মিঠু হোসেনকে হত্যা করে তার লাশ গুম করার উদ্দেশ্যে মনোহরদীর একদুয়ারিয়া ইউনিয়নের হুগলিপাড়া গ্রামের এক ব্যক্তির খড়ের গাদার নিচে ফেলে রাখে।
এই ঘটনায় নিহতের বড় বোন মিনু আক্তার বাদি হয়ে অজ্ঞাত আসামিদের বিরুদ্ধে মনোহরদী থানায় হত্যা মামলা দায়ের করেছে। আটক ৩ আসামিকে সেই মামলায় গ্রেফতার দেখিয়ে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য রিমান্ডের আবেদন জানানো হবে।
পুলিশ জানায়, মুক্তিপণের জন্য পাশবিক নির্যাতন করা হয় কলেজ ছাত্র মিঠুকে। তার পিঠে, গলায় ও চোখের নিচে আঘাতের চিহ্ন রয়েছে।
সারাবাংলা/এমও