Friday 06 September 2024
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

ঢাকার ৪ নদী রক্ষায় ৮৪৮ কোটি টাকার প্রকল্প 


১৩ এপ্রিল ২০১৮ ০৯:১০

।। জোসনা জামান, স্টাফ করেসপন্ডেন্ট।।

ঢাকা: রাজধানীর প্রাণভোমরা বুড়িগঙ্গা, তুরাগ, শীতলক্ষ্যা ও বালু নদীর তীর রক্ষা, ওয়ার্কওয়ে ও জেটি নির্মাণসহ বিভিন্ন উন্নয়ন কাজে বিশেষ উদ্যোগ নিচ্ছেন সরকার।

এর ফলে একদিকে অবৈধ দখল রোধ হবে অন্যদিকে নদী তীরের সৈন্দর্য বাড়ার সাথে সাথে পরিবেশগত উন্নতি নিশ্চিত হবে বলে আশা করছেন সংশ্লিষ্টরা।

এসব কাজের জন্য ৮৪৮ কোটি ৫৫ লাখ টাকা ব্যয়ে একটি প্রকল্প প্রস্তাব করা হয়েছে পরিকল্পনা কমিশনে।

এ ব্যাপারে কমিশন সূত্র জানিয়েছেন, ‘ইতোমধ্যেই প্রক্রিয়াকরণ শেষে জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটির (একনেক) বৈঠকে উপস্থাপনের প্রস্তুতিও চূড়ান্ত করা হয়েছে। অনুমোদন পেলে আগামী জুলাই মাস থেকে শুরু হয়ে ২০২২ সালের জুনের মধ্যে প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করবে বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌপরিবহন কর্তৃপক্ষ (বিআইডব্লিউটিএ)।’

এ বিষয়ে প্রকল্পটি প্রক্রিয়াকরণের দায়িত্বপ্রাপ্ত পরিকল্পনা কমিশনের ভৌত অবকাঠামো বিভাগের সদস্য জুয়েনা আজিজ সারাবাংলাকে বলেন, ‘প্রকল্পটি বাস্তবায়িত হলে রাজধানী ঢাকাকে বেষ্টিত করে রাখা চারটি নদীর তীরভূমির অবৈধ দখলরোধ, পরিবেশ উন্নয়ন সাধন, সৌন্দর্য বর্ধন ও জনসাধারণের চলাচলের সুযোগ সৃষ্টি হবে। এসব বিবেচনায় প্রকল্পটি অনুমোদনের সুপারিশ করা হয়েছে।’

নৌপরিবহন মন্ত্রণালয় সূত্র জানায়, ‘রাজধানী ঢাকা বুড়িগঙ্গা, তুরাগ, বালু এবং শীতলক্ষ্যা নদী দ্বারা বেষ্টিত। অভ্যন্তরীণ নৌপথে যাত্রী ও পণ্য পরিবহণের জন্য এই নদীগুলোর তীরে ঢাকা, নারায়নগঞ্জ ও টঙ্গীতে ৩টি অভ্যন্তরীণ নদীবন্দর রয়েছে। কিন্তু এসব নদীর তীরভূমির বিভিন্ন জায়গা অবৈধ দখলদারদের কবলে। অধিকাংশ ক্ষেত্রে তারা ব্যবসা পরিচালনার জন্য আরসিসি কাঠামো তৈরি করেছে। ফলে নদীগুলোর প্রশস্ততা এবং নৌ চলাচলের জন্য প্রয়োজনীয় গভীরতা কমে যাচ্ছে।

যাত্রী ও পণ্য পরিবহনের মাপকাঠিতে ঢাকা নদীবন্দর, যা বুড়িগঙ্গা নদীর তীরে ঘেঁষে অবস্থিত, বাংলাদেশের সবচেয়ে বড় নদীবন্দর। বন্দরটির আওতায় বুড়িগঙ্গা ও তুরাগ নদের প্রায় ৪২ কিলোমিটার তীরভূমি রয়েছে। নারায়নগঞ্জ নদীবন্দর শীতলক্ষ্যার তীরে অবস্থিত যা প্রাচ্যের ড্যান্ডি হিসাবে খ্যাত। বড় নদীবন্দরগুলোর মধ্যে অন্যতম এই নদীবন্দরটির পোর্ট লিমিট ২৭ কিলোমিটার। অন্যটি টঙ্গী অভ্যন্তরীণ নৌবন্দর যা তুরাগ নদের তীরে অবস্থিত এবং এটি একটি গুরুত্বপূর্ণ শিল্প ও ব্যবসা কেন্দ্রকে সেবা দিয়ে যাচ্ছে। এই বন্দরের পোর্ট লিমিট প্রায় ৩৮ কিলোমিটার যা টঙ্গী ও ডেমরার মাঝে অবস্থিত তুরাগ ও বালু নদীর তীরভূমির অন্তর্ভুক্ত।

অনুমোদিত ও অপরিকল্পিত স্থাপনা নির্মাণ পানির স্বাভাবিক প্রবাহে বিঘ্ন সৃষ্টি করে থাকে। প্রশাসনিকভাবে তীরভূমির সংরক্ষণ এবং নদী ও নৌপথ রক্ষণাবেক্ষণের দায়িত্ব বিআইডব্লিউটিএ পালন করে। এ জন্য বিআইডব্লিউটিএ বিভিন্ন সময় নদীর তীরভূমির অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ কার্যক্রমের উদ্যোগ নেয়। এ পর্যন্ত বিপুল সংখ্যক অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ করা হয়েছে এবং এখনও বিআইডব্লিউটিএ নিয়মিতভাবে এ কার্যক্রম অব্যাহত রয়েছে। বিআইডব্লিউটিএ বুড়িগঙ্গা, তুরাগ, শীতলক্ষ্যা ও বালু নদীর তীরভূমিতে বিদ্যমান অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ করা হলেও উচ্ছেদকৃত তীরভূমি পরবর্তীতে দখলদারদের হাত থেকে সংরক্ষণ করা কষ্টকর হয়।

ঢাকা মহনগরীর চারদিকে নদী তীরবর্তী স্থানগুলো ওয়াকওয়ে (হাঁটার রাস্তা) নির্মাণের প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিতে ২০১৪ সালের ১০ অক্টোবর প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় থেকে একটি গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত দেওয়া হয়েছে। পরবর্তীতে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের মূখ্যসচিবের সভাপতিত্বে ২০১৫ সালের ৯ এপ্রিল একটি সভা অনুষ্ঠিত হয়। সভার অন্যতম সিদ্ধান্ত হলো ঢাকার চারপাশের নদীগুলোর দুপাশ অবৈধ দখলমুক্ত রাখার জন্য তীরভূমিতে ওয়াকওয়ে নির্মাণ কাজ চলমান রাখতে হবে। ওয়াকওয়ে নির্মাণের পাশাপাশি তীরবর্তী জায়গায় জনণের জন্য বসার বেঞ্চ, ইকো পার্ক, বৃক্ষরোপন ইত্যাদি কাজ হাতে নেওয়া যেতে পারে।

এ জন্য ঢাকা শহরের চারদিকে বৃত্তাকার নৌ-পথের মোট ১২০ কিলোমিটার তীরভূমির মধ্যে প্রথম পর্যায়ে ২০ কিলোমিটার ওয়াকওয়ে নির্মাণ করা হয়েছে। দ্বিতীয় পর্যায়ে ৫২ কিলোমিটার অংশ অন্তর্ভক্ত করে নৌপরিবহন মন্ত্রণালয় এই প্রকল্পটি প্রস্তাব করেছে। পরবর্তীতে পর্যায়ক্রমে অন্যান্য অংশে ওয়াকওয়ে নির্মাণ করা হবে। ৮৫০ কোটি টাকা প্রাক্কলিত ব্যয়ে ২০১৭ সালের জুলাই হতে ২০২১ সালের জুনে প্রকল্পটি প্রস্তাব করা হলে ২০১৭ সালের ৬ আগস্ট প্রস্তাবটির প্রকল্প মূল্যায়ন কমিটির (পিইসি) সভা অনুষ্ঠিত হয়। সভার সিদ্ধান্ত অনুযায়ী ৮৪৮ কোটি ৫৫ লাখ টাকা ব্যয় ধরে প্রকল্পটি প্রকল্পটির প্রক্রিয়াকরণ সমাপ্ত করে।

সারাবাংলা/জেজে/এমআই


বিজ্ঞাপন
সর্বশেষ

৯০০তম গোলে ইতিহাস গড়লেন রোনালদো
৬ সেপ্টেম্বর ২০২৪ ০৯:০৪

সম্পর্কিত খবর