“‘তাগুত’দের বইমেলায় হামলা করতে গিয়েছিলেন আনসার আল ইসলামের রুমেল”
২৩ ফেব্রুয়ারি ২০২২ ১৩:১১
চট্টগ্রাম ব্যুরো: চট্টগ্রামে একুশের বইমেলা থেকে আটক তরুণ নিষিদ্ধ ঘোষিত উগ্রপন্থি সংগঠন আনসার আল ইসলামের সদস্য বলে জানিয়েছে কাউন্টার টেরোরিজম ইউনিট। নগর পুলিশের এই সংস্থার কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, ‘তাগুত’ আয়োজিত একুশের বইমেলায় হামলা করার জন্য এই তরুণ সেখানে গিয়েছিলেন।
দুই দিন আগে সোমবার (২১ ফেব্রুয়ারি) দুপুরে নগরীর এম এ আজিজ স্টেডিয়াম সংলগ্ন জিমনেশিয়াম প্রাঙ্গণে সিটি করপোরেশন আয়োজিত বইমেলা থেকে তাকে আটক করে কাউন্টার টেরোরিজম ইউনিট। মঙ্গলবার (২২ ফেব্রুয়ারি) রাতে সংস্থার একজন উপপরিদর্শক (এসআই) বাদী হয়ে নগরীর কোতোয়ালি থানায় তার বিরুদ্ধে সন্ত্রাস বিরোধী আইনে মামলা দায়ের করেন।
গ্রেফতার মো. রুমেল (২০) নরসিংদী জেলার বেলাবো উপজেলার ইব্রাহিমপুর গ্রামের কুদ্দুস মিয়ার ছেলে। বর্তমানে রুমেল চট্টগ্রাম নগরীর চান্দগাঁও থানার বড়বাড়ি এলাকায় থাকতেন।
নগর পুলিশের কাউন্টার টেরোরিজম ইউনিটের অতিরিক্ত উপকমিশনার আহমেদ পেয়ার সারাবাংলাকে বলেন, ‘আটকের পর যুবক রুমেলের পরিচয় আমরা নিশ্চিত হয়েছি। সে নিষিদ্ধ ঘোষিত জঙ্গি সংগঠন আনসার আল ইসলামের একজন সক্রিয় সদস্য। তার বিরুদ্ধে কোতোয়ালি থানায় সন্ত্রাসবিরোধী আইনে মামলা দায়ের করা হয়েছে।’
সংশ্লিষ্টরা জানিয়েছেন, বইমেলা প্রাঙ্গণের কাছে চট্টগ্রাম জেলা ক্রীড়া সংস্থার মসজিদের সামনে কয়েকজন জঙ্গি নাশকতামূলক কর্মকাণ্ডের জন্য অপেক্ষা করছে খবর পেয়ে কাউন্টার টেরোরিজম ইউনিটের সদস্যরা অভিযান চালান। এসময় রুমেল পালানোর চেষ্টা করলে ধাওয়া করে তাকে আটক করা হয়। দৌড়ানোর সময় পড়ে গিয়ে রুমেল সামান্য আহত হন। এছাড়া আটকের সময় ধস্তাধস্তিতে কাউন্টার টেরোরিজম ইউনিটের সদস্য নায়েক মাইকেল বড়ুয়াও আহত হয়েছেন। গ্রেফতার রুমেলের কাছ থেকে বেশকিছু উগ্র ও জিহাদী বক্তব্যসম্বলিত প্রচারপত্র, ব্যানার জব্দ করা হয়েছে।
মামলার এজাহারে বলা হয়েছে, গ্রেফতারের পর প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে রুমেল জানিয়েছেন— একুশে ফেব্রুয়ারি পালন খাম্বা ও পিলার পূজা করার সমতুল্য। একুশে ফেব্রুয়ারি উপলক্ষে যারা বইমেলার আয়োজন করেছে তারা ‘তাগুত’ অর্থাৎ সীমা লঙ্ঘনকারী। তাগুতদের আয়োজিত বইমেলায় হামলার উদ্দেশেই তিনি এসেছিলেন। তার সঙ্গে আরও কয়েকজন সহযোগীর এই হামলায় যোগ দেওয়ার কথা ছিল।
প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে রুমেল আরও জানিয়েছেন— তাদের আরও লক্ষ্য আনসার আল ইসলামের মাধ্যমে প্রতিষ্ঠিত ও গণতান্ত্রিক সরকারকে উৎখাত করে শহিয়াহ ও খিলাফতভিত্তিক শাসনব্যবস্থা কায়েম করা। অপ্রচলিত মোবাইল অ্যাপ ব্যবহার করে তারা নিজেদের মধ্যে সংগঠনের সব তথ্য আদান-প্রদান করেন।
সন্ত্রাসবিরোধী আইনের ৮, ৯ (৩), ১১ ও ১৩ ধারায় রুমেলের বিরুদ্ধে মামলাটি দায়ের করা হয়েছে।
এদিকে, একইদিন বইমেলা থেকে আরও এক মাদরাসা ছাত্রকে কোতোয়ালি থানা পুলিশ গ্রেফতার করেছিল। পরে তাকে নগর গোয়েন্দা পুলিশের কাছে হস্তান্তর করা হয়। তবে জিজ্ঞাসাবাদে তার কাছ থেকে উগ্রপন্থি কর্মকাণ্ড নিয়ে কোনো তথ্যপ্রমাণ না পাওয়ায় ছেড়ে দেওয়া হয়েছে বলে জানিয়েছেন কোতোয়ালি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ নেজাম উদ্দীন।
সারাবাংলা/আরডি/টিআর