Thursday 05 September 2024
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

‘বামপন্থী শক্তির উত্থান ছাড়া বর্তমান চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা অসম্ভব’

স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট
২৫ ফেব্রুয়ারি ২০২২ ১১:২১

দেশের বর্তমান পরিস্থিতির চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় দ্বিদলীয় ধারার বাইরে দেশের সব কমিউনিস্ট, বামপন্থী প্রগতিশীল, প্রকৃত গণতান্ত্রিক রাজনৈতিক দল ও শক্তিকে পরিবর্তনের জন্য বৃহত্তর ঐক্য গড়ার আহ্বান জানিয়েছেন বাংলাদেশ কমিউনিস্ট পার্টি সভাপতি মুজাহিদুল ইসলাম সেলিম। জনগণের শক্তির বিজয় অনিবার্য মন্তব্য করে তিনি বলেন, বামপন্থী শক্তির উত্থান ছাড়া বর্তমান সময়ের চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা সম্ভব নয়।

শুক্রবার (২৫ ফেব্রুয়ারি) ঢাকা মহানগর নাট্যমঞ্চে বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টির দ্বাদশ কাউন্সিলের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে লিখিত ভাষণে মুজাহিদুল ইসলাম সেলিম এই আহ্বান জানান।

মুজাহিদুল ইসলাম সেলিম বলেন, দেশকে সমাজতন্ত্র-গণতন্ত্র-ধর্মনিরপেক্ষতার স্বাধীন জাতীয় বিকাশের ধারায় পরিচালিত করে ৯৯ শতাংশ মানুষের ঘরে ঘরে সুখ শান্তি নিরাপত্তা ও অধিকার মর্যাদা প্রতিষ্ঠা করতে হবে। মুক্তিযুদ্ধের বাংলাদেশকে বাঁচাতে হবে এটাই পরিস্থিতির চ্যালেঞ্জিং কর্তব্য। এই চ্যালেঞ্জ গ্রহণ করে সফলতা ছিনিয়ে আনতে হবে।

তিনি বলেন, দেশের মানুষ বুর্জোয়া রাজনীতির প্রতারণা ও দুঃশাসনে অতিষ্ঠ। তারা যাতাকল থেকে মুক্ত হতে চাই। এই অসহনীয় পরিস্থিতির অবসান ঘটাতে হবে। মুক্তিযুদ্ধের অসমাপ্ত কাজকে সমাপ্ত করতে হবে।

মুজাহিদুল ইসলাম সেলিম বলেন, ক্ষমতাসীনরা আরও সমর্থন হারিয়েছে। অথচ গোষ্ঠীগত লুটপাটের স্বার্থে এবং কৃত অপরাধের বিচার থেকে রেহাই পেতে তারা জবরদস্তিমূলকভাবে ক্ষমতা দখল করে রেখেছে। জনসমর্থনের বদলে, এমনকি দলীয় রাজনৈতিক শক্তির ওপর নির্ভর করার বদলে প্রধানত আমলাতন্ত্রসহ রাষ্ট্রযন্ত্রকে অবলম্বন করে তারা ক্ষমতা কুক্ষিগত করে রাখার একটি প্রতিষ্ঠানিক ব্যবস্থা আজ স্থাপন করেছে।

তিনি বলেন, ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনসহ নানা কালাকানুন জারি করে মানুষের কণ্ঠ স্তব্ধ করে রাখা হয়েছে। গুম খুন জেল-জুলুমের সন্ত্রাসের শাসন কায়েম করা হয়েছে। দেশে এখন ভয়ানক রাজত্ব চলছে। সামরিক কর্তৃত্বকে রক্ত দিয়ে প্রতিহত করে আমরা গণতন্ত্র পুনরুদ্ধার করেছিলাম। গণতন্ত্রকে আজ হরণ করা হয়েছে। জনগণের ভোটাধিকার কেড়ে নিয়ে নির্বাচনী প্রহসনে পরিণত করা হয়েছে।

সেলিম বলেন, জনগণের সামনে এখন চারটি প্রধান বিপদ। সাম্প্রদায়িকতা, সাম্রাজ্যবাদ, লোকতন্ত্র ও গণতন্ত্রহীনতা। বিচ্ছিন্নভাবে এই চার শত্রুকে মোকাবিলা করা সম্ভব নয়। বর্তমান আওয়ামী দুঃশাসনের অবসান ঘটাতে হবে। লুটপাটতন্ত্র গণতন্ত্রহীনতা সাম্প্রদায়িকতা সাম্রাজ্যবাদী আধিপত্য ব্যবস্থা বদলাতে হবে। দুই বড় দলকে কেন্দ্র করে গড়ে ওঠা দ্বিদলীয় কাঠামোর বাইরে বিকল্প বাম গণতান্ত্রিক শক্তির উত্থান ঘটাতে হবে।

তিনি বলেন, মার্কিন সাম্রাজ্যবাদ বেশ কিছুদিন ধরেই এশীয়-প্রশান্ত মহাসাগরীয় এলাকাকে তার তৎপরতার প্রধান ক্ষেত্র বানিয়েছে। সাম্রাজ্যবাদী শক্তিগুলো উপমহাদেশে তাদের নিয়ন্ত্রণ আরও নিরঙ্কুশ করতে চায়। বাংলাদেশ ও বঙ্গোপসাগর তাই তাদের কাছে গুরুত্বপূর্ণ টার্গেট অঞ্চল হয়ে উঠেছে।

কমিউনিস্ট পার্টির সভাপতি বলেন, এক শতাংশ লুটেরা শ্রেণি আজ নিয়ন্ত্রণ করছে দেশের অর্থনীতি ও রাজনীতি। বাজার অর্থনীতি জন্ম দিয়েছে বাজার রাজনীতি। চলছে বাণিজ্যিকীকরণ বনায়ন প্রদর্শন ভোগবাদ। একইসঙ্গে চলছে হালুয়া-রটির রাজনীতির দাপট। হিসাবের ফলশ্রুতিতে নীতি-আদর্শ সামাজিক মূল্যবোধের বিপজ্জনক অধোগতি ঘটে চলেছে। হত্যা খুন ধর্ষণ সহ বিভিন্ন অপরাধ বেড়ে চলেছে।

তিনি বলেন, সরকার ভারতের স্বার্থের কাছে জাতীয় স্বার্থকে জলাঞ্জলি দিচ্ছে। এমনকি দুই দেশের রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠান রামপাল বিদ্যুৎ প্রকল্প স্থাপনের যে প্রচেষ্টা অব্যাহত আছে তাতে সুন্দরবন ধ্বংস হয়ে যাচ্ছে। এর বিরুদ্ধে প্রতিরোধ গড়ে তুলতে হবে।

সারাবাংলা/এএইচএইচ/এএম

কংগ্রেস টপ নিউজ


বিজ্ঞাপন
সর্বশেষ
সম্পর্কিত খবর