Thursday 21 Nov 2024
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

ছুটির দিন ও শিশুপ্রহরে বইমেলায় ভিন্ন আবহ

ঢাবি করেসপন্ডেন্ট
২৫ ফেব্রুয়ারি ২০২২ ২৩:২৫

প্রতিবছরই বইমেলার অত্যন্ত আকর্ষণীয় একটি অংশ হলো ‘শিশুপ্রহর’। বইমেলা চলাকালে শুক্র ও শনিবার তথা ছুটির দুই দিনে এই ‘শিশুপ্রহর’কেই পাখির চোখ করে রাখে শিশুরা। কিন্তু করোনাভাইরাস সংক্রমণ পরিস্থিতির কারণে এবারের বইমেলার প্রথম সাপ্তাহিক ছুটির দুই দিনে ছিল না এই আয়োজন। দ্বিতীয় সপ্তাহে ঢুকে বইমেলায় ফিরে এসেছে সেই ‘শিশুপ্রহর’। আর সেই আয়োজন ঘিরেই বইমেলায় শিশুদের উপস্থিতি দেখা গেছে যেকোনো দিনের চেয়ে অনেক বেশি। শিশুচত্বর ছাড়াও বইমেলার সুপরিসর প্রাঙ্গণ ঘিরে তাদের আনন্দ-উৎসাহে মেতে থাকতে দেখা গেছে।

বিজ্ঞাপন

এদিকে, ছুটির দিন উপলক্ষে বইমেলায় সাধারণ পাঠক-দর্শনার্থী-ক্রেতার পদচারণাও বেড়েছে। তাতে বেড়েছে বই বিক্রির পরিমাণ। বিক্রয়কর্মীরা বলছেন, অন্য যেকোনো ঘরানার বইয়ের চেয়ে উপন্যাসের বিক্রি হচ্ছে বেশি।

শুক্রবার (২৫ ফেব্রুয়ারি) সকাল সাড়ে ১১টার দিকে ‘শিশুপ্রহরে’ শিশুচত্বরে শুরু হয় শিশুতোষ অনুষ্ঠান। সিসিমপুরের জনপ্রিয় সব পাপেট চরিত্রগুলোর উপস্থিতি ছিল এসময়। তারা নাচেগানে মাতিয়ে তোলে শিশুদের। তাদের সঙ্গে গানে গলা মেলায় শিশুরা। নেচে নেড়ে পাপেটদের সঙ্গ দেয় তারা।

শিশুপ্রহরে সিসিমপুরের এই আয়োজন ছিল বিকেলেও। ফলে সকালের মতো বিকেলেও শিশুদের উপস্থিতি ছিল চোখে পড়ার মতো। বিকেল সাড়ে ৫টার দিকে মেলার শিশুচত্বরে গিয়ে দেখা যায়, শিশুমঞ্চে আনন্দে মেতে আছে জনা বিশেক শিশু। মঞ্চে অন্য শিশুদের সঙ্গে আনন্দে মেতে থাকা সামিউলকে ডেকে নামাতে পারছেন না তার মা। এক পর্যায়ে শিশু সামিউল নিচে নেমে এলে মা তাকে বোঝান— সন্ধ্যা হয়ে গেছে, বাসায় ফিরতে হবে। তবে ফিরতেই মন চাইছে না শিশু সামিউলের।

সামিউলের কাছে জানতে চাইলে সে বলে, ‘মা বাসায় নিয়ে যেতে চায়। আমি আরও একটু খেলব!’ সামিউল জানাল, বই কিনেছে চারটি। দু’টি ছড়ার, দু’টি কার্টুনের। সে বলে, ‘মা আমাকে চারটি বই কিনে দিয়েছে। আবার এলে আরও কিনে দেবে বলেছে মা।’

সামিউলের মতো অন্য শিশুদেরও উপস্থিতি ছিল যথেষ্ট। তাতে শিশুতোষ বইয়ের প্রতিটি স্টলেই ছিল উপচে পড়া ভিড়।

এদিকে, বিক্রয়কর্মীদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে— ছুটির দিন ও শিশুপ্রহরকে কেন্দ্র করে শিশুতোষ বইয়ের বিক্রি ভালো ছিল আজ।

নলেজ মিডিয়া পাবলিকেশনের ফিরোজ মিয়া বলেন, শিশুপ্রহরে আজ বেশ ভালো সাড়া পাওয়া যাচ্ছে। শিশুচত্বরে সিসিমপুর আসায় একটু প্রাণচঞ্চল হয়ে উঠেছে বইমেলা। আজ ভালোই শিশুদের বই বিক্রি হয়েছে। শিশুরা ভূতের গল্প, কমিকবুক, ছড়া ও শিশুদের ছোটগল্পের বই বেশি কিনছে বলে জানান তিনি।

বিজ্ঞাপন

এদিকে, ছুটির দিন থাকায় অন্যান্য দিনের তুলনায় মেলায় পাঠক-দর্শনার্থীর সংখ্যা ছিল কয়েকগুণ বেশি। বইমেলা সংলগ্ন টিএসসি থেকে নীলক্ষেত ও শাহবাগগামী সড়কে ছিল তীব্র জনজট।

বইমেলার সোহরাওয়ার্দী উদ্যান অংশ ঘুরে দেখা যায়— অন্যপ্রকাশ, তাম্রলিপি, ঐতিহ্যসহ বড় বড় প্রকাশনীগুলোর প্যাভিলিয়নে তিল ধারণের জায়গা নেই। বিক্রয়কর্মীদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, ছুটির দিনে উপন্যাস বিক্রি হচ্ছে বেশি। এছাড়া থ্রিলার বইয়ের কাটতিও ভালো ছিল এদিন।

অন্যপ্রকাশ প্রকাশনীর প্যাভিলিয়নের সামনে কয়েক স্তরের ভিড়। সেই ভিড় ঠেলে অন্যপ্রকাশের বই কিনতে আসা অধিকাংশই হুমায়ুনপ্রেমী। ভিড়ের মাঝে দাঁড়িয়ে থাকা এক পাঠক সারাবাংলাকে বলেন, হুমায়ুন স্যারের বই এইখানে পাওয়া যায়। আমি তো এসেছিই উনার বই কিনতে। সে যত ভিড় থাকুক, বই কিনে তবেই যাব।

বিক্রয়কর্মীদের কণ্ঠেও শোনা গেছে একই সুর। প্রকাশনা প্রতিষ্ঠানটির এক বিক্রয়কর্মী সারাবাংলাকে বলেন, স্বাভাবিকভাবেই হুমায়ুন স্যারের বই বেশি বিক্রয় হচ্ছে। পাঠকের চাহিদা বরাবরই বেশি।

এদিকে বিভিন্ন প্রকাশনা প্রতিষ্ঠানের স্টলগুলোর বিক্রয়কর্মীরা জানিয়েছেন, অন্যান্য বইয়ের তুলনায় কাটতি বেশি উপন্যাসের। সাদাত হোসাইন থেকে সুনীল-শরৎ— সবার উপন্যাসেই পাঠকের আগ্রহ যেন বেশি।

সময় প্রকাশনের এক বিক্রয়কর্মী সারাবাংলাকে বলেন, উপন্যাসই সবচে বেশি চলছে। অন্যগুলো যে চলছে না, তা নয়। তবে উপন্যাসের বই বিক্রি হচ্ছে বেশি।

সারাবাংলা/আরআইআর/টিআর

বইমেলা বইমেলা ২০২২ শিশু মঞ্চ শিশুচত্বর শিশুপ্রহর

বিজ্ঞাপন

আরো

সম্পর্কিত খবর