‘সিইসি অবশ্যই যোগ্য, বাকিরাও সৎ ও দক্ষ’
২৬ ফেব্রুয়ারি ২০২২ ২০:৩০
ঢাকা: নতুন নির্বাচন কমিশন নিয়ে আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য কাজী জাফরুল্লাহ বলেছেন, সিইসি অবশ্যই যোগ্য ব্যক্তি। বাকিরাও ভালো, সৎ, যোগ্য ও দক্ষ। আমাদের প্রত্যাশা তো তেমন নেই। কারণ নির্বাচন কমিশন গঠন নিয়ে এবার আইন প্রণয়ন করা হয়েছে। সে আইন অনুযায়ী রাষ্ট্রপতি সার্চ কমিটির মাধ্যমে নির্বাচন কমিশন গঠন করেছে।
শনিবার (২৬ ফেব্রুয়ারি) নির্বাচন কমিশন (ইসি) গঠনের জন্য ১০ জনের তালিকা থেকে পাঁচ জনকে নিয়ে ইসি গঠন করেছেন রাষ্ট্রপতি মো. আব্দুল হামিদ। এ কমিশনের প্রধান নির্বাচন কমিশনার হয়েছে অবসরপ্রাপ্ত সিনিয়র সচিব কাজী হাবিবুল আউয়াল। এদিন বিকেলে এ সংক্রান্ত এক প্রজ্ঞাপন জারি করা হয়েছে। পরে নির্বাচন কমিশনকে স্বাগত ও অভিনন্দন জানিয়ে ক্ষমতাসীন দলের নেতারা এমন প্রতিক্রিয়া জানান।
নির্বাচন কমিশনের অন্য সদস্যরা হলেন- অবসরপ্রাপ্ত জেলা ও দায়রা জজ রাশেদা সুলতানা, অবসরপ্রাপ্ত ব্রিগেডিয়ার জেনারেল আহসান হাবিব খান, অবসরপ্রাপ্ত সিনিয়র সচিব মো. আলমগীর এবং অবসরপ্রাপ্ত সিনিয়র সচিব আনিছুর রহমান।
ক্ষমতাসীন দল হিসেবে নতুন নির্বাচন কমিশনের প্রতি আপনাদের প্রত্যাশা কী? এমন প্রশ্নের উত্তরে কাজী জাফরুল্লাহ সারাবাংলাকে বলেন, ‘আমাদের প্রত্যাশা তো আছেই। বিভিন্ন আলোচনায় আমাদের নেত্রী মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা স্পষ্ট ভাষায় বলেছেন, নির্বাচন অবাধ, সুষ্ঠু, নিরপেক্ষ ও গ্রহণযোগ্য হবে- সেটাই আমাদের প্রত্যাশা।’
এ বিষয়ে আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুব-উল-আলম হানিফ সারাবাংলাকে বলেন, ‘আমরা মনে করি যে, নির্বাচন কমিশন গঠন নিয়ে দীর্ঘদিন যে একটা জটিলতা ছিল সেই জটিলতার অবসান হয়েছে। স্বাধীনতার ৫০ বছর পর হলেও নির্বাচন কমিশন গঠন আইন প্রণীত হয়েছে। নির্বাচন কমিশন আইনের মাধ্যমে গঠিত সার্চ কমিটি বিভিন্ন রাজনৈতিক দল ও শ্রেণি-পেশার মানুষের সঙ্গে আলাপ-আলোচনা করে তাদের কাছ থেকে বিভিন্ন নাম সংগ্রহ করে যাচাই-বাছাই করে মহামান্য রাষ্ট্রপতির কাছে ১০ সদস্যের নামের তালিকা পাঠিয়েছে। মহামান্য রাষ্ট্রপতি সেই তালিকা থেকে সবচেয়ে গ্রহণযোগ্য পাঁচ জন ব্যক্তিকে নির্বাচন কমিশন হিসেবে মনোনীত করেছেন।’
তিনি আরও বলেন, ‘আমরা মনে করি যে পাঁচজন নির্বাচন কমিশন হিসেবে মনোনীত হয়েছেন, তারা প্রত্যেকেই তাদের কর্মজীবনে অত্যন্ত দক্ষতা, সততা এবং যোগ্যতার ভিত্তিতে কাজ করে তাদের কর্মক্ষেত্রে চূড়ান্ত পর্যায়ে পৌঁছাতে সক্ষম হয়েছেন। আমাদের প্রত্যাশা তাদের অতীতের যে দক্ষতা, সততা ও যোগ্যতা; সেই ভাবেই নির্বাচন কমিশনের দায়িত্ব পালন করে দেশের মানুষের প্রত্যাশা পূরণ করবেন।’
এই নির্বাচন কমিশনের চ্যালেঞ্জ কী হতে পারে বলে মনে করেন? এ বিষয়ে আওয়ামী লীগের এই নেতা বলেন, ‘নির্বাচন কমিশনের মূল দায়িত্ব হচ্ছে, আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনসহ সকল স্থানীয় নির্বাচন অবাধ-সুষ্ঠু-নিরপেক্ষ করা। আমরা দেখেছি যে, আমাদের নির্বাচন কমিশনকে ইচ্ছাকৃতভাবেই অনেক রাজনৈতিক দল বিতর্কিত করার চেষ্টা করেন। সেই ধরনের সুযোগ যাতে তারা না পায় সেই ব্যাপারে সতর্ক থাকতে হবে। সেইসঙ্গে সকল রাজনৈতিক দলের প্রতি আমাদের অনুরোধ থাকবে, শুধুমাত্র বিতর্কের জন্য বা রাজনৈতিক ফায়দা লোটার জন্য এই কমিশনকে নিয়ে অযৌক্তিক বা অপ্রাসঙ্গিক কথা বলে কমিশনকে বিতর্কিত করার চেষ্টা যেন করা না হয়।’
বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের আরেক যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আ ফ ম বাহাউদ্দীন নাছিম সারাবাংলাকে বলেন, ‘সংবিধান অনুযায়ী মহামান্য রাষ্ট্রপতি প্রধান নির্বাচন কমিশনারসহ যে কমিশনারদের নিয়োগ দিয়েছেন তাদের সকলকে অভিনন্দন এবং স্বাগত জানাই। আমরা মনে করি বাংলাদেশে গণতান্ত্রিক ধারাবাহিকতা এবং গণতন্ত্রকে শক্তিশালী করার জন্য, নির্বাচন পদ্ধতিকে শক্তিশালী করার জন্য সকল রাজনৈতিক দলের এবং সকলের অংশগ্রহণ অপরিহার্য। সেক্ষেত্রে নির্বাচন কমিশন একটা সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠান। এই প্রতিষ্ঠানের প্রতি আমাদের আস্থা ও বিশ্বাস থাকার প্রয়োজন আছে। এই নির্বাচন কমিশন একটি অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচন আয়োজন করে বাংলাদেশের গণতন্ত্রকে শক্তিশালী করবে।’
তিনি আরও বলেন, ‘মহামান্য রাষ্ট্রপতি যাদের নিয়োগ দিয়েছেন তারা অবশ্যই বাংলাদেশের মানুষের আশা-আকাঙ্ক্ষা ও প্রত্যাশা অনুযায়ী অবাধ, সুষ্ঠু, নিরপেক্ষ এবং অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন করার মধ্য দিয়ে বাংলাদেশকে এগিয়ে নিয়ে যাবে। বাংলাদেশের গণতন্ত্রকে শক্তিশালী করবে।’
এর আগে, গত বৃহস্পতিবার (২৪ ফেব্রুয়ারি) সার্চ কমিটির চার সদস্য বঙ্গভবনে গিয়ে ইসি গঠনের জন্য রাষ্ট্রপতির কাছে ১০ জনের নাম জমা দেন। নির্বাচন কমিশন গঠনের জন্য সার্চ কমিটি প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) পদের জন্য দুই জন এবং বাকি চার নির্বাচন কমিশনারের পদের জন্য আট জনের নামের তালিকা চূড়ান্ত করে।
সারাবাংলা/এনআর/পিটিএম
আ ফম বাহাউদ্দিন নাছিম কাজী জাফরউল্লাহ মাহবুব উল আলম হানিফ সিইসি