‘শহিদ মিনার তৈরির জন্য পেয়ারু সরদার চিরস্মরণীয় হয়ে থাকবেন’
২৬ ফেব্রুয়ারি ২০২২ ২৩:৫৪
ঢাকা: প্রথম শহিদ মিনার তৈরি হওয়ার পেছনে ভাষা সৈনিক পেয়ারু সরদারের অবদান চিরস্মরণীয় হয়ে থাকবে বলে মন্তব্য করেছেন সাবেক মন্ত্রী ও আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য মোফাজ্জল হোসেন চৌধুরী মায়া বীর বিক্রম।
শনিবার (২৬ই ফেব্রুয়ারি) জাতীয় প্রেস ক্লাবের আবদুস সালাম মিলনায়তনে ‘প্রথম শহিদ মিনার ও পেয়ারু সরদার শীর্ষক আলোচনা সভা এবং সম্মাননা স্মারক প্রদান অনুষ্ঠানে তিনি এ কথা বলেন।’
ভাষা সৈনিক পেয়ারু সরদার ফাউন্ডেশনের উদ্যোগে আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্য মোফাজ্জল হোসেন চৌধুরী মায়া বলেন, ‘ভাষা সৈনিক পেয়ারু সরদার একজন বীর ছিলেন। যে কাজ অনেকেই করার সাহস পান না, পেয়ারু সরদার সেই কাজটিই করেছিলেন। পাকিস্তান আমলে, মুসলিম লীগের যুগে অত্যাচার-নির্যাতনের সময়ে তিনি সেই কাজটি করেছেন। সেই সময়ে তিনি প্রথম শ্রেণির কন্টাকটার (ঠিকাদার) ছিলেন। তখন তার বয়স ছিল ৫০ বছর। ১৯১১ সালে তার জন্ম এবং ১৯৬১ সালে তিনি মৃত্যুবরণ করেন। সেই সময়ে একদিকে গোলাগুলি, একদিকে রক্তের বন্যা, আরেক দিকে পুলিশ, এ রকম এক মুহূর্তে তিনি শহিদ মিনার তৈরি করার জন্য কাজ করেছিলেন। তিনি প্রথম শহিদ মিনার তৈরি করার জন্য তার গোডাউন থেকে রড, সিমেন্ট বালি, ইট, জোগালিসহ (শ্রমিক) যা যা প্রয়োজন সব কিছু দিয়ে সহায়তা করেছিলেন। সেই সময় এই বীর সৈনিকের সহায়তা না পেলে শহিদ মিনার তৈরি হতো কি না তা নিয়ে আমার মনে সংশয় জাগে। এ জন্য তাকে আমি বীর বলে আখ্যায়িত করব। এই শহিদ মিনার তৈরি হওয়ার পেছনে তার অবদান চিরস্মরণীয় হয়ে থাকবে। আজ তাকে নিয়ে যে উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে আমি তাকে স্বাগত জানাই।’
তিনি বলেন, ‘১৯৫২ সালে ভাষা আন্দোলনে যারা বিরোধিতা করেছিলেন তাদের রক্ত (পূর্বসূরিরা) এখনও বাংলাদেশে রয়ে গেছে। তাদের রক্ত এখনো মুছে যায়নি। তাই আমাদের সবাইকে এ ব্যাপারে সজাগ থাকতে হবে। আজ যারা পিয়ারু সরদারকে নিয়ে সঠিক ইতিহাস তুলে ধরেছেন আমি তাদের প্রতি কৃতজ্ঞতা জানাই।’
আগামী জাতীয় নির্বাচন প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘সংবিধান মোতাবেক ২০২৩ সালের নির্দিষ্ট সময়ে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। একদিন আগেও হবে না, একদিন পরেও হবে না। জননেত্রী শেখ হাসিনা সরকারের অধীনে সুষ্ঠু ও অবাধ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। সেই নির্বাচনে সবাই আসবেন।’
সরকারের বিরোধীদের উদ্দেশে তিনি বলেন, ‘যত ষড়যন্ত্র করেন কোনো কাজ হবে না। সংবিধান মোতাবেক সঠিক সময়েই আগামী জাতীয় নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে।’
অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য দেন আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর আরেক সদস্য সাংসদ মো. কামরুল ইসলাম। সভায় প্রধান আলোচক ছিলেন বাংলা একাডেমির মহাপরিচালক কবি মুহম্মদ নূরুল হুদা এবং বিশেষ আলোচক ছিলেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলা বিভাগের সাবেক অধ্যাপক ও লেখক আবুল কাশেম ফজলুল হক।
ভাষা সৈনিক পেয়ারু সরদার ফাউন্ডেশনের আহ্বায়ক ও ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের ২৭ নম্বর ওয়ার্ড কাউন্সিলর ওমর বিন আজিজ তামিমের সভাপতিত্বে এবং ক্রীড়া ধারাভাষ্যকার আনোয়ার কবিরের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে সম্মানিত অতিথি হিসেবে বক্তব্য দেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বিশেষ সহকারী ও আওয়ামী লীগের দফতর সম্পাদক বিপ্লব বড়ুয়া, জাতীয় প্রেস ক্লাবের সাবেক সভাপতি ও সাংসদ মো. শফিকুর রহমান, ঢাকা মহানগর দক্ষিণ আওয়ামী লীগের সভাপতি আবু আহমেদ মন্নাফী, সাধারণ সম্পাদক মো. হুমায়ুন কবির, আইনজীবী আসমা আক্তার কেকা ও আসাদুজ্জামান আসাদ।
আলোচনা সভা শেষে ভাষা সৈনিক পেয়ারু সরদার ফাউন্ডেশনের পক্ষ থেকে আমন্ত্রিত প্রধান অতিথি, বিশেষ অতিথি ও সম্মানিত অতিথিদের সম্মাননা স্মারক প্রদান করা হয়।
সারাবাংলা/কেআইএফ/পিটিএম