Friday 22 Nov 2024
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

শপথ নিয়ে সিইসি বললেন— সবার দোয়া চাই

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট
২৭ ফেব্রুয়ারি ২০২২ ২০:১৫

ঢাকা: শপথ নেওয়ার পর নবনিযুক্ত প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) অবসরপ্রাপ্ত সিনিয়র সচিব কাজী হাবিবুল আউয়াল সবার সহযোগিতা চেয়েছেন, সবার কাছে দোয়া চেয়েছেন।

তিনি বলেন, আজ আপনাদের কাছে দোয়া চাই। আমাদের ওপর যে দায়িত্ব অর্পিত হয়েছে, সেই দায়িত্ব দক্ষতার সঙ্গে, মহানুভবতার সঙ্গে এবং আমাদের যে শপথ— সেই শপথের প্রতি অনুগত থেকে যেন দায়িত্ব পালন করতে পারি, আপনাদের কাছে এই দোয়া আমরা চাইছি।

বিজ্ঞাপন

রোববার (২৭ ফেব্রুয়ারি) সুপ্রিম কোর্টের জাজেজ লাউঞ্জে সিইসি হিসেবে শপথ নেওয়ার পর সাংবাদিকদের সঙ্গে প্রথম মতবিনিময়ের সময় তিনি এসব কথা বলেন।

আরও পড়ুন- শপথ নিলেন সিইসি ও নতুন ৪ কমিশনার

সিইসি কাজী হাবিবুল আউয়াল বলেন, আমি প্রথমেই যেটি জানাতে চাই— আমরা কিছুক্ষণ আগে শপথ নিয়েছি। এর মাধ্যমে সাংবিধানিকভাবে আমাদের পদে অধিষ্ঠিত হয়েছি। আমার এবং আমাদের চার নির্বাচন কমিশনারের ওপর সাংবিধানিক দায়িত্ব অর্পিত হয়েছে। তারপরও আমরা এখনো কর্মস্থলে গিয়ে দায়িত্ব গ্রহণ করিনি। আমরা সহসাই আমাদের কার্মস্থলে যাব এবং সহকর্মীরা নিজেদের মধ্যে আলাপ আলোচনা করব। আমরা নিজেদের মধ্যে ভাবের আদান-প্রদান করব। সাংবিধানিকভাবে আমাদের ওপর যে দায়িত্ব আর্পিত হয়েছে, সেগুলো জেনে দায়িত্ব পালনে সচেষ্ট থাকব।

নতুন সিইসি আরও বলেন, আমরা আমাদের ওপর অর্পিত দায়িত্ব কীভাবে পালন করব— এ বিষয়ে ঠিক এই মুহূর্তেই কিছু বলতে পারছি না। আমরা আরও পড়ালেখা করে, আরও ঋদ্ধ হয়ে তারপর আপনাদের জানাতে পারব। তবে আমরা আপনাদের কাছে দোয়া চাই। আমাদের যে শপথ, সেই শপথের প্রতি অনুগত থেকে যেন সব দায়িত্ব সঠিকভাবে পালন করতে পারি, এ বিষয়ে আমরা আপনাদের কাছে দোয়া চাই।

বিজ্ঞাপন

সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে সিইসি হাবিবুল আউয়াল বলেন, আপনাদের সামনে আমরা যে নতুন বক্তব্য দেবো, সেগুলো আমরা সমন্বিতভাবে দেবো। আমার যে সহকর্মীরা আছেন, তাদের ঐকমত্যের ভিত্তিতে সিদ্ধান্তগুলো নেব। তখন হয়তো আমরা আরও নির্ভরযোগ্যভাবে আপনাদের সঙ্গে মতবিনিময় করতে পারব।

আরও পড়ুন-

এই মুহূর্তে নির্বাচন কমিশনের সামনে সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ কী— এমন প্রশ্নের জবাবে সিইসি হাবিবুল বলেন, প্রতিটি নির্বাচনই একটি চ্যালেঞ্জ। কিন্তু কোনো চ্যালেঞ্জকে ভয় পেলে হবে না। চ্যালেঞ্জকে মোকাবিলা করতে হবে। আমরা আশা করব— সবার সহায়তা নিয়ে, অংশীজন যারা আছেন, তাদের সবার সহায়তা নিয়ে এগিয়ে যাব।

তিনি আরও বলেন, বাংলাদেশ গণপ্রজাতন্ত্রী ও গণতান্ত্রিক দেশ। কাজেই এখানে নির্বাচন অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ একটি বিষয়। এখন চ্যালেঞ্জটা কী— আমরা দায়িত্ব নেওয়ার পর সেটি বুঝব। আসলে কোনো চ্যালেঞ্জ আছে কি না, থাকলে কীভাবে সেগুলো মোকাবিলা করতে হবে— এসব বিষয়েই আমরা আমাদের দৃষ্টিভঙ্গি গড়ে তুলব। সেই দৃষ্টিভঙ্গি থেকেই আমরা আমাদের কর্মপদ্ধতি গড়ে তুলব, আমাদের কৌশল আমরা নিরূপণ করব।

সাংবাদিকদের আরেক প্রশ্নের জবাবে নবনিযুক্ত সিইসি বলেন, কেবল নির্বাচন কমিশন নির্বাচন করে না। নির্বাচন একটি বিশাল কর্মযজ্ঞ। এর সঙ্গে অনেকেই যুক্ত। সবাই যদি সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে দেয়, তাহলে আমাদের ওপর যে মূল দায়িত্ব সবার সহযোগিতা আদায় করে নেওয়ার, সেটি সহজ হবে। আমরা আশাবাদী, অত্যন্ত আশাবাদী— আমি যে সহকর্মীদের পেয়েছি, তাদের ওপর পূর্ণ আস্থা আছে। আমি আশা করি, আমাদের ওপরও সবার আস্থা আছে। আমরা আমাদের সর্বোচ্চটুকু দিয়ে কাজ করার চেষ্টা করব। বাকিটা আল্লাহপাক জানেন।

সিইসি ও ৪ নির্বাচন কমিশনারকে শপথ পাঠ করান প্রধান বিচারপতি

এসময় নতুন নিয়োগপ্রাপ্ত চার নির্বাচন কমিশনার সিইসির পাশে দাঁড়ানো ছিলেন। এর কিছু আগে, বিকেল সাড়ে ৪টার দিকে সুপ্রিম কোর্টের জাজেস লাউঞ্জে সিইসি ও বাকি চার কমিশনারকে শপথবাক্য পাঠ করান প্রধান বিচারপতি হাসান ফয়েজ সিদ্দিকী।

শপথ অনুষ্ঠান পরিচালনা করেন সুপ্রিম কোর্টের রেজিস্ট্রার জেনারেল মো. আলী আকবর। শপথ অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন আপিল বিভাগের বিচারপতি মো. নূরুজ্জামান, বিচারপতি ওবায়দুল হাসান, বিচারপতি এম. ইনায়েতুর রহিমসহ অন্যান্য বিচারপতিরা।

এর আগে শনিবার (২৬ ফেব্রুয়ারি) বিকেলে সিইসি ও চার কমিশনার নিয়োগের মাধ্যমে নতুন নির্বাচন কমিশন গঠনের প্রজ্ঞাপন জারি হয়। নতুন কমিশনে অবসরপ্রাপ্ত সিনিয়র সচিব কাজী হাবিবুল আউয়ালকে সিইসি করা হয়েছে। নির্বাচন কমিশনার হিসেবে নিয়োগ পাওয়া বাকি চার জন হলেন— অবসরপ্রাপ্ত জেলা ও দায়রা জজ বেগম রাশিদা সুলতানা, অবসরপ্রাপ্ত ব্রিগেডিয়ার জেনারেল আহসান হাবিব খান, অবসরপ্রাপ্ত সিনিয়র সচিব মো. আলমগীর এবং অবসরপ্রাপ্ত সিনিয়র সচিব আনিছুর রহমান।

এর আগে, নির্বাচন কমিশন (ইসি) গঠনের জন্য রাষ্ট্রপতি গত ৫ ফেব্রুয়ারি সার্চ কমিটি গঠন করে দেন। ওই কমিটি নিজেদের মধ্যে সাতটি এবং বিশিষ্ট ব্যক্তিদের সঙ্গে আরও তিনটি বৈঠক করে। রাজনৈতিক দলসহ সামাজিক-সাংস্কৃতিক সংগঠনসহ ব্যক্তি পর্যায় থেকেও সার্চ কমিটি নির্বাচন কমিশন গঠনের জন্য যোগ্য ব্যক্তিদের তালিকা আহ্বান করেন। এ আহ্বানে সার্চ কমিটির কাছে জমা পড়ে ৩২৯ জনের নাম। সেখান থেকেই সার্চ কমিটি ১০ জনের তালিকা চূড়ান্ত করে।

গত ২৪ ফেব্রুয়ারি সার্চ কমিটি রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদের সঙ্গে তার সরকারি বাসভবন বঙ্গভবনে সাক্ষাৎ করে সিইসি পদে দু’জন ও নির্বাচন কমিশনার পদে আট জনসহ মোট ১০ জনের তালিকা হস্তান্তর করে। সেই তালিকা থেকেই সিইসি ও বাকি চার নির্বাচন কমিশনারকে নিয়োগ দিয়েছেন রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ।

সারাবাংলা/কেআইএফ/টিআর

কাজী হাবিবুল আউয়াল নতুন নির্বাচন কমিশন নতুন সিইসি নির্বাচন কমিশন সিইসি কাজী হাবিবুল আউয়াল সিইসির শপথ

বিজ্ঞাপন

আরো

সম্পর্কিত খবর